
গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে ও হজমশক্তি ঠিক রাখতে রায়তা অনেকের প্রিয় খাবার। সাধারণত শসা দিয়ে তৈরি রায়তা যেমন জনপ্রিয়, তেমনই সুস্বাদু। শশা ও দই উভয়ই শরীরকে আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এবং পাকস্থলীকে ঠান্ডা রেখে বদহজমের সমস্যা কমায়। কিন্তু রায়তায় যদি শসার বদলে লাউয়ের কুচি দিয়ে বানানো হয়, তবে কি সেটি আরও বেশি স্বাস্থ্যকর হবে?
লাউয়ের রায়তা কেন বেশি উপকারী?
১। হৃদযন্ত্রের সুরক্ষা
লাউয়ে প্রচুর পটাশিয়াম থাকে। শ্রেয়া বলছেন, ‘‘ওই পটাশিয়াম যেমন শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে, তেমনই রক্তে ‘খারাপ’ কোলেস্টেরল বা এলডিএলের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। দু’টি বিষয়ই হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
২। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
লাউয়ের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম, ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায় না। শ্রেয়া বলেন, ‘‘যাঁদের ডায়াবিটিস রয়েছে, তাঁদের জন্যও লাউ খাওয়া ভাল। কারণ লাউয়ের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (যার উপর রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বে়ড়ে যাওয়া নির্ভর করে) অনেক কম।’’
৩। প্রদাহ হ্রাস করে
লাউয়ে থাকা প্রাকৃতিক উপাদানগুলো শরীরের জ্বালা বা ব্যথা কমাতে কার্যকর।
৪। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর
লাউয়ে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। শ্রেয়া বলছেন, ‘‘এই ধরনের সব্জিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টস ক্যানসার প্রতিরোধকও হয়।’’
৫। ওজন কমাতে কার্যকর
শ্রেয়া বলেন, ‘‘লাউয়ে রয়েছে একাধিক ভিটামিন এবং খনিজ। আর আছে ফাইবার। তাই খেলে অনেক ক্ষণ পেট ভর্তি থাকে। আবার এতে ক্যালোরিও কম। তাই যাঁরা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইছেন, তাঁরা সারা দিনে এক বার দই দিয়ে লাউয়ের রায়তা খেতে পারেন। তাতে তাঁদের ওজনও কমতে পারে।’’
কীভাবে বানাবেন?
লাউয়ের রায়তা বানাতে লাউকে কুরে নিয়ে তাকে সেদ্ধ করে জল ঝরিয়ে দইয়ে মিশিয়ে নেওয়া হয়। সঙ্গে কাঁচা লঙ্কাকুচি, ভাজা জিরের গুঁড়ো, সামান্য গরম মশলা আর বিটনুন মিশিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যায় লাউয়ের রায়তা।
কতটা জনপ্রিয় এই রায়তা?
লাউ দিয়ে বানানো রায়তার চল বাংলায় না থাকলেও মহারাষ্ট্র, গুজরাতে এই রায়তা বানানোর চল আছে। মহরাষ্ট্রে লাউ দিতে বানানো রায়তাকে বলা হয় ‘দুধি কা রায়তা’। গুজরাতে বলা হয় ‘ঘিয়া রায়তা’। তবে লাউ দিয়ে রায়তা খাওয়া প্রচলন সবচেয়ে বেশি রয়েছে পঞ্জাবে। সেখানে ওই রায়তা পরিচিত ‘লউকি কি রায়তা’ নামে!