গোটা ভারতের টিকাকরণে লাগবে ৩ বছর, সুস্বাস্থ্যের অধিকারীদের কপাল সবথেকে খারাপ

২০২১-এর গোড়াতেই আসছে ভ্যাকসিন

কিন্তু, মহামারি তখনই বিদায় নেবে না

গোটা ভারতের ভ্যাকসিন পেতে অন্তত ৩ বছর লাগবেই

একটি বইতে দাবি করলেন ভারতের শীর্ষস্থানীয় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা

amartya lahiri | Published : Nov 24, 2020 9:44 AM IST

আগামী বছরের গোড়াতেই করোনাভাইরাসের অন্তত বেশ কিছু ভ্যাকসিন হাতে পাওয়া যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। কিন্তু, তাই বলে করোনাভাইরাস মহামারির তখনই বিদায় নেওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। গোটা বিশ্বেই স্বাস্থ্যবান যুব সম্প্রদায়ের, যাদের কোনও রোগ-ব্যধী নেই, তাদের ভ্যাকসিন পেতে পেতে ২০২২ সাল লেগে যেতে পারে, এমনটাই জানাচ্ছেন ভারতীয় গবেষকরা। আর ভারতের সমগ্র জমসংখ্যাকে ভ্যাকসিন দিতে দিতে লেগে যেতে পারে অন্তত ৩ বছর।

সম্প্রতি ভারতের করোনা যুদ্ধের সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত, এমনকিছু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সাক্ষাতকারের মাধ্যমে, 'টিল উই উইন: ইন্ডিয়াজ ফাইট এগেইনস্ট দ্য কোভিড-১৯ প্যান্ডেমিক' নামে একটি গ্রন্থের কাজ চলছে। সেখানে, এইমস-এর ডিরেক্টর ডাক্তার রণদীপ গুলেরিয়া, জননীতি ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বিশেষজ্ঞ ডাক্তার চন্দ্রকান্ত লাহারিয়া এবং প্রখ্যাত ভ্যাকসিন গবেষক এবং ভাইরোলজিস্ট ডাক্তার গগনদীপ কং-এর মতো ব্যক্তিত্বরা কোভিড মহামারি ও তার ভ্যাকসিন-এর বিষয়ে আলোচনা করেছেন।

আরও পড়ুন - 'তৈরি আছে রাজ্য সরকার', বৈঠকের আগেই করোনা টিকা নিয়ে মোদীর বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন মমতা

আরও পড়ুন - ৭ দিন পর ফের ৪০ হাজারের নিচে দৈনিক সংক্রমণ, করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আজ ৮ মুখ্যমন্ত্রীর মুখোমুখি মোদী

আরও পড়ুন - অকাট্ট প্রমাণ দিলেন চিনা বাদুড় মানবী, উহানের ল্যাব থেকে ছড়ায়নি নভেল করোনাভাইরাস

তাঁরা জানিয়েছেন, ভারতে টিকাকরণের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে স্বাস্থ্যকর্মী, প্রয়োজনীয় পরিষেবায় যুক্ত ব্যাক্তি এবং কোমরবিডিটি এবং কোভিডে মৃত্যুর ঝুঁকি রয়েছে এমন মানুষদের। সব মিলিয়ে তা সম্ভবত ভারতের জনসংখ্যার ২০ শতাংশ হবে। সুস্থ যুবরা ভ্যাকসিন পাবেন একেবারে শেষ পর্যায়ে। সেই হিসাবে এগোলে ২০২২ সালের আগে তাদের কপালে ভ্যাকসিন নেই। আর সব ভারতীয়কে টিকা দেওয়া শেষ করতে অন্তত দুই থেকে তিন বছর তো লাগবেই বলে দাবি করা হয়েছে বইটিতে।

কিন্তু কীভাবে ঠিক করা হয় ভ্যাকসিন দেওয়ার ভেত্রে কাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে? বইটিতে বলা হয়েছে এই ক্ষেত্রে দুটি বিকল্প রয়েছে। যদি মৃত্যু রোধ করা লক্ষ্য হয়, তবে স্বাস্থ্যকর্মী এবং প্রবীণদের প্রথম পর্যায়ে টিকা দেওয়াটাই উচিত। আর যদি লক্ষ্য হয় সংক্রমণ রোধ করা, সেইক্ষেত্রে প্রথমে টিকা দিতে হবে অল্প বয়সী এবং যুবদের। কারণ, তারাই একে অন্যের বেশি সংস্পর্শে আসে।

এখনও অবধি সম্ভাব্য ভ্যাকসিন প্রার্থীদের একটিও ১০০ শতাংশ কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়নি। তবে এটা একেবারেই চিন্তার কিছু নয় বলেই জানানো হয়েছে বইয়ে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, 'অসম্পূর্ণ ভ্যাকসিন'ও জনগোষ্ঠীর একটা বড় অংশকে রক্ষা করতে পারে। নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলির মতে, ভ্যাকসিন পঞ্চাশ শতাংশ কার্যকর হলেও চলবে। কারণ তা সমাজে গোষ্ঠী অনাক্রম্যতা তৈরি করতে পারে। জনসংখ্যার ৭০ থেকে ৯০ শতাংশ মানুষের শরীরে ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হলে, তারা বাকি অংশকে সংক্রামিত হওয়া থেকে রক্ষা করতে পারে। তবে কোভিড ভ্য়াকসিনের যে পরীক্ষাগুলি হচ্ছে, দ্রুততার কারণে সেগুলিতে এত কম সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবী অংশ নিচ্ছেন, যে ভ্যাকসিনগুলি প্রকৃত কার্যকারিতা কিছু বেশি বা কম হতে পারে।

Share this article
click me!