দেশের সব অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের উদ্দেশে চিঠি লিখেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় সরকারের বেশ কিছু সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ চেয়েছিলেন তিনি। আর এবার সেই ডাকেই সাড়া দিল শিবসেনা।
বিপুল ভোট পেয়ে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। আর ঠিক তারপর থেকেই একটু একটু করে ২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের ঘুঁটি সাজাতে শুরু করে দেয় তারা। তার জন্য বাংলার পাশাপাশি অন্য রাজ্য জলের লক্ষ্যে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তবে সেখানে তেমন সাফল্য না পেলেও এখনই ময়দান ছাড়তে নারাজ ঘাসফুল শিবির। এনডিএ বিরোধী জোট তৈরির প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। কিছু দিন আগেই দেশের সব অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের উদ্দেশে চিঠি লিখেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় সরকারের বেশ কিছু সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ চেয়েছিলেন তিনি। আর এবার সেই ডাকেই সাড়া দিল শিবসেনা। তারপরই শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউতের তরফে জানানো হয়েছে, মুম্বইয়ে খুব তাড়াতাড়ি অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠক হতে পারে। রবিবার তিনি বলেন, সম্মেলনের আয়োজন করবে শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস জোট।
গত ২৯ মার্চ সকলকে একজোট হতে বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছিলেন মমতা। বলা হয়েছিল, জাতীয় স্তরে বিরোধীদের একজোট হয়েই প্রতিবাদে নামতে হবে। তবে সেখানে শুধু অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদেরই নয়, সব বিরোধী দলের নেতার কাছেও আবেদন করেছিলেন তিনি। লিখেছিলেন, ‘বিজেপি গণতন্ত্রের উপর সরাসরি আঘাত করছে। সকলের কাছে আমার আবেদন, নিজেদের সময়-সুযোগ মতো একসঙ্গে বসে আলোচনা হোক এবং কেন্দ্রের বিরোধিতায় সরব হই।’
আরও পড়ুন- 'অনুব্রত মণ্ডলকে বিষ ইন্জেকশন দিয়ে মেরে ফেলার চক্রান্ত হচ্ছে', আশঙ্কা বিজেপি বিধায়কের
আর এবার সেই প্রস্তাবেই সাড়া দিয়েছে শিবসেনা। সঞ্জয় রাউত জানিয়েছেন, "বিরোধী জোট নিয়ে বৈঠক করতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের চিঠি দিয়েছিলেন। তারপরই আমরা এই বিষয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করি। মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গেও বেশ কয়েক দফায় আলোচনা হয়েছে। আলোচনা হয় এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারের সঙ্গেও। তখনই এই বৈঠক নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খুব দ্রুত আমরা অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে এই বৈঠকের আয়োজন করব।" আর এই বৈঠক নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, এই বৈঠক নিয়ে কিছুটা হলেও চাপে বিজেপি।
আরও পড়ুন- 'কলকাতায় হিন্দু ভোটাররা বের হননি', দলের হারে যুক্তি দিলীপ ঘোষের
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে এখনও অনেকটা সময় থাকলেও তার আগে রাষ্ট্রপতি ও উপ-রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন রয়েছে। সেই দুই নির্বাচনে বিরোধীরা জোট বেঁধে প্রার্থী দিতে পারেন কি না, তা নিয়েও রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে। আর তার মধ্যেই অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের চিঠি লিখে তাঁদের বৈঠকে বসার জন্য আহ্বান জানালেন মমতা। তাতে আবার মিলছে সাড়াও। এদিকে শনিবারই রাজ্যের দুই কেন্দ্রে হওয়া উপনির্বাচনে একেবারে ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির। বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বামেরা। সেখানে বিজেপি একেবারে শেষে। আর তার মধ্যেই আবার এই বৈঠক চিন্তা বাড়াচ্ছে বিজেপির অন্দরে।
আরও পড়ুন, 'কেন এতগুলি ইস্তফা একসঙ্গে', বিজেপির ভরাডুবির পর বিস্ফোরক অনুপম হাজরা