সংক্ষিপ্ত
এ বার ‘উৎকর্ষ বাংলা’ প্রকল্পের নিয়োগপত্র নিয়েও অভিযোগ ওঠায় নতুন মাত্রা পেয়েছে শাসকদলের বিরুদ্ধে বিতর্ক। ‘প্রশাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছে’ বলে মন্তব্য করলেন রাজ্যের কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন।
‘উৎকর্ষ বাংলা’ প্রকল্পে ভুয়ো নিয়োগপত্র বিলি নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে জলঘোলা চলছিল বহুদিন ধরেই। এবার এই অভিযোগের ক্ষেত্রে ‘প্রশাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছে’ বলে মন্তব্য করলেন রাজ্যের কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। সোমবার অবনীন্দ্র সভাঘরে রাজ্য সরকারের একটি কর্মসূচিতে যোগ দিতে এসে ভুয়ো নিয়োগপত্রের ব্যাপারে নিজের অভিমতের দিকে কার্যত নিরুত্তর থেকে সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানালেন, ‘‘এর বাইরে আমার আর কিছু বলার নেই।’’
পশ্চিমবঙ্গ সরকার স্কুলছুট ছাত্র ছাত্রীদের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দেওয়ার লক্ষ্যে চালু করেছিল 'উৎকর্ষ বাংলা' প্রকল্প। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হল, স্কুলছুট ছাত্র ছাত্রীদের ৪০০ থেকে ১২০০ ঘণ্টা বিনামূল্যে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া। হাতে কলমে কাজ শিখে চাকরির সুযোগ পাওয়ার আশ্বাসও দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাজ্য সরকারের কর্মসূচিতে কারিগরি শিক্ষায় কৃতী ছাত্রছাত্রীদের হাতে বেসরকারি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়। সেই কর্মসূচি শেষ হয়ে গেলে ইন্দ্রনীল সেন বেরিয়ে যাওয়ার পরে ‘ভুয়ো নিয়োগপত্র’ বিলি করার অভিযোগ ওঠে। সেই অভিযোগ ঘিরে রাজ্য সরকারের পদক্ষেপ সম্পর্কে তাঁর অভিমত জানতে চাওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘‘এখানে এ কথা আলোচনা করব না। প্রশাসনের তরফে যা পদক্ষেপ করার কথা, তা করা হচ্ছে। এর বাইরে আমার কিছু বলার নেই।’’ যাঁদের তরফে ভুয়ো নিয়োগপত্র পাওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে, রাজ্য সরকার তাঁদের এবং সংশ্লিষ্ট ‘নিয়োগকারী সংস্থার’ সঙ্গে যোগাযোগ করবে কি না, সেই প্রশ্নেরও সরাসরি জবাব দেননি ইন্দ্রনীল। তিনি বলেন, ‘‘আমি এখানে অন্য অনুষ্ঠানে এসেছি।’’
বহু চাকরিপ্রার্থী অভিযোগ করেছেন যে, তাঁরা অনেকেই দেখেছেন যে, সেগুলি আসলে নিয়োগপত্র নয়, তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া পত্রগুলি আসলে প্রশিক্ষণ নেওয়ার ‘অফার লেটার’। কেবল তাইই নয়, সংশ্লিষ্ট বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে কয়েক জন প্রার্থী এও দেখেছেন যে, সংস্থাগুলিও ভুয়ো। সূত্র মারফৎ জানা গেছে, এই বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই তৎপরতা শুরু হয়েছে নবান্নের তরফে।
শিক্ষা দফতরের নিয়োগ-দুর্নীতি নিয়ে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তৎপরতার জেরে ইতিমধ্যেই তুমুল ডামাডোল সৃষ্টি হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। সেটির পর এ বার ‘উৎকর্ষ বাংলা’ প্রকল্পের নিয়োগপত্র নিয়েও অভিযোগ ওঠায় নতুন মাত্রা পেয়েছে শাসকদলের বিরুদ্ধে বিতর্ক। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম বদলেরও প্রশ্ন তুলেছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সম্প্রতি শাসককে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর স্কিল ডেভেলপমেন্ট কর্মসূচিকে ‘উৎকর্ষ বাংলা’ বলে চালালে সেটারও টাকা বন্ধ করে দেওয়ার সুপারিশ কেন্দ্রের কাছে করব।’’
আরও পড়ুন-
মহালয়াতেই নবমী নিশি! ‘মা’ নয়, কুমারী দুর্গা সখী সহযোগে বছরে মাত্র একদিন আসেন বার্নপুরের ধেনুয়া গ্রামে
স্বনামধন্যদের সাথে থাকুক অখ্যাত শিল্পীরাও, সমাজচেতনা জাগিয়ে ইয়ং বয়েজ ক্লাবের দুর্গাপুজোয় 'ময়ূরপঙ্খী নৌকা'
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভায় মদন নেই! তৃণমূলের অন্দরে প্রসূনের গলায় এবার ক্ষোভের সুর?