
ভোটের আগে যোগী রাজ্যে ফের পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু (Custodial Death)! ঘটনাস্থল কৃষক-মৃত্যুতে কুখ্যাত লখিমপুর খেরি (Lakhimpur Kheri)। অভিযোগ লখিমপুর খেরির পালিয়া শহরে, এক ১৭ বছরের কিশোরকে মোবাইল চুরির সন্দেহে তুলে নিয়ে গিয়ে, ফাঁড়ির ভিতরে তার কাকা এবং তিন পুলিশ কর্মী নির্দয়ভাবে মারধর করে। এরপর, তাকে স্থানীয় এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানেই তার মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায়, ওই ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক-সহ, তিন পুলিশ সদস্যকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত গত ১৭ জানুয়ারি। ওই দিন মৃত কিশোরের খুড়তুতো ভাইয়ের মোবাইল ফোন চুরি গিয়েছিল। কাকা রাম বাহাদুর, তার বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছিল। ১৯ জানুয়ারি তার বাড়িতে হানা দিয়েছিল পুলিশ। তাকে খাজুরিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। মৃত কিশোরের দিদি জানিয়েছেন, তাদের মা'ও সঙ্গে গিয়েছিলেন। পরে তাঁকে ফেরত পাঠানো হয়। কয়েক ঘন্টা পর, ভাইকে ফেরত নিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ফোন করা হয়েছিল। তার বাবা-মা ফাঁড়িতে গিয়ে দেখেছিলেন, তাঁদের ছেলেকে বেধড়ক মারধর করা হচ্ছে। সে যন্ত্রণায় আর্তনাদ করে কাঁদছে। পরে ছেলেটি জানিয়েছিল, পুলিশ এবং কাকা, তাকে নির্দয়ভাবে মারধর করেছে। বাড়ি আসার পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। পালিয়া শহরের এক হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়েছিল। চিকিৎসা চলাকালীন সে মারা যায়।
আরও পড়ুন - Viral Video: ভাইরাল ভিডিও অস্বস্তি বাড়াল যোগী সরকারের, বরখাস্ত পুলিশ কর্তা
নিহত কিশোরের পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ এই হামলার সঙ্গে 'প্রত্যক্ষভাবে জড়িত'। তারা দুটি পৃথক অভিযোগ দায়ের করেছে। একটি মৃতের কাকা রাম বাহাদুর এবং প্রতিবেশী রাজবীর সিং-এর বিরুদ্ধে। দ্বিতীয় অভিযোগটি একজন সাব-ইন্সপেক্টর এবং দুই কনস্টেবলের বিরুদ্ধে। লখিমপুর খেরির এসএসপি সঞ্জীব সুমন বলেছেন, অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হচ্ছে। দোষী প্রমাণিত হলে কাউকে ছাড়া হবে না। ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে , এক পদস্থ পুলিশ কর্তাকে মৃত ছেলেটির শরীরের বাহ্যিক আঘাতের চিহ্ন দেখাচ্ছে তার পরিবারের সদস্যরা। সোমবার মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে, বলে জানিয়েছে পুলিশ। সেই রিপোর্ট থেকেই মৃত্যুর কারণ জানা যাবে বলে আশা করছে তারা।
তবে যোগী আদিত্যনাথের (Yogi Adityanath) শাসনামলে উত্তরপ্রদেশে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা নতুন নয়। মাস তিনেক আগেই কাসগঞ্জে আরেকটি পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছিল। একটি নাবালিকা হিন্দু মেয়েকে 'অপহরণ' করার অভিযোগে, ২২ বছরের মহম্মদ আলতাফকে আটক করেছিল পুলিশ। পরে, তাকে লকআপের একটি শৌচাগারের ভিতরে গলায় দড়ি দিয়ে 'ঝুলন্ত' অবস্থায় পাওয়া যায়। তার মৃত্যুর পর, ওই 'অপহৃত' বা 'নিখোঁজ' হিন্দু মহিলা, একজন প্রাপ্তবয়স্ক বলে প্রমাণিত হয়েছিল। তিনি দাবি করেছিলেন, তিনি স্বেচ্ছায় আলতাফের সঙ্গে ঘর ছেড়েছিলেন, তাকে কখনই অপহরণ করা হয়নি। এই ঘটনার কয়েক মাস আগে, জগদীশপুরা থানার স্ট্রংরুম থেকে ২৫ লক্ষ টাকা চুরির অভিযোগে পুলিশ আটক করেছিল সাফাই কর্মী অরুণ বাল্মীকিকে। তারও পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয়েছিল। অরুণ বাল্মীকির পরিবারও 'পুলিশি অত্যাচারে'র অভিযোগ করেছিলেন।