কেন ধর্ষণ করেন ধর্ষকরা? এই অপরাধের আগে মনে কী চলে অপরাধীদের, জানলে আঁতকে উঠবেন
ধর্ষণ-এর প্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ভারতে প্রতি মিনিটে ৩ জন নারীর নির্যাতন হওয়ার খবর পাওয়া যায়। কিন্তু কেন এত ধর্ষণ? ধর্ষণ করার আগে ও পরে কী মানসিকতা থাকে অপরাধির?
২০১২ সালে নির্ভয়াকাণ্ডের পরে ২০১৫ সালে এই ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করে বিবিসি। এই তথ্যচিত্রে অপরাধী মুকেশ সিংহের একটি সাক্ষাৎকার উঠে এসেছে । যেখানে অভিযুক্তের বিন্দুমাত্র আত্মগ্লানি ধরা পড়েনি।
উল্টে এই অপরাধী জানান, রেপের মতো ঘটনার জন্য ছেলেদের থেকে অনেক বেশি দায়ী মহিলারাই। একজন ভদ্র ভালো মেয়ে কখনই রাত ৯টার সময় রাস্তায় ঘুরে বেড়ায় না।"
অর্থাৎ ধর্ষণকে এরা অপরাধ বলে মনেই করেন না। উল্টে এই কাজ তাঁর কাছে অনেকটা অধিকারের মতোই। মুকেশ বলেছে, " মেয়েটির ধর্ষণের সময় আমাদের বাধা দেওয়া উচিত ছিল না। ও বাধা না দিলে আমরা এত অত্যাচার করতাম না। কেবল ছেলেটিকেই আঘাত করতাম। মেয়েটির প্রতিবাদ না করে চুপ করে মেনে নেওয়া উচিত ছিল।"
এ ছাড়াও ধর্ষকসাক্ষাৎকারে বলে , " সেই সাক্ষাৎকারেই মুকেশ বলে, " ফাঁসির সাজা মহিলাদের জন্য অবস্থা আরও ভয়াবহ করে তুলবে। এরপর থেকে কেউ আর শুধু তাঁদের মতো, ধর্ষণ করেই মহিলাদের ছেড়ে দেবে না। বরং ধর্ষণের পরে তাঁদের প্রাণও নিয়ে নেবে।”
টিভি নাইনের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই প্রসঙ্গে মনরোগ চিকিৎসক ডাঃ অংশুমান দাশ জানিয়েছেন, "অনেক সময় কেউ যদি এমন কোনও কাজে লিপ্ত থাকেন যা তাঁর যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধি করে (যেমন নেশাগ্রস্থ হয়ে যৌন উত্তেজক ছবি দেখা বা আলোচনা করা ইত্যাদি) সেই মূহুর্তে এমন কোনও সুযোগ যদি সে পায় তাহলে অনেক সময় নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এই ধরনের অপরাধ করতে পারে।”
তবে কি যৌন মিলনই ধর্ষণের পিছনে প্রধান বিষয়?
চিকিৎসক জানিয়েছেন, "পুরুষতান্ত্রিক সমাজে বড় হওয়ার দরুণ মহিলাদের নিয়ন্ত্রণ করার যে প্রবৃত্তি তা থেকেও এই ঘটনা ঘটান। নির্ভয়া কাণ্ডের পরেও মুকেশের মধ্যে কোনও আত্মগ্লানি না থাকাই তাঁর প্রমাণ। অংশুমানবাবু আরও বলেন, “শুধু এই বিষয়গুলোই নয়। দুঃখের বিষয় হল, ধর্ষণ করার সময় অনেকেই বোঝেন না যে এর ফলে তিনি কোনও মহিলার উপর নির্যাতন করছেন। তাঁরা ভাবেন এতে মহিলাটিকেও শারীরিক সুখ অনুভব করাচ্ছেন। অর্থাৎ এর পিছনে ‘ফ্যাটিজিম’-এর একটি বিষয় কাজ করে। অর্থাৎ যৌন মিলনের সময় শারীরিক নানা যন্ত্রণাকে উপভোগ করা, বা নিজের যৌন সঙ্গীকে আঘাত করার মধ্যে একটি আনন্দ উপভোগ করে ধর্ষকরা।"