সংক্ষিপ্ত
- জুন মালিয়া মানেই গ্ল্যামারের বিচ্ছুরণ
- এই গ্ল্যামারেই একদিন মাত হয়েছিল বাঙালি
- যার ফলে জুন নিয়ে এখনও সমান কৌতুহল সকলের
- বয়স হয়েছে, কিন্তু জুনের গ্ল্যামাারের ঝলকানি এখনও একইরকম
জুন মালিয়া এখন খবরের শিরোনামে। তাঁর বিয়ের কথা জানাজানি হওয়ার পর থেকেই জুন-কে নিয়ে চর্চা আরও বেড়েছে। বাংলা চলচ্চিত্রের ভক্তরাও আরও বেশি করে জুন সম্পর্কে তথ্য পেতে কৌতুহলী। জুন মালিয়া গত দুদশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলা সিনেমার এক শ্রেণির দর্শকের কাছে হাইক্লাস সেলিব্রিটির পর্যায়েই পড়েন। কারণ, বাংলা সিনেমায় জুনের আবির্ভাবটা একটা সতেজতা এনে দিয়েছিল। বাংলা ছবি তখন নতুন মুখের অভাবে ধুঁকছিল। নায়িকাদের চিরাচরিত মুখ বলতে সে সময় সেই ইন্দ্রাণী হালদার নতুবা দেবশ্রী অথবা বম্বে থেকে ভাড়া করে নিয়ে আসা অভেনত্রীদের দল। ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তরাও সে সময় খুব একটা পুরনো হননি ইন্ডাস্ট্রিতে। বলতে গেলে হাতে গোনা কয়েক জন। সেখানে জুনের ছিপছিপে চেহারা, টানা চোখ, নির্মেদ শরীরি বিভঙ্গ এবং সর্বোপরি একটা আর্বানাইজড লুক অনেকেরই পছন্দ হয়েছিল। তাঁর সঙ্গে ছিল তাঁর বেশকিছু সাহসী সিনে অভিনয়। সবমিলিয়ে রাতারাতি বাংলা সিনেমার হাইক্লাস সেলিব্রিটি-তে পরিণত হয়েছিলেন জুন। এহেন জুনের দ্বিতীয় বিয়ের খবর স্বাভাবিকভাবেই এখন মিডিয়া ফোকাসে রয়েছে।
আরও পড়ুন- টলিউডে ধামাকা খবর, সৌরভকে বিয়ে করছেন জুন মালিয়া
জুনের বিয়ের খবরের সঙ্গে সঙ্গে এই নেটদুনিয়ার তাঁকে নিয়ে আরও একটি খবর ট্রেন্ড করে বেড়াচ্ছে। আর সেটা হল জুন মালিয়ার চড় খাবার গল্প। জুনরা সে সময় দার্জিলিং-এ থাকতেন। কনভেন্টে পড়তেন জুন। কৈশোরে সদ্য পা রেখেছেন। তাঁর এক বয়ফ্রেন্ড রোজই বাড়িতে ফোন করত। জুন তাঁর সঙ্গে কথাও বলতেন। এমনই একদিন বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলেন জুন। বিষয়টি হাতেনাতে ধরে ফেলেছিলেন জুনের মা পারুল দুবে। তিনি তৎক্ষণাত ফোনটি ছিনিয়ে নিয়ে ডায়ালে নামিয়ে দিয়েছিলেন এবং মেয়েকে সপাটে থাপ্পড় মেরেছিলেন। এই বয়সে পড়াশোনা ছেড়ে কেন ছেলেদের সঙ্গে গল্প তা নিয়েও জুনকে অনেক কথা শুনতে হয়েছিল জুনকে।
আরও পড়ুন- প্রকাশ্যে চুমু খেয়ে ভাইরাল হলেন শ্রেয়া ঘোষাল, দেখুন ভিডিও
সে সময় এবং বর্তমান সময় দুটোই অনেক আলাদা বলেই মনে করেন জুন। ২০১৫ সালে এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেবার সময় মা-এর হাতে চড় খাবার এই গল্পটি করেছিলেন তিনি। সে দিন তিনি পেরেন্টহুড নিয়ে কথা বলছিলেন। আর সেই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে নিজের জীবনের এই অভিজ্ঞতা তিনি শেয়ার করেছিলেন। তাঁর মতে, সে সময় এবং এখনকার সময় অনেকটাই আলাদা। জুনের মতে তাঁদের ছোটবেলায় কোনও মধ্যবিত্ত বাঙালি ঘরের মেয়ে ফোনে বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে গল্প করবে এটা স্বাভাবিকভাবে বাবা-মা-রা মেনে নিতেন না। ফলে, ফোনে বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে কথা বলতে গেলে চড় এবং মার খাবার পরিস্থিতি তৈরি হত। সময় এখন বদলেছে। জুনের মতে, তিনি নিজেই দুই বাচ্চার মা। তাঁর ছেলে-মেয়েরা তাঁদের কৈশোর পার করে ফেলেছে। ছেলে-মেয়ের বয়স যত এগিয়েছে ততই তাঁদের সঙ্গে বন্ধুর মতো হয়ে গিয়েছেন তিনি। জুনের মতে মাা হিসাবে সারাক্ষণই একটা টেনশন থাকে যে ছেলে-মেয়েরা যেন অসৎ সঙ্গে না পড়ে যায় বা কোনও ভুল সিদ্ধান্ত না নিয়ে ফেলে। তবে, এর জন্য তিনি জোর করে তাঁর মতামত কোনওদিনই ছেলে-মেয়ের উপরে চাপিয়ে দেননি। বরং বন্ধুর মতো তাঁদের সঙ্গে মিশে খোঁজ রাখেন তাঁদের নিত্যনতুন বয়ফ্রেন্ড-গার্লফ্রেন্ডের। এমনকী, নতুন করে কার প্রতি ছেলে-মেয়ে-রা প্রেমে পড়ল সে খবরও রাখেন জুন এবং বন্ধুর মতোই তাঁর মতামত দেন। কখনও ছেলে-মেয়েকা মা-এর শাসন-এ রেখে বলেন না এটা করবে না বা ওটা করবে না। ছেলে-মেয়ের কোথাও ভুল করলে সেটা বুঝিয়ে বলেন। আর এভাবেই তিনি তাঁর পেরেন্টহুড উপভোগ করেন বলেও জানিয়েছিলেন জুন।
আরও পড়ুন- শরীরী বিহঙ্গে নেচে ভাইরাল টলিউডের এই বঙ্গতনয়া, দেখুন ভিডিও
১ ডিসেম্বর বিয়ে করছেন জুন। বিয়ের পর নতুন সংসার। নতুন জীবন। দীