জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের উপর হুমকি ছিল বলেই সূত্রের খবর। এর আগেও বেশ কয়েকবার শিনজো আবের উপরে হামলার চেষ্টা হয়েছিল। যদিও তখন তিনি প্রধানমন্ত্রীর তখতে ছিলেন।
অনেকটা জে এন এফ কেনেডির হত্যার ধাঁচেই এবার হামলা জাপানের প্রাক্তন প্রাইম মিনিস্টার শিনজো আবের উপরে। পশ্চিম জাপানের নারায় শুক্রবার সকালে রাস্তার উপরে কিছু মানুষের উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছিলেন আবে। সেই সময় তাঁকে পিছনে থেকে গুলি করা হয়। দুবার গুলি করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। গলায় গুলি লাগে আবের। এরপরই তিনি রাস্তার উপরে পড়ে যান। রাস্তায় পড়ে যেতেই আবে হৃদরোগে আক্রান্ত হন বলে খবর। তড়িঘড়ি পুলিশ হেলিকপ্টারে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
শিনজো আবের উপরে হামলার পরেই সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে এসেছে। তাতে দেখা গিয়েছে রাস্তার উপরে দাঁড়িয়ে থাকা কিছু মানুষের উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছেন শিনজো আবে। আর এই সময়ই পিছন থেকে তাঁকে গুলি করা হয়। খুব কাছেই আঁততায়ী দাঁড়িয়েছিল। গুলিকাণ্ডের পর আঁততায়ী ঘটনাস্থলেই দাঁড়িয়েছিল। সে পালানোর কোনও চেষ্টাই করেনি। সিসিটিভি ফুটেজে সেই ছবি ধরা পড়েছে। ফলে আঁতাতীয়কে ধরতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি নিরাপত্তা রক্ষীদের। জানা গিয়েছে, বছর চল্লিশের এই আঁততায়ীর নাম ইকাগামি। কেন সে এমন একটি ঘটনা ঘটাল তা জানার চেষ্টা চলছে। জাপানের প্রাইম মিনিস্টারের সিক্রেট সার্ভিস দফায় দফায় ইকাগামি-কে জেরা করছে।
সিসিটিভি ফুটেজে আরও দেখা গিয়েছে রাস্তায় দাঁড়িয়ে কিছু মানুষের উদ্দেশে হাত নাড়তে নাড়তে কিছুটা এগিয়ে গিয়েছিলেন আবে। পিছনে এবং আশপাশে তাঁর দেহরক্ষীরা। এমনই সময় পিছন থেকে গুলি ছুটে আসে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখা যায় রাস্তায় মুখ থুবড়ে পড়ে গিয়েছেন বছর সাতষট্টির শিনজো আবে। তাঁর গলা দিয়ে অঝোর ধারায় রক্ত বয়ে যাচ্ছিল। নিরাপত্তারক্ষীরা হাত দিয়ে চেপে রক্ত বন্ধ করার চেষ্টা করছিলেন। আবের উপরে যে হামলা হয়েছে প্রথমে সে খবর জানতই না তাঁর দল লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি। এমনকী স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনও প্রথমে শিনজো আবের উপরে হামলার খবর নিশ্চিত করতে পারেনি।
রবিবার জাপানের আপার হাউসে নির্বাচন। তার জন্য নারা শহের লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থীর জন্য নির্বাচনী প্রচারে বেরিয়েছিলেন শিনজো আবে। জাপানের সর্বোচ্চ সময় প্রাইম মিনিস্টারের তখতে ছিলেন আবে। প্রথমে ২০০৬ সালে প্রাইম মিনিস্টার হন তিনি। এরপর ২০১২ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত টানা ওই পদে ছিলেন।
শিনজো আবের উপরে হামলার এই ঘটনা সকলকেই আতঙ্কিত করেছে। কারণ জাপানে রাজনৈতিক হামলার খবর খুব একটা পাওয়া যায় না। তারপরে জাপানের আগ্নেয়াস্ত্র আইন অর্থাৎ গান কন্ট্রোল ল অত্যন্ত কড়া। জাপানে লাইসেন্সযুক্ত আগ্নেয়াস্ত্র রাখার প্রক্রিয়াও দীর্ঘ। চট করে কাউকে আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অনুমতি দেওয়া হয় না। যার ফলে জাপানে আগ্নেয়াস্ত্রে মৃতের সংখ্যা বছরে দুই সংখ্যাও পার করতে পারে না।
আরও পড়ুন- Boris Johnson Resigned: চাপে পড়ে পদত্যাগ ঘোষণা বরিস জনসনের, বিদায় বক্তৃতায় বলেন 'আমি চেষ্টা করেছি'
আরও পড়ুন- কে এই ঋষি সুনক., যার এক ইস্তফাতে পতন হল জনসনের সাম্রাজ্যের
আরও পড়ুন- পরবর্তী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ভারতীয় বংশোদ্ভুত ঋষি সুনক? পাঁচ পয়েন্টে জেনে নিন তাঁর সম্পর্কে