এক মাসের মধ্যে ওজন কমবে হুড়মুড়িয়ে! বাড়িতে বানিয়ে ফেলুন এই কয়েকটি ওজন কমানোর পানীয়

Published : Jun 20, 2025, 06:49 PM IST

 পেটের চর্বি কমাতে সমস্যা হচ্ছে? ঘরে তৈরি সহজ পানীয়ের সাহায্যে ওজন কমানো সম্ভব। নিয়মিত এই পানীয় পান করলে দ্রুত ওজন কমে স্লিম হতে পারবেন। 

PREV
110

ওজন কমানো অনেকের কাছেই কঠিন কাজ। সঠিক খাদ্য এবং ঘরোয়া টোটকার সাহায্যে সহজেই ওজন কমানো যায়। ঘরে তৈরি পানীয়ের সাহায্যে ওজন কমানো সম্ভব। পুষ্টিবিদের পরামর্শ অনুযায়ী ঘরে তৈরি ওজন কমানোর পানীয় এবং এর উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

210

ওজন কমানো কেন গুরুত্বপূর্ণ?

ওজন বেশি থাকা শুধু সৌন্দর্যের বিষয় নয়, এটি স্বাস্থ্য সমস্যাও। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, কিছু ধরণের ক্যান্সার, জয়েন্টের ব্যথা, অনিদ্রা, ফ্যাটি লিভার সহ অনেক রোগের কারণ হতে পারে। সুস্বাস্থ্যের জন্য সঠিক ওজন বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও ওজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সঠিক ওজন আত্মবিশ্বাস বাড়ায় এবং মানসিক চাপ কমায়।

310

ওজন কমানোর জন্য এই সহজ পানীয় তৈরিতে আদা এবং লেবুর রস ব্যবহার করুন। এই উপাদানগুলিতে রয়েছে বিশেষ ঔষধি গুণ। এগুলি আপনার পাচনতন্ত্রের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং চর্বি কমাতে সাহায্য করে।

উপকরণ:

আদা: ১ ইঞ্চ টুকরো (ছিলে এবং কুঁচি করা) - আদা পাচনে সাহায্য করে এবং পাচনতন্ত্রের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

লেবু: অর্ধেক লেবুর রস - লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে, যা বিষাক্ত পদার্থ বের করে এবং চর্বি কমাতে সাহায্য করে।

পুদিনা পাতা: ৫-৭ টি - পুদিনা পাচনে সাহায্য করে এবং স্ফূর্তিদায়ক।

জিরা: ১ চা চামচ - জিরা চর্বি কমাতে এবং পাচন উন্নত করতে খুব ভালো।

জল: ১ লিটার

410

প্রস্তুত প্রণালী:

একটি পাত্রে ১ লিটার জল ঢেলে আদা এবং জিরা দিন। এটি ভালোভাবে ফুটতে দিন। জল অর্ধেক (প্রায় ৫০০ মিলি) হওয়া পর্যন্ত ফুটতে দিন। তারপর চুলা বন্ধ করে পুদিনা পাতা দিয়ে ঢেকে রাখুন। গরম জলতে পুদিনা পাতা সরাসরি ফোটাবেন না, কারণ এতে এর গন্ধ এবং কিছু পুষ্টি নষ্ট হয়। পাত্র ঢেকে রাখলে পুদিনার গন্ধ এবং প্রয়োজনীয় তেল থেকে যায়। মিশ্রণটি সম্পূর্ণ ঠান্ডা হলে ছেঁকে নেবেন এবং লেবুর রস মিশিয়ে নেবেন।

510

এই পানীয়টি সকালে খালি পেটে এক গ্লাস (প্রায় ২০০ মিলি) পান করতে পারেন। এটি আপনার পাচনতন্ত্রকে উদ্দীপিত করে এবং দিনের শুরুতে পাচনক্রিয়া শুরু করতে সাহায্য করে। বাকি পানীয়টি সারাদিন কিছুটা করে (খাবারের মাঝখানে) পান করতে পারেন। এটি সাধারণ ঘরের তাপমাত্রায় বা হালকা ঠান্ডা করে পান করতে পারেন। ভালো ফলাফলের জন্য এটি এক মাস থেকে তিন মাস পর্যন্ত নিয়মিত পান করতে পারেন। এর উপকারিতা আপনার ওজন এবং স্বাস্থ্যের পরিবর্তনে লক্ষ্য করতে পারবেন।

