
সজনেডাঁটা বাঙালি হেঁশেলের পরিচিত এক সবজি, যার পাতা, ডাঁটা, ফুল সবই খায় বাঙালি। তবে বর্তমান রূপচর্চার জগতের অন্যতম প্রাকৃতিক সম্পদ হয়ে উঠেছে সজনে। বাজারে "মোরিঙ্গা পাউডার", "মোরিঙ্গা অয়েল", এমনকি "মোরিঙ্গা শট" বিক্রি হচ্ছে স্বাস্থ্যসচেতন মানুষের চাহিদা মেটাতে। তবে অনেকেই হয়তো জানেন না সজনের বীজ দিয়ে ঘরোয়া উপায়ে চুলের যত্নে তৈরি করা যায় কার্যকর হেয়ার মাস্ক, যা বাজার চলতি প্রসাধনের থেকে অনেক বেশি কার্যকরী।
এই সজনের বীজে রয়েছে জ়িঙ্ক, আয়রন, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন এ, ই, সি। মাথার ত্বকের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে এই সমস্ত ভিটামিন এবং খনিজ অত্যন্ত উপযোগী। চুলের গোড়া মজবুত করতে এবং বাড়-বৃদ্ধিতে জ়িঙ্কের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডও ত্বক এবং চুলের ঔজ্জ্বল্য বজায় রাখতে কার্যকর।
সজনের বীজের গুঁড়ো কীভাবে বানাবেন?
চুলের জন্য এই মাস্ক বানাতে আপনি বাজারচলতি সজনে বীজের গুঁড়ো তথা মরিঙ্গা পাউডার কিনতে পারেন। তবে চাইলে বাড়িতেও তা বানিয়ে নেওয়া যায়। এর জন্য সজনেডাঁটা ভালো করে রোদে শুকিয়ে তার ভিতরে থেকে বীজ বের করে নিন। শুকিয়ে যাওয়া বীজের বাইরের আস্তরণ তুলে ফেলতে হবে, হালকা হাতে আলতো করে চাপ দিয়ে ঘষলেই উঠে যাবে। ভেতরের সাদা, গোলাকার বীজ গুলো এবার মিক্সিতে মিহি করে গুঁড়ো করে নিতে হবে। বেশি দিন সংগ্রহ করতে চাইলে বায়ুরোধী কৌটোয় করে রেখে দিতে পারেন।
কীভাবে তৈরি করবেন এই মাস্ক?
উপকরণ
* ২ টেবিল চামচ সজনেবীজের গুঁড়ো
* ১ টেবিল চামচ অ্যালো ভেরা জেল বা টক দই
* কয়েক ফোঁটা মধু
* ২-৩ ফোঁটা রোজ়মেরি অয়েল (আবশ্যক নয়)
প্রস্তুত প্রণালী
সমস্ত উপকরণ খুব ভাল করে মিশিয়ে নিন। চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী মিশ্রণের পরিমাণ ঠিক করতে হবে। মাস্ক ব্যবহারের আগে চুলে শ্যাম্পু করে নিন। মিশ্রণটি লাগিয়ে ৩০-৩৫ মিনিট রেখে মৃদু শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। মাসে ২-৩ বার এটি মাখতে পারেন চুলে।
শুধু বাহ্যিক নয়, দরকার অভ্যন্তরীণ পুষ্টিও
সুন্দর চুল শুধু যত্ন নিলেই মেলে না, শরীরে পুষ্টির অভাব হলে তার প্রভাব পড়ে চোখে-মুখে, চুলেও। সে কারণেই পাতে রাখুন সজনেডাঁটা। ঝোল, শুক্তো, ঝাল করে ডাঁটা খাওয়ার চল আছে। চাইলে সজনেডাঁটার বীজের গুঁড়ো স্মুদি বা স্যুপে মিশিয়েও খেতে পারেন, ভেতর থেকে চুলের উপকার হবে।