শনিবার ঐতিহাসিক অলিম্পিক রৌপ্য পদক জয়ের মঞ্চে নজর কাড়ল মীরাবাই চানু-র কানের দুলও। এই বিশেষ দুল-জোড়ার পিছনে কী কাহিনি রয়েছে, বললেন মা।
শনিবার ঐতিহাসিক অলিম্পিক রৌপ্য পদক জয়ের মঞ্চে দারুণ নজর কেড়েছে মীরাবাই চানু-র ভুবন ভোলানো হাসি। তবে, শুধু সেটাই নয়, অনেকেরই চোখে টেনেছে তার কানে ঝকঝক করা দুলটিও। সোনার তৈরি দুলজোড়া ছিল একেবারে অলিম্পিক রিং বা অলিম্পিক বলয়ের আকারে। আর এই বিশেষ দুল জোড়ার পিছনে লুকিয়ে রয়েছে একটা অন্য কাহিনি।
টিভিতে মেয়ের পদক জয় দেখতে বসে প্রথমেই ওই দুল জোড়ার দিকেই চোখ পড়েছিল তাঁর মা সাইখোম ওঙ্গবি টম্বি লেইমা-র। ২০১৬ সালের রিও অলিম্পিকের আগে এই দুলজোড়া মা-ই গড়িয়ে দিয়েছিলেন সাইখোম মীরাবাই চানুকে। তাঁর নিজের যেটুকু সোনার গয়না ছিল এবং সঞ্চিত অর্থ সবটা ব্যয় করে মেয়ের জন্য অলিম্পিক রিং-এর আকারে এই দুলজোড়া তৈরি করিয়ে ছিলেন লেইমা। মেয়েকে সৌভাগ্য এবং সাফল্য এনে দেবে দুল জোড়া এমনটাই আশা করেছিলেন তিনি।
২০১৬ সালে কাঙ্খিত সাফল্য ধরা দেয়নি। একটিও বৈধ লিফ্ট নথিবদ্ধ করতে পারেননি চানু। তবে ৫ বছর পর সেই ভূত ঘাড় থেকে নামিয়ে দিয়েছেন ২৬ বছর বয়সী এই মণিপুরি। ২০০০ সালের সিডনি অলিম্পিকে কর্ণম মালেশ্বরীর ব্রোঞ্জ জয়ের ২১ বছর পর মোট ২০২ কেজি (৮৮ কেজি + ১১৪ কেজি) কেজি ওজন নুলে ভারতকে মহিলাদের ভারোত্তলনের মঞ্চ থেকে দ্বিতীয় অলিম্পিক পদক এনে দিলেন তিনি।
আরও পড়ুন - মণিপুরের ছোট্ট এক গ্রাম থেকে উঠে আসা চানু -র জেতার লড়াইয়ের পিছনে রয়েছে কঠোর পরিশ্রম
আরও পড়ুন - 'অভিনন্দন চানু', রাজনীতি-ক্রীড়া-সিনেমা রুপোয় উচ্ছ্বসিত সব জগৎ - কে কী বললেন, দেখুন
আরও পড়ুন - রিও-র ক্ষতে প্রলেপ টোকিওতে, আবেগঘন বার্তায় মনের কথা জানালেন 'রূপোর মেয়ে' চানু
মণিপুরের রাজধানী ইম্ফল থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরের নংপোক কাকচিং গ্রাম। এই গ্রামেরি মেয়ে মীরাবাই চানু। তাঁর মা জানিয়েছেন, মে বলে গিয়েছিল সোনার নয়তো অন্ততপক্ষে একটি পদক তো সে জিতবেই। তাই পরিবার-পরিজনরা সকলেই এই পদক জয়ের জন্য অপেক্ষা করেছিলেন। শুক্রবার রাতেই নংপোক কাকচিং গ্রামে তাঁদের বাড়িতে চলে এসেছিলেন বেশ কয়েকজন আত্মীয়। এদিন সকালে আসেন আরও অনেকে। বাধ্য হয়ে ঘর থেকে টিভি বের করে বারান্দায় আনতে হয়েছিল। প্রায় ৫০ জন আত্মীয়-বন্ধুবান্ধব একসঙ্গে টোকিওয় ঘরের মেয়ের পদক জয় দেখেছেন।
এদিন ভারোত্তোলন প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার আগে ভিডিও কল করে বাবা-মায়ের আশীর্বাদ নিয়েছিলেন মীরাবাই চানু। তাঁর এক তুতো বোন জানিয়েছেন, প্রশিক্ষণের কারণে চানু বাড়ি আসার সুযোগ খুব কম পান। তাই পরিবারের সদস্যরা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করেছেন। সেই গ্রুপেই শনিবার সকালে, চানু ফোন করেছিলেন। পরিবারর সকলের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলেন এবং বাবা-মায়ের কাছ থেকে আশীর্বাদ নেন।