610

সুষম খাদ্য: ওজন কমানোর জন্য শুধু পানীয় পর্যাপ্ত নয়। সুষম খাদ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনার খাদ্যতালিকায় শাকসবজি, ফল, খাদ্যশস্য (গম, রাগি, বাদামী চাল, ওটস), কম চর্বিযুক্ত প্রোটিন (ডাল, টফু, পনির, কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত পণ্য, চিকেন ব্রেস্ট, মাছ) রাখুন।

পর্যাপ্ত প্রোটিন: প্রতি বার খাবারে পর্যাপ্ত প্রোটিন গ্রহণ করলে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং মাংসপেশী বৃদ্ধি পায়। মাংসপেশী বেশি ক্যালোরি বার্ন করে। ডিম, ডাল, চিকেন, মাছ, বাদাম, বিচি আপনার খাদ্যতালিকায় রাখুন।

710

চিনি কমান: চিনি এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার (ময়দার পণ্য, কোল্ড ড্রিংকস, বেকারি পণ্য, চিপস) খাওয়া বন্ধ করুন। এগুলিতে ক্যালোরি বেশি এবং পুষ্টি কম থাকে। এগুলি রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি করে, ইনসুলিন উৎপাদন বাড়ায় এবং চর্বি জমা হতে সাহায্য করে। এর বদলে প্রাকৃতিক মিষ্টি যেমন ফল, মধু (কম পরিমাণে) গ্রহণ করতে পারেন।

পর্যাপ্ত জল পান করুন: সারাদিন পর্যাপ্ত জল পান করলে পাচনতন্ত্রের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে থাকে। খাবারের আগে এক গ্লাস জল পান করলে কম খাবার খাওয়া হয়। গড়ে প্রতিদিন ২.৫ থেকে ৩ লিটার জল পান করা ভালো।

810

ব্যায়াম: সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট মাঝারি ব্যায়াম বা ৭৫ মিনিট কঠোর ব্যায়াম করা প্রয়োজন। ব্যায়াম ক্যালোরি বার্ন করে, মানসিক চাপ কমায় এবং মেজাজ উন্নত করে।

পর্যাপ্ত ঘুম: পর্যাপ্ত ঘুম (৭-৮ ঘণ্টা) আপনার হরমোনগুলিকে সুষম রাখে এবং ওজন বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে। ঘুমের অভাব ক্ষুধা বৃদ্ধি করে এবং অনিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলে।

910

মানসিক চাপ কমান: অতিরিক্ত মানসিক চাপ কর্টিসল নামক হরমোনের উৎপাদন বাড়ায়, যা পেটে চর্বি জমাতে সাহায্য করে। ধ্যান, যোগব্যায়াম, শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম, পছন্দের কাজ করা ইত্যাদি চেষ্টা করতে পারেন।

তাড়াহুড়ো করে খাওয়া বন্ধ করুন: আস্তে আস্তে এবং ভালোভাবে চিবিয়ে খাবার খেলে পাচনে সাহায্য হয় এবং আপনার মস্তিষ্ক বুঝতে পারে আপনি কতটা খাচ্ছেন। এটি অতিরিক্ত খাওয়া প্রতিরোধ করে।

1010

এই পানীয় এবং পরামর্শগুলি ওজন কমানোর জন্য সহায়ক হতে পারে, কিন্তু এটি সম্পূর্ণ সমাধান নয়। স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার অংশ হিসেবে এটি ব্যবহার করুন। প্রতিটি মানুষের শরীর আলাদা, তাই ফলাফল ভিন্ন হতে পারে। আপনার যদি কোন দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য সমস্যা (ডায়াবেটিস, থাইরয়েড সমস্যা, হৃদরোগ) থাকে বা আপনি যদি গর্ভবতী বা স্তন্যদানকারী মা হন, তাহলে এই পানীয় ব্যবহার করার আগে চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের সাথে পরামর্শ করুন। তাদের পরামর্শ আপনার স্বাস্থ্যের জন্য উপযুক্ত পদ্ধতি নির্বাচন করতে সাহায্য করবে। সর্বসময় মনে রাখবেন স্বাস্থ্যকর এবং সুষম জীবনযাত্রা দীর্ঘস্থায়ী ওজন কমানোর জন্য কার্যকর।

Read more Photos on
click me!

Recommended Stories