ভারত ছাড়া অন্য দেশের জাতীয় সঙ্গীত রচনাতেও রয়েছে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান, জানুন কোথায়?

বাংলা ভাষায় সর্বকালীন শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাঁকে একইসঙ্গে বিশ্বকবি, কবিগুরু ও গুরুদেব অভিধারায় ভূষিত করা হয়। তিনি ছিলেন একাধারে অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। ভারবর্ষের ছাড়াও অন্য দেশের জাতীয় সঙ্গীত রচনাতেও রয়েছে তাঁর গভীর অবদান। আসুন জেনে নেওয়া যাক ঠিক কোন কোন দেশের জাতীয় সঙ্গীত কবিগুরুর লেখা?
 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার পিতা ছিলেন ব্রাহ্ম ধর্মগুরু দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং মাতা ছিলেন সারদাসুন্দরী দেবী। রবীন্দ্রনাথ ছিলেন পিতামাতার চতুর্দশ সন্তান। ছোটবেলাতেই হাতে কলম তুলে ধরেছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। মাত্র আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন। ১৮৭৪ সালে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা-এ তার "অভিলাষ" কবিতাটি প্রকাশিত হয়। এটিই ছিল তার প্রথম প্রকাশিত রচনা। রবীন্দ্রনাথের রচনা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি সাহিত্যে প্রথম নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

আজীবন তাঁর রচনায় বাঙালির অনুভূতি, আবেগ, আকাঙ্ক্ষা, অভিব্যক্তির নিখুঁত প্রকাশ ঘটেছে। তিনি একাধারে কবি, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক, সংগীত রচয়িতা-সুরকার, নাট্যকার, অভিনেতা ও দার্শনিক ছিলেন। লেখনী ছাড়া অঙ্কনে ও তাঁর নৈপুণ্যতা ছিল নজরকাড়া। জীবনে অসংখ্য ভাষায় গান রচনা করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কবিগুরু সর্বদা মানুষ ঈশ্বরের পূজার কথা বলতেন। সংগীত ও নৃত্যকে তিনি শিক্ষার অপরিহার্য অঙ্গ মনে করতেন। কবিগুরুর গান তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি।

Latest Videos

আরও পড়ুন- ১৬১ তম জন্মবার্ষিকীতে আজও প্রাসঙ্গিক তিনি, ২৫ শে বৈশাখে ফিরে দেখা কবির যাত্রা

ভারতের জাতীয় সঙ্গীত বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অন্যতম এক সৃষ্টি, এ কথা প্রায় সকলেরই জানা। তবে জানেন কি ভারত ছাড়াও অন্য দেশের জাতীয় সঙ্গীত রচনাতেও রয়েছে বিশ্বকবির গভীর অবদান? জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে, ভারত ভাগ্য বিধাতা এই গানটি (ভারতের জাতীয় সংগীত) রচনা করেছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যা ১৯১১ সালে জাতীয় কংগ্রেসের একটি সভায় প্রথম গাওয়া হয়। এরপর দেশ স্বাধীনতা লাভের পেলে ১৯৫০ সালে স্বাধীন ভারতের জাতীয় সঙ্গীতের স্বীকৃতি লাভ করে এই রচনার এটি। 

আরও পড়ুন- শুভেচ্ছা বার্তায় থাক কবি গুরুর প্রতি শ্রদ্ধা, দেখে নিন রবীন্দ্র জয়ন্তীতে কেমন বার্তা পাঠাবেন

এছাড়া ও বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত ও কবিগুরুর রচনা। ১৯০৫ সালে কবিগুরু আমার সোনার বাংলা গানটি রচনা করেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, "আমি কোথায় পাব তারে" এই বাউল গানটির সুর ও সঙ্গীত থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি এই গান। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের পর সে দেশের জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করে আমার সোনার বাংলা গানটি। 

আরও পড়ুন- 'হে নূতন, দেখা দিক আর-বার', কবির সম্পর্কে অজানা কিছু বিষয়, বাঙালি হয়ে যা না জানলেই নয়

সেইসঙ্গে মনে করা হয় শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীত শ্রীলঙ্কা মাতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দ্বারা অনুপ্রাণিত ও উৎসাহিত হয়ে লেখা হয়েছে। তবে এই নিয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। ১৯৪৮-এ শ্রীলঙ্কা স্বাধীনতা লাভ করলে জাতীয় সংগীত নির্ধারণ করবার জন্য একটি কমিটি গঠিত হয়। ওই কমিটিতে আনন্দ সামারাকুন তাঁর 'নমো নমো শ্রীলঙ্কা মাতা' গানটি জমা দেন। ওই কমিটি ২২ নভেম্বর, ১৯৫১-এ এই গানটিকে শ্রীলঙ্কার জাতীয় সংগীতের স্বীকৃতি দেয়। 

আদতে ১৯৩০ সালে বিশ্বভারতীতে চারুকলা ও সংগীত বিষয়ে উচ্চশিক্ষার পাঠ নিতে এসেছিলেন আনন্দ সামারুকুন। বিশ্বভারতীতে ৬ মাস থাকাকালীন তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গীত, সাহিত্য ও দর্শনের দ্বারা প্রভাবিত হন।  এরপর ১৯৪০ সালে সামারাকুন 'নমো নমো মাতা গানটি রচনা করলে এই নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। যদিও পরবর্তীতে এই 'নমো নমো মাতা'র লাইন সামান্য বদলে 'নমো নমো শ্রীলঙ্কা মাতা' হিসাবে শ্রীলঙ্কার জাতীয় সংগীতের স্বীকৃতি পায়। 

Share this article
click me!

Latest Videos

গভীর রাতে ধানক্ষেতে ভয়াবহ দৃশ্য! শিউরে উঠবেন আপনিও, আতঙ্কে গোটা Jaynagar, দেখুন | South 24 Parganas
প্রয়াগে ডুব দিয়ে পবিত্র স্নান সারলেন যোগী আদিত্যনাথ | CM Yogi | Prayagraj | Mahakumbh 2025 |
শুভেন্দুর বিরাট ঘোষণা! সোনাচূড়ার আড়াই বিঘা জমিতে হবে বিশাল Ram Mandir | Suvendu Adhikari
বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে এ কী করলো নাবালিকার সঙ্গে! চমকে যাবেন আপনিও, চাঞ্চল্য Nabadwip-এ | Nadia
‘RG Kar-র তথ্য প্রমাণ Mamata Banerjee-র নির্দেশে লোপাট হয়েছে’ বিস্ফোরক Adhir Ranjan Chowdhury