
মানসিক চাপ কমাতে মেডিটেশন বা ধ্যান করার কথা বলেন অনেকেই। তবে ধ্যান করা নিয়ে নানা রকম ধারণা আছে। অনেকেই ভাবেন শুধু চোখ বুঝে মনঃসংযোগ করলেই হবে। তা নয়। যদি দুশ্চিন্তা, অবসাদের মেঘ সরাতে হয়, তা হলে ধ্যানের কয়েক রকম পদ্ধতি শিখে রাখা জরুরি।
ধ্যান করার পাঁচটি সহজ পদ্ধতি হল মনন, গভীর শ্বাস, সচেতনতা, মন্ত্র এবং ধীর গতিশীলতা। এই পদ্ধতিগুলো নিয়মিত অনুশীলন করলে সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই দুশ্চিন্তা ও অবসাদ কমাতে সাহায্য করে। এখানে ধ্যানের পাঁচটি পদ্ধতি বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
১. মনন বা একাগ্রতা ধ্যান পদ্ধতি: একটি শান্ত জায়গায় আরামদায়কভাবে বসুন। আপনার মনোযোগ একটি নির্দিষ্ট বস্তুর উপর কেন্দ্রীভূত করুন, যেমন একটি মোমবাতির শিখা বা একটি ছবি। যখন মন বিক্ষিপ্ত হবে, তখন আলতোভাবে মনোযোগকে আবার বস্তুর উপর ফিরিয়ে আনুন।
* উপকারিতা: এটি মনকে শান্ত করতে, একাগ্রতা বাড়াতে এবং বিক্ষিপ্ত চিন্তা থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে।
২. গভীর শ্বাস বা শ্বাস-প্রশ্বাস ধ্যান পদ্ধতি: আরামদায়কভাবে বসে, ধীরে ধীরে এবং গভীর শ্বাস নিন। প্রতিটি শ্বাস-প্রশ্বাসের উপর মনোযোগ দিন। শ্বাস নেওয়ার সময় আপনার পেট এবং বুক প্রসারিত হওয়া অনুভব করুন এবং শ্বাস ছাড়ার সময় সব চিন্তা ও চাপ বের হয়ে যাচ্ছে এমনটা ভাবুন।
* উপকারিতা: এটি তাৎক্ষণিকভাবে শরীর ও মনকে শান্ত করে, মানসিক চাপ কমায় এবং ক্লান্তি দূর করে।
৩. সচেতনতা বা মননশীলতা ধ্যান পদ্ধতি: আপনার চারপাশের পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন হন। একটি শান্ত পরিবেশে বসে, আপনার পঞ্চ ইন্দ্রিয়কে ব্যবহার করুন। আপনি কী দেখতে, শুনতে, গন্ধ পেতে, এবং অনুভব করতে পারছেন সেদিকে মনোযোগ দিন। কোনো বিচার বা প্রতিক্রিয়া না করে কেবল পর্যবেক্ষণ করুন।
* উপকারিতা: এটি আপনাকে বর্তমান মুহূর্তে থাকতে শেখায়, যা উদ্বেগ এবং মানসিক চাপ কমাতে সহায়ক।
৪. মন্ত্র বা জপ ধ্যান পদ্ধতি: একটি নির্দিষ্ট শব্দ, মন্ত্র বা মন্ত্রগুচ্ছ (যেমন "ওম") মনে মনে বা ধীরে ধীরে বারবার উচ্চারণ করুন। প্রতিটি উচ্চারণের সাথে সাথে আপনি একটি গভীর মানসিক শান্তি অনুভব করবেন।
* উপকারিতা: এটি মনকে শান্ত করে, একটি ইতিবাচক মানসিকতা তৈরি করে এবং আবেগপ্রবণতা হ্রাস করে।
৫. ধীর গতিশীলতা বা হাঁটা ধ্যান পদ্ধতি: শান্তভাবে এবং ধীর গতিতে হাঁটুন। প্রতিটি পদক্ষেপ এবং আপনার শরীরের নড়াচড়ার উপর মনোযোগ দিন। প্রকৃতির কাছাকাছি হাঁটার সময় এটি আরও কার্যকর হতে পারে।
* উপকারিতা: এটি মানসিক চাপ কমায়, শরীরকে সক্রিয় রাখে এবং মনকে শান্ত ও সতেজ করে তোলে।