সংক্ষিপ্ত
ফের বাংলাদেশে (Bangladesh) দুর্বৃত্তদের নিশানায় সংখ্যালঘু হিন্দুদের (Hindus) মন্দির। বৃহস্পতিবার রাতে, ঢাকার (Dhaka) ইসকন রাধাকান্ত মন্দিরে (ISKCON Radhakanta Temple Vandalized) হামলা চালালো অন্তত ২০০-র বেশি জনতা।
ফের বাংলাদেশে (Bangladesh) দুর্বৃত্তদের নিশানায় সংখ্যালঘু হিন্দুদের মন্দির। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাতে, ঢাকার (Dhaka) ইসকন রাধাকান্ত মন্দিরে (ISKCON Radhakanta Temple Vandalized) হামলা চালায় অন্তত ২০০-র বেশি জনতা। মন্দিরে ভাংচুর চালানোর পাশাপাশি রাধাকান্ত মন্দির প্রাঙ্গণে ভক্তদের উপরও হামলা হয় বলে খবর। সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অন্তত ৩ জনের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গিয়েছে। বাংলাদেশী সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই হামলায় মন্দিরে থাকা বহু হিন্দু (Hindus) দেবদেবীর মূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ভয়েস অফ বাংলাদেশি হিন্দু (Voice of Bangladeshi Hindu), ইসকন রাধাকান্ত মন্দিরে এই নক্কারজনক হামলার বেশ কিছু ছবি টুইটারে শেয়ার করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে মন্দিরটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হিন্দু আমেরিকান ফাউন্ডেশনের (Hindu American Foundation) অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, হাজি শফিউল্লাহ নামে এক ব্যক্তির নেতৃত্বে এই দুর্বৃত্ত হামলা চালানো হয়েছে। ১৭ মার্চ রাত ৮টার সময় ঢাকার ওয়ারী থানার (Wari Police Station) কাছে হামলাকারীরা জড়ো হয়েছিল। তারপর, সেখান থেকে ইসকন মন্দিরে গিয়ে হামলা চালানো হয়। তারা আরও জানিয়েছে, মন্দিরে ভাংচুর করার পাশাপাশি, প্রতিমা, অর্থ এবং মন্দিরের বেশ কিছু মূল্যবান জিনিসপত্র লুঠ করে নিয়ে গিয়েছে হামলাকারীরা।
আরও পড়ুন - Illegal Bangladeshi Immigrant: হিন্দুর বেশে ভারতে ১৫ বছর, অবশেষে ধরা পড়ল রনি বেগম
আরও পড়ুন - Hindus In Bangladesh: গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ কমেছে ৭৫ লক্ষ হিন্দু-সমীক্ষা
ইসকন কলকাতার ভাইস-প্রেসিডেন্ট রাধারমণ দাস (ISKCON Kolkata Vice President Radharaman Das) জানিয়েছেন, গৌর পূর্ণিমা উদযাপনের প্রস্তুতির সময়ই এই হামলার ঘটনা ঘটে। তবে তাঁর দাবি, পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুর্বৃত্তদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে তিনি বলেছেন, 'এই ধরনের হামলা খুবই উদ্বেগের বিষয়। আমরা বাংলাদেশ সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে হবে'।
শুধু তাই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই হিন্দু সংখ্যালঘুদের উপর হামলার বিষয়ে রাষ্ট্রসংঘের (United Nations) নীরবতারও নিন্দা করেছেন রাধারমণ দাস। তিনি বলেছেন, কয়েকদিন আগেই রাষ্ট্রসংঘে ১৫ মার্চ দিনটিকে ইসলাম-বিদ্বেষের (Islamophobia Day) বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য আন্তর্জাতিক দিবস হিসাবে ঘোষণা করার প্রস্তাব পাস করা হয়েছে। অথচ, তারা বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানে (Pakistan) হাজার হাজার অসহায় হিন্দু সংখ্যালঘুদের দুঃখ-কষ্টের বিষয়ে নীরব। বহু হিন্দু সংখ্যালঘুদের প্রাণ হারিয়েছে, সম্পত্তি হারিয়েছে, ধর্ষিত হয়েছে, কিন্তু আফসোসের বিষয় রাষ্ট্রসংঘ সবসময়ই ইসলাম বিদ্বেষ নিয়ে চিন্তিত।
গত অক্টোবরেই, দুর্গাপূজা (Durga Puja 2021) চলাকালীন বাংলাদেশে পূজা মণ্ডপ ও মন্দিরে ধারাবাহিক হামলার ঘটনা ঘটেছিল। ১৩ অক্টোবর, কুমিল্লাতে (Kamila ) একটি দূর্গাপূজার মণ্ডপে পবিত্র কোরানের (The Quran) অবমাননা করা হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে ভাংচুর করা হয়েছিল। যা থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়িয়েছিল। ১৬ অক্টোবর নোয়াখালী (Noakhali) শহরের একটি ইসকন মন্দিরে ভাংচুর করা হয় এবং ১ হিন্দু ভক্তকে হত্যা করা হয়েছিল। তবে, প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ সরকার দৃঢ় পদক্ষেপ নিয়েছিল। তারপর, বেশ কয়েক মাস পরিস্থিতি শান্ত থাকার পর, ফের একটি হিন্দু মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটল।