৪৬ বছর বয়সী মহিলা বনরক্ষী স্বাতী ধুমানে TATR-এর কোর এরিয়া কোলারা ফরেস্ট রেঞ্জের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। শনিবার সকাল ৭টার সময় জঙ্গলের মধ্যে প্রবেশ করেছিলেন তিনি। জঙ্গল তাঁর চেনা থাকলেও তিনজন বন শ্রমিককে নিয়েই এই জঙ্গলে প্রবেশ করেছিলেন।
এই মুহূর্তে জঙ্গলের (Forest) মধ্যে ঠিক কত সংখ্যক বাঘ (Tiger) রয়েছে সেটাই খুঁজে বের করার চেষ্টা করছিলেন তিনি। আর সেই কারণেই প্রবেশ করেছিলেন জঙ্গলের একদম গভীরে। কিন্তু, সেখানে যে তাঁর জন্য সাক্ষাৎ মৃত্যু (Death) অপেক্ষা করছিল তা ঠাহর করতে পারেননি। সেই কারণেই জঙ্গল হাতের তালুর মতো চেনা থাকলেও শেষ রক্ষা আর হল না। তাঁকে টেনে নিয়ে গেল বাঘিনী (Tigress Attack)। পরে ওই গভীর জঙ্গল থেকে উদ্ধার করা হয় মহিলা বনরক্ষী (Lady forest guard) স্বাতী ধুমানের (Swati Dumane) নিথর দেহ। এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের চন্দ্রপুর জেলার (Chandrapur district of Maharashtra) তাদোবা-আন্ধারি ব্যাঘ্র প্রকল্পে (TATR)।
৪৬ বছর বয়সী মহিলা বনরক্ষী স্বাতী ধুমানে TATR-এর কোর এরিয়া কোলারা ফরেস্ট রেঞ্জের (Kolara forest range) সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। শনিবার সকাল ৭টার সময় জঙ্গলের মধ্যে প্রবেশ করেছিলেন তিনি। জঙ্গল তাঁর চেনা থাকলেও তিনজন বন শ্রমিককে নিয়েই এই জঙ্গলে প্রবেশ করেছিলেন। অল ইন্ডিয়া টাইগার এসটিমেশন ২০২২-এর (All India Tiger Estimation 2022) সমীক্ষার জন্যই তাঁদের জঙ্গলে যেতে হয়েছিল। আর এই সমীক্ষার প্রথম দিন ছিল শনিবার (Saturday)। সেইদিনই ঘটে গেল এই মর্মান্তিক ঘটনা।
আরও পড়ুন- এবার ত্রিপুরাতে রক্ত ঝরল সাংবাদিকের, ফের আক্রান্ত তৃণমূলও
সকাল ৭টার দিকে কোলারা গেট থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার ভিতরে গভীর জঙ্গলে হেঁটে প্রবেশ করেছিলেন তাঁরা। ঠিক তখনই জঙ্গলের ভিতরের রাস্তার উপর এক বাঘিনীকে বসে থাকতে দেখেন তাঁরা। এই বাঘিনীকে চেনেন বনরক্ষীরা। সবার কাছে মায়া বলেই পরিচিত সে। প্রায় ২০০ মিটার দূরে বসেছিল সে। বাঘিনীর চলে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন স্বাতীরা। সেখানে প্রায় আধঘণ্টা অপেক্ষা করেন। কিন্তু, বাঘিনী যাওয়ার নাম করছিল না। ওইভাবে রাস্তার উপরেই বসেছিল সে। তাই বাঘিনী না যাওয়ায় ঘুরপথে অন্য রাস্তা দিয়ে জঙ্গলে প্রবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন স্বাতী। এদিকে তখনও মায়া ওই রাস্তার উপর বসেছিল।
আরও পড়ুন- রাতে বিমান অবতরণে জটিলতা, আজ নয়, সোমবারই ত্রিপুরা যাচ্ছেন অভিষেক
এই ঘটনা প্রসঙ্গে TATR-এর মুখ্য বন সংরক্ষক জীতেন্দ্র রামগাওনকর একটি বিবৃতিতে জানান, "কোনওভাবে স্বাতীদের জঙ্গলে প্রবেশ করার বিষয়টি টের পেয়ে গিয়েছিল বাঘিনী। ঠিক তখনই দূর থেকে এসে স্বাতীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে সে। তিন বন শ্রমিকের চোখের সামনে থেকেই স্বাতীকে টেনে নিয়ে চলে যায় গভীর জঙ্গলের মধ্যে।" পরে ঘটনার কথা জানতে পেরে বন আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। এরপর সেখান থেকে স্বাতীর নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তের দেহ পাঠানো হয় চিমুর হাসপাতালে। ঘটনার পরই খবর দেওয়া হয় স্বাতীর স্বামী ও মেয়েকে।
আরও পড়ুন- গ্রেফতার সায়নী ঘোষ, হেলমেট পরে তাণ্ডব 'বিজেপি'-র, উত্তাল ত্রিপুরা
আরও এক আধিকারিক বলেন, "পর্যটকদের কিছু গাড়িও ছিল রাস্তায়। স্বাতী ও তাঁর সঙ্গীরা চার কিলোমিটার সার্ভে করে, বাকি ৫ কিমি শেষ করতে চাইছিলেন। এদিকে বাঘিনী বসে থাকায় তাঁরা জঙ্গলের ভিতর দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তবে এই সময় ফিরে এলেই ভালো করতেন। অপর তিনজন স্বাতীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেও পারেননি।" এই ঘটনার পর বর্তমানে ওই সাইন সার্ভে আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। এমনকী, জঙ্গলের মধ্যে হেঁটে যাওয়াও আপাতত বন্ধ।