পায়ে লেখা সুইসাইড নোট, স্বামীর ক্যানসারের খবর শুনে আত্মঘাতী মা ও ছেলে

কল্যাণীর বি ব্লকের বাসিন্দা বিশ্বনাথ মণ্ডল। একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন বিশ্বনাথ বাবু। বেশ কয়েক বছর আগেই অবসর নিয়েছেন তিনি। পরিবারে সদস্য বলতে স্ত্রী মঞ্জু মণ্ডল এবং ছেলে শুভদীপ মণ্ডল। স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে শুভদীপ কোনও কাজ করতেন না। পরিবারে একমাত্র রোজগেরে ছিলেন বিশ্বনাথ বাবু।
 

Ishanee Dhar | Published : Sep 14, 2022 11:55 AM IST

স্বামীর ক্যানসারের খবর শুনে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত স্ত্রীর, মায়ের সঙ্গে গলায় দিলেন ছেলেও। এমনই ঘটনা ঘটল নদিয়ার কল্যানীতে। বাড়ি ফিরে এসে সিলিং থেকে স্ত্রী ও ছেলের দেহ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান গৃহকর্তা। ছেলের পায়ে পেন দিয়ে লেখা দু'লাইনের সুইসাইড নোট। মর্মান্তিক এই ঘটনায় শোকের ছায়া গোটা এলাকায়। কিন্তু কেন এমন পদক্ষেপ নিলেন তাঁরা? ঘটনা কি নিছক আত্মহত্যা নাকি খুন? উঠছে এমনই নানা প্রশ্ন।

কল্যাণীর বি ব্লকের বাসিন্দা বিশ্বনাথ মণ্ডল। একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন বিশ্বনাথ বাবু। বেশ কয়েক বছর আগেই অবসর নিয়েছেন তিনি। পরিবারে সদস্য বলতে স্ত্রী মঞ্জু মণ্ডল এবং ছেলে শুভদীপ মণ্ডল। স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে শুভদীপ কোনও কাজ করতেন না। পরিবারে একমাত্র রোজগেরে ছিলেন বিশ্বনাথ বাবু। তাঁর পেনশনের টাকায় কোনও মতে সংসার চলত মণ্ডল পরিবারের। সম্প্রতি কোলন ক্যানসার ধরা পড়ে বছর ৭২-এর বিশ্বনাথবাবুর। তাঁর চিকিৎসায় খরচা হয়ে যায় জমানো টাকার বেশিরভাগই। পরবর্তী চিকিৎসার জন্য ভেলোরে গিয়ে ক্যানসার বিশেষজ্ঞকে দেখানোরও কথা ছিল বিশ্বনাথ বাবুর। কিন্তু তিনি মারা গেলে কীভাবে সংসার চলবে সেই চিন্তাই কুড়ে কুড়ে খাচ্ছিল মঞ্জু দেবী ও তাঁর ছেলে শুভদীপকে। এই নিয়ে একাধিকবার বিশ্বনাথবাবুকে তাঁর স্ত্রী বলেছিলেন,‘তুমি না থাকলে আমরা কী করে বাঁচব?’

বিশ্বনাথ বাবু জানিয়েছেন, আমি ওদের বুঝিয়েছিলাম, "আমার যা বয়স তাতে স্বাভাবিক ভাবে হলেও আর ৪-৫ বছর বাঁচব। না হয় ২ বছর কমই বা বাঁচব। তা নিয়ে চিন্তা করছ কেন?’ কিন্তু আমার কথায় ওরা খুব একটা আশ্বস্ত হতে পারেনি।" স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে বাবা না থাকলে কীভাবে সংসার চলবে সেই বিষয় অনেকবারই প্রতিবেশিদের সঙ্গেও কথা বলেছিলেন শুভদীপ। 

আরও পড়ুন - গলার নলি কেটে জঙ্গলে ফেলে দেওয়া হল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ছাত্রকে, নৃশংস হত্যাকাণ্ডে শিহরিত বীরভূমের চৌপাহাড়ি 

মঙ্গলবার জোর করে বিশ্বনাথবাবুকে ব্যাঙ্কে পাঠান তাঁর স্ত্রী। ফিরে এসে দেখেন সিলিং থেকে ঝুলছে স্ত্রী ও ছেলের দেহ। প্রতিবেশীদের সহায়তায় তাঁদের উদ্ধার করে  কল্যাণী জওহরলাল নেহরু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকেরা দু’জনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন। 

আরও পড়ুন - বিমানবন্দরে বাধার মুখে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্যালিকা, ব্যাংকক যাওয়া আটকে দিল ইডি

নিহত মঞ্জু মণ্ডলের বয়স ছিল ৬২ বছর এবং শুভদীপ মণ্ডলের বয়স ছিল ৩৭ বছর। আপাতত অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। দেহ দুটিকে ইতিমধ্যে ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর আগে শুভদীপ তাঁর পায়ে পেন দিয়ে লিখে গিয়েছেন, ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।’

আরও পড়ুন - ফাইবারগ্লাসের প্রতিমা শিল্পীদের মুখে চওড়া হাসি, কোভিড পরিস্থিতি কাটিয়ে এবছরের দুর্গাপুজোয় প্রচুর বরাত

Share this article
click me!