২১ বছর ধরে স্ত্রীর কফিনবন্দি মরদেহর সঙ্গে একই ঘরে বাস, সুখ-দুঃখের কথাও বলতেন মৃত স্ত্রীর সঙ্গে

স্ত্রীর মরদেহর সঙ্গে ২১ বছরের বাস। সুখ দুঃখের কথা আগের মতই ভাগ করে নিতেন। কফিনে ২১ বছর ধরে তালাবন্ধ অবস্থায় ঘরেই রেখে দিয়েছেন স্ত্রীকে। মৃতদেহ সৎকার করেননি। 

deblina dey | Published : May 16, 2022 10:53 AM IST

ভালবাসার এক অনন্য নজির নাকি মানসিক অসুস্থতার লক্ষণ। সে বিষয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে। স্ত্রীর মরদেহর সঙ্গে ২১ বছরের বাস। সুখ দুঃখের কথা আগের মতই ভাগ করে নিতেন। কফিনে ২১ বছর ধরে তালাবন্ধ অবস্থায় ঘরেই রেখে দিয়েছেন স্ত্রীকে। মৃতদেহ সৎকার করেননি। একেবারেই রবিনসনস্ট্রিটের মতই ঘটনা। তবে এই ঘটনা এদেশের নয়। ঘটনাটি ঘটেছে থাইল্যান্ডে।

সেনাবাহিনীতে ডাক্তার হিসাবে পোস্টিং ছিলেন তেনাত চার্ন। ওনার স্ত্রীর নাম ছিল জিরাওয়ান যিনি ২০০১ সালেই মারা গিয়েছিলেন।  জিরাওয়ানের মস্তিষ্ক সংক্রান্ত কিছু অসুস্থতা নিয়ে ৫৫ বছর বয়েছে হাসপাতালে ভর্তী করা হয়। তারপর আর বাড়ি ফেরেননি তিনি। জিরাওয়ানের এই আকস্মিক মৃত্যু কোনওভাবেই মেনে নিতে পারেননি চিকিৎসক স্বামী। স্ত্রীর প্রতি অগাধ ভালবাসার কারণে অন্যদিকে চিকিৎসক হওয়ার সুবিধা নিয়ে তিনি জিরাওয়ান-কে হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে আসেন।

এরপর কেটে গিয়েছে ২১ বছর। একই ভাবে সমাজের প্রথার বিরুদ্ধে গিয়ে স্ত্রীর কফিনবন্দি মৃতদেহ সমাধিস্থ না করে রেখে দিয়েছেন বাড়িতেই। এই ঘটনার জেরে ক্ষুব্ধ হয়ে দুই ছেলেই বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। কিন্তু তাতেও মত বদলাননি চিকিৎসক তেনাত চার্ন। কফিনে রাখা স্ত্রীর মৃতদেহর সঙ্গে প্রায়ই কথা বলতেন তিনি। যাতে স্ত্রীর মৃতদেহ রাখতে কোনও আইনি সমস্যায় পড়তে না হয়, তাই আইন নিয়ে পড়াশোনা করেন। কিন্তু বহু বছর অতিবাহিত হওয়ার পর প্রতিবেশীদের চাপ বাড়তে থাকলে অবশেষে মৃত স্ত্রীকে পূর্ণ মর্যাদা দিয়ে ও রীতিনীতি মেনে তিনি স্ত্রী জিরাওয়ান-কে সমাধিস্থ করেন। 

প্রসঙ্গত, স্থানীয় প্রশাসনের উপস্থিতিতে পূর্ণ মর্যাদা দিয়ে ও রীতিনীতি মানতে যখন তালাবন্দি কফিন সমাধিস্থ করার আগে খোলা হয়, তখন তার মধ্যে শুধু কঙ্কালটাই পড়ে ছিল। বর্তমান সমাজে স্বামী-স্ত্রীর এমন অনন্য প্রেমের নজির খুব কমই দেখা যায়। 
 

Share this article
click me!