সংক্ষিপ্ত
বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের ঘটনা। এক ব্যক্তির প্রেমে পড়েছিলেন বাংলাদেশি যুবতী রিমা বেগম। আর সেই ব্যক্তির সঙ্গেই নতুন করে সংসার শুরু করার চেষ্টা করছিলেন তিনি।
সব মা চান তাঁর সন্তান (Children) যেন দুধে-ভাতে থাকে। নিজের জীবন বাজি রেখেও মায়েরা সন্তানকে (mother protects the child) সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করেন। সন্তানের ভালোর জন্য অনেক সময়তেই মায়েরা শালন করে থাকেন। তবে সেই রাগ কিন্তু খুব বেশিক্ষণের জন্য থাকে না। কিছুক্ষণের মধ্যেই তা গলে একেবারে জল হয়ে যায়। আর এভাবেই সবকিছু মিলে মিশে বড় তোলেন নিজের সন্তানকে। কিন্তু, এমন অনেক মহিলা রয়েছেন যাঁদের কাছে নিজের খুশিটাই সবথেকে বড়। আর তার জন্য সন্তানকে শেষ করে দিতেও তাঁদের হাত কাঁপে না। আসলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেকের মধ্যেই বদলে গিয়েছে মাতৃত্বের এই সজ্ঞা। সম্প্রতি বাংলাদেশেই (Bangladesh) ঘটেছে এমনই একটি ঘটনা।
বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের ঘটনা (Ashuganj, Brahmanbaria, Bangladesh)। এক ব্যক্তির প্রেমে পড়েছিলেন বাংলাদেশি যুবতী রিমা বেগম (Rima Begum)। আর সেই ব্যক্তির সঙ্গেই নতুন করে সংসার শুরু করার চেষ্টা করছিলেন তিনি। কিন্তু, তাঁর নতুন সম্পর্কের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় দুই ছেলে। আর সেই কারণেই তাদের এই পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তবে শুধুমাত্র সিদ্ধান্ত নিয়েই তিনি থেমে থাকেননি। পথ থেকে সরিয়েও দিয়েছেন দুই ছেলেকে। আদালতে নিজের এই কাজের কথা স্বীকারও করেছেন রিমা।
আরও পড়ুন- সারমেয়র সঙ্গে যৌন সংসর্গ স্থাপন, মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দী করে শ্রীঘরে ব্যক্তি
আদালতের কাছে রিমা জানিয়েছেন, নতুন করে জীবন শুরু করার জন্য মিষ্টির সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তিনি খাইয়ে দেন দুই পুত্র সন্তানকে। যদিও কোনওভাবে এই ঘটনার সঙ্গে যাতে তিনি নিজে জড়িয়ে না পড়েন তার জন্য সবার সামনে নাটক করতে থাকেন রিমা। আত্মীয় থেকে শুরু করে প্রতিবেশী সবাইকে জানিয়েছিলেন খেলতে খেলতে একটি বিশেষ সিরাপ না বুঝে খেয়ে ফেলেছিল দুই ছেলে। তার জেরেই তাদের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল দুপুরেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের বিচারক বেগম আফরিনের কাছে এই জবানবন্দি দেন রিমা।
আরও পড়ুন- এবার ঘুম ভাঙবে এক কাপ 'জেলেনস্কি'-তে, বাজারে এল অসমের অ্যারোম্যাটিক টি
রিমা জবানবন্দি দেওয়ার পরই একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন পুলিশ সুপার মহম্মদ আনিসুর রহমান। তখন তিনি রিমার এই কীর্তির কথা সবাইকে জানান। তিনি জানিয়েছেন, ১২ বছর আগে দৃষ্টিহীন ইসমাইল হোসেনের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। ইসমাইল সিলেটের গোলাপগঞ্জের একটি ইটভাটায় কাজ করতেন। কিন্তু, পরিবারে আর্থিক অনটন লেগেই ছিল। কিছুতেই টাকার মুখ যেন দেখতেই পারছিলেন না রিমা। এরপর বাড়তি আয়ের জন্য একটি চাতালকলে কাজ শুরু করেছিলেন। আর সেখানে কাজ করতে গিয়েই তাঁর পরিচয় হয় সর্দার সফিউল্লাহর সঙ্গে। তারপরই তাঁদে মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ক্রমে বাড়ে ঘনিষ্ঠতা।
আরও পড়ুন- আরও বিধ্বংসী রাশিয়া গুঁড়িয়ে দিল ইউক্রেনের স্কুল, যুদ্ধে সামিল চেচেনাও
এরপর হঠাৎ করেই নিজের সংসারের কথা চিন্তা না করেই সফিউল্লাহকে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন রিমা। কিন্তু বিয়ের পথে রিমার দুই ছেলেই বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। যার ফলে দুই সন্তানকে প্রাণে মেরে ফেলার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন তিনি। আর তা করেও দেখান। পুলিশ জানিয়েছে, সফিউল্লাহ বাড়িতে এসে রিমাকে বিষ মেশানো মিষ্টিগুলি দিয়েছিল। সেই মিষ্টি খাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে ওই দুই শিশুর মুখ দিয়ে লালা বের হতে শুরু করে। তারপর শুরু হয় বমি। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তা দেখছিলেন রিমা। এদিকে যাতে কেউ তাঁকে না সন্দেহ করে তার জন্য দুই সন্তানকে হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু, সেখানে নিয়ে যাওয়ার সময়তেই তাদের মৃত্যু হয়।