করোনা টিকা নিতে গিয়ে অদ্ভূত প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর
পশুর ইনজেকশন দেবেন না তো
বিস্মিত এইমস-এর নার্স-কর্মীরা
কেন এমন প্রশ্ন করলেন নরেন্দ্র মোদী
'পশুদের যে মোটা সূঁচের ইনজেকশন দেওয়া হয়, আমায় সেই ইনজেকশন লাগাবেন না তো?' সোমবার কোভিড-১৯ টিকা নিতে গিয়ে আচমকা নার্সদের এমনই প্রশ্ন করেছিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার উত্তরে হাসপাতালের কর্মীরা যখন কী বলবেন বুঝতে পারছেন না, সেই সময় মোদী আবার বলেন, 'চামড়া মোটা তো, মোটা সূঁচ লাগতে পারে।' এইমস হাসপাতালের সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে।
সময়, সোমবার ভোর ৬টা বেজে ২৫ মিনিট। ভালো করে আলোই ফোটেনি কুয়াশাচ্ছন্ন দিল্লিতে। ঠিক এমন সময়ই নয়াদিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস বা এইমস (AIMS) হাসপাতালে পা পড়েছিল এক ভিভিআইপি ব্যক্তিত্বের। দেশের এক নম্বর স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্র হওয়ার দৌলতে প্রায়শই বহু গন্যমান্য ব্যক্তির পদধূলি পড়ে এই হাসপাতালে। কর্মীরাও তাঁদের পরিষেবা দিয়ে অভ্যস্ত। তাও সাত সকালে প্রধানমন্ত্রী নকেন্দ্র মোদী কোভিড টিকা নিতে এসেছেন দেখে, সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের অনেকেই বেশ ঘাবড়ে গিয়েছিলেন।
সেই সময়ই প্রধানমন্ত্রীর ওই প্রশ্ন, পশুচিকিত্সার উদ্দেশ্যে যে সূঁচ ব্যবহার করা হয়, তাঁকে টিকা দেওয়ার জন্য, সেই সূঁচ ব্যবহার করা হবে কিনা। প্রধানমন্ত্রীকে এদিন টিকা দেন পুদুচেরির বাসিন্দা নার্স রসাম্মা অনিল। আর তদারকির দায়িত্বে ছিলেন এইমস-এর সিনিয়র নার্সিং স্টাফ, কেরলের বাসিন্দা পি নিবেদিতা। প্রধানমন্ত্রীকে টিকা দেওয়ার দায়িত্ব, ফলে দুজনেই ছিলেন তঠস্থ। তাঁর এমন অদ্ভূত প্রশ্নের অর্থ তাঁরা দুজনের কেউই ধরতে পারেননি। শুধু, প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করতে তাঁরা জানান, তেমন সূঁচ ব্যবহার করা হবে না।
ভ্যাকসিন নিতে গিয়ে রসিকতায় মাতলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
তাঁরা, এই প্রশ্নের মজাটি ধরতে পারেননি বুঝে, প্রধানমন্ত্রী মোদী পরক্ষণেই তাঁর সেই প্রশ্নের ব্যাখ্যা দেন। ওই দুই নার্স এবং উপস্থিত দিল্লি এইমস-এর অন্যান্য কর্মচারীদের তিনি হাসতে হাসতে বলেন, 'রাজনীতিবিদদের চামড়া খুব মোটা হয় বলে শোনা যায়। তাই ভাবছিলাম, আপনারা বোধহয় আমায় টিকা দেওয়ার জন্য বিশেষ কোনও মোটা সূঁচ ব্যবহার করার পরিকল্পনা করেছেন।'
আরও পড়ুন - অসমের গামছা, কেরল ও পুদুচেরির নার্স, ভোটের আগে মোদীর টিকাগ্রহণে বাদ পড়ল বাংলা
তাঁর এই কথা শোনার পর নার্সরা আর তাঁদের গাম্ভির্য ধরে পারেননি। হো হো করে হেসে ওঠেন তাঁরা। আর প্রধানমন্ত্রী মতো ভিভিআইপি-কে পরিষেবা দেওয়ার যে চাপের পরিবেশ ছিল, তা মুহূর্তেই কেটে যায়। অনেক সহজ হয়ে যায় পরিবেশ। আর তা বজায় ছিল একেবারে শেষ পর্যন্ত। টিকা গ্রহণ পর্ব শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি মন্তব্য করেন, 'হয়ে গিয়েছে? কখন হল বুঝতেই পারলাম না'।
অন্যদিকে, কোভ্যাক্সিন টিকা নিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দল, এক অংশের ভ্যাকসিন বিশেষজ্ঞ ও জনমানসে যতই সংশয় থাক, এদিন প্রধানমন্ত্রী মোদী এই সম্পূর্ণ দেশিয় পদ্ধতিতে, আইসিএমআর-এর সহযোগিতায় হায়দরাবাদের ভারত বায়োটেক সংস্থার তৈরি করোনাভাইরাস টিকাই গ্রহণ করেন। এতে করে দেশবাসীকে তিনি এই টিকার সপক্ষে ইতিবাচক বার্তা দিয়েছেন এবং এই টিকাকে কেন্দ্র করে ভুল তথ্য ছড়ানো বন্ধ হবে, বলে আশা প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন।