সংক্ষিপ্ত
সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে, দিল্লির একটি মাঠে দাঁড়িয়ে রয়েছেন দীপক, আর তাঁর হাতে রয়েছে একটি প্লাস্টিকের ব্যাগ।
বাবাকে খুন করে দেহ টুকরো টুকরো করে লোপাট করে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল মা ও ছেলে। পশ্চিমবঙ্গের বারুইপুরে এরকম ঘটনার পর আবার একই ধরনের ঘটনা প্রকাশ্যে এল দিল্লিতে। দিল্লির শ্রদ্ধা ওয়ালকর হত্যা মামলা চলাকালীনই আরও এক হাড় হিম করা দেহ লোপাটের চেষ্টা। প্রত্যেক ক্ষেত্রেই খুন করে দেওয়ার পর দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে লোপাট করে ফেলার ছক কষেছে আততায়ীরা।
নিজের সৎ বাবার দেহ কেটে ছড়িয়ে ফেলার ঘটনায় ২৮ নভেম্বর পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন দিল্লির বাসিন্দা দীপক দাস এবং তাঁর মা পুনম দাস। সৎ বাবার দেহ কোথায় লোপাট করে ফেলেছিলেন দীপক, সেই তথ্য অনুসন্ধান করতে গিয়ে দিল্লি পুলিশের হাতে আসে একটি সিসিটিভি ফুটেজ। সেই ফুটেজে ধরা পড়ে, দিল্লির একটি মাঠে দাঁড়িয়ে রয়েছেন দীপক, আর তাঁর হাতে রয়েছে একটি প্লাস্টিকের ব্যাগ। ব্যাগটি প্রথমে মাঠেই রেখেছিলেন তিনি। কিছু ক্ষণ পর ওই ব্যাগটি মাঠ থেকে তুলে নিয়ে আবার হাঁটতে শুরু করেন। সিসিটিভি ফুটেজে এই দৃশ্য দেখার পর সন্দেহ হয় পুলিশের। বিষয়টি আরও খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে শুরু করেন তদন্তকারীরা। এর পরেই জানা যায় যে, ওই মাঠের জমিতেই নিজের সৎ বাবার কাটা মাথা পুঁতে দিতে এসেছিলেন দীপক।
২০২২-এর জুন মাসে মা পুনম দাসের কথায় নিজের সৎ বাবা অঞ্জন দাসকে খুন করেন দীপক। পূর্ব দিল্লির পাণ্ডব নগরে থাকত ৩ সদস্যের ওই পরিবার। ধৃত পুনমের দাবি, তাঁর স্বামী অঞ্জন বিনা অনুমতিতে তাঁর গয়না ঘর থেকে চুরি করে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দিয়েছিলেন। সেই গয়না বিক্রির টাকা অঞ্জন পাঠিয়ে দিতেন নিজের প্রথম স্ত্রীয়ের কাছে। এই প্রথমা স্ত্রী ছিলেন বিহারের বাসিন্দা। অঞ্জনের আট জন ছেলেমেয়েকে নিয়ে তিনি সেখানে বাস করতেন। তাঁর কাছে সংসার চালানোর টাকা পাঠানোর জন্য দিল্লিতে থাকা দ্বিতীয় স্ত্রী পুনমের গয়না নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দিয়েছিলেন অঞ্জন দাস।
এই কথা জানতে পেরে গিয়েছিলেন দিল্লিবাসী পুনম। স্বামীর উপর প্রচণ্ড রেগে গিয়েছিলেন তিনি। এরপরেই ছেলে দীপকের সঙ্গে ছক কষে অঞ্জনকে খুন করে দেন তাঁরা। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অঞ্জনের পানীয়তে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দিয়েছিলেন পুনম ও দীপক। সেই পানীয় পান করার পর অঞ্জন অজ্ঞান যান, তখনই সুযোগ বুঝে তাঁর গলায় কুঠার দিয়ে কোপ মেরে দেন মা ও ছেলে। সারা রাত ধরে মৃতদেহ থেকে রক্ত বের হতে থাকে। তারপর রক্ত বের হয়ে গেলে পরদিন সকালে ছুরি এবং অন্য আরেকটি ধারালো অস্ত্র নিয়ে অঞ্জনের দেহটিকে দুজনে মিলে দশটি টুকরোয় ভাগ করেন, এরপর ওই টুকরোগুলি পলিথিনের ব্যাগে ভরে ঘরের ফ্রিজে রেখে দেন পুনম ও দীপক। বাবার দেহের টুকরোগুলি নিয়ে প্রত্যেকদিন দিল্লির বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দিয়ে আসতেন দীপক। তল্লাশি চালিয়ে দেহের ৬টি টুকরো খুঁজে পেয়েছে পুলিশ। তাঁদের বাড়ি তল্লাশি করে ধারালো অস্ত্রটির খোঁজ মিললেও ছুরিটি এখনও পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন-
শুরু হল গুজরাত নির্বাচন, মোদী-শাহের গড়ে সকাল আটটা থেকে শুরু মসনদ দখলের মহারণ
মেরামতির কাজের জেরে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাতিল একাধিক লোকাল ট্রেন, ব্যাপক ভোগান্তির আশঙ্কায় নিত্যযাত্রীরা
এক ধাক্কায় চড়চড়িয়ে বেড়ে গেল কলকাতার তাপমাত্রা, আগেভাগে এসে পড়েও কি পিছু হঠছে শীত?