বেশিরভাগ হার্ট অ্যাটাক স্নানের সময় হয়, তাই এই বিষয় জানা থাকলে অনেকের জীবন বাঁচতে পারে

আমাদের হৃৎপিণ্ডে অক্সিজেন বহনকারী ধমনীতে ব্লকেজের কারণে যখন বাধা সৃষ্টি হয়, তখন হৃদস্পন্দনের হার ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে হার্ট অ্যাটাক বা কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়।
 

deblina dey | Published : Jul 26, 2022 7:49 AM IST / Updated: Jul 26 2022, 01:44 PM IST

হার্ট অ্যাটাক বা কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট আজকের যুগে মানুষের জন্য সবচেয়ে গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। হার্ট অ্যাটাক হঠাৎ হয় এবং এর পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। হার্ট অ্যাটাকের কোনও নির্দিষ্ট সময় বা ঋতু নেই। তবে, জেনে রাখা প্রয়োজন যে বেশিরভাগ হার্ট অ্যাটাক বা কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বাথরুমের স্নানে সময় হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

হার্ট অ্যাটাক এবং কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট কী-
উল্লেখযোগ্যভাবে, হার্ট অ্যাটাক এবং কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট আমাদের রক্তের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। অক্সিজেন এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টি রক্তের মাধ্যমে আমাদের শরীরে পৌঁছায়। আমাদের হৃৎপিণ্ডে অক্সিজেন বহনকারী ধমনীতে ব্লকেজের কারণে যখন বাধা সৃষ্টি হয়, তখন হৃদস্পন্দনের হার ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে হার্ট অ্যাটাক বা কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়।

বাথরুমে হার্ট অ্যাটাক-
জানলে অবাক হবেন হার্ট অ্যাটাকের বেশিরভাগ ঘটনা বাথরুমেই ঘটে। আসলে বাথরুমে হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ আসার পিছনে অনেক কারণ রয়েছে। আপনাকে অবশ্যই এই কারণগুলি সম্পর্কে সচেতন হতে হবে যাতে আপনি এটি থেকে নিজেকে এবং আপনার পরিবারকে নিরাপদ রাখতে পারেন।

চাপের সঙ্গে ভয় বাড়ে-
আমরা যখন সকালে টয়লেটে যাই, আমরা পেট পুরোপুরি পরিষ্কার করার জন্য চাপ প্রয়োগ করি। উল্লেখ্য, ভারতীয় টয়লেট ব্যবহার করার সময় লোকজনকে বেশি চাপ প্রয়োগ করতে দেখা যায়। এই চাপ আমাদের হৃৎপিণ্ডের ধমনীতে বেশি চাপ দেয়। এতে হার্ট অ্যাটাক বা কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

তাপমাত্রারও প্রভাব রয়েছে-
আমাদের বাড়ির অন্যান্য ঘরের তুলনায় বাথরুমের তাপমাত্রা ঠান্ডা থাকে। এখানে জলের প্রবাহ বারবার ঘটতে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে শরীরের তাপমাত্রার ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং রক্ত ​​সঞ্চালন বজায় রাখতে আরও বেশি পরিশ্রম করতে হয়। এটি হার্ট অ্যাটাকের একটি বড় কারণ।

রক্তচাপ একটি পার্থক্য করে-
সকালে আমাদের রক্তচাপ একটু বেশি থাকে। এমন অবস্থায় আমরা যখন স্নানের জন্য মাথায় বেশি ঠান্ডা বা গরম জলে সরাসরি ঢেলে দিই, তখন তা রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। এই কারণে বাথরুমে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধের উপায়-
১) হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকির পরে, এখন এটি কীভাবে এড়ানো যায় তা জানা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি ইন্ডিয়ান টয়লেট ব্যবহার করেন, তাহলে বেশিক্ষণ এক অবস্থায় বসে থাকবেন না। এর মাধ্যমে আপনি হার্ট অ্যাটাক বা কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের ঝুঁকি এড়াতে পারবেন।
২) স্নান করার সময় জলের তাপমাত্রা অনুযায়ী প্রথমে পায়ের তলায় ভিজিয়ে রাখুন। এরপর মাথায় হালকা জলে ঢালুন। এটি আপনার শরীরের এবং বাথরুমের তাপমাত্রার ভারসাম্য বজায় রাখবে। 
৩) পায়খানায় পেট পরিষ্কার করার জন্য, খুব বেশি বল প্রয়োগ করবেন না বা তাড়াহুড়ো করবেন না। টয়লেটে কিছুটা সময় নিন।
৪) আপনি যদি স্নান করার সময় বাথ টব ব্যবহার করেন, তাহলে এটি আপনার ধমনীতেও প্রভাব ফেলে। তাই বেশিক্ষণ বাথটাবে বসে থাকবেন না।

হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ
হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গ হঠাত সমস্যা। সেজন্য এর লক্ষণগুলো জানা জরুরি যাতে আপনি যদি কখনও কারও মধ্যে এ ধরনের লক্ষণ দেখেন তাহলে বুঝতে পারেন যে এটি হার্ট অ্যাটাক। 
১) বুকে প্রচন্ড ব্যাথা
২) শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া
৩) দুর্বলতা বোধ করা
৪) অনেক সময় ডায়াবেটিসের রোগী কোনও লক্ষণ না দেখিয়েই হার্ট অ্যাটাক করে। একে বলা হয় সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক।
৫) মানসিক চাপ ও নার্ভাস হওয়াও হার্ট অ্যাটাকের একটি লক্ষণ।
৬) মাথা ঘোরা বা বমি হওয়াও হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হতে পারে।

আরও পড়ুন-  কিডনি পরিষ্কার এবং ডিটক্স রাখতে ম্যাজিকের মত কাজ করে এই ৪ পানীয়

আরও পড়ুন- অদ্ভুত দেখতে এই সবজিটি নিয়ন্ত্রণ করে হৃদরোগ, পেটের জন্যও অত্যন্ত উপকারী

আরও পড়ুন- শরীরে হিমোগ্লোবিন বাড়াতে পাতে রাখুন এই সুপারফুড, রক্তের অভাব হবে না কোনওদিন

হার্ট অ্যাটাক হলে সঙ্গে সঙ্গে কী করবেন?
কারও মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ দেখা গেলে সঙ্গে সঙ্গে সতর্ক হয়ে নিন এবং এই ব্যবস্থাগুলো নিন।
১) যদি একজন ব্যক্তির হার্ট অ্যাটাক হয়, তবে প্রথমে তাকে মাটিতে ফেলে দিন।
২) যদি লোকটি বেশি টাইট পোশাক পরে থাকে, তাহলে সেগুলো খুলে ফেলুন।
৩) মনে রাখবেন শোওয়ার সময় ব্যক্তির মাথা যেন একটু ওপরের দিকে থাকে।
৪) অবিলম্বে একটি অ্যাম্বুলেন্সের জন্য কল করুন।
৫) হাত-পা ঘষতে থাকুন।

Share this article
click me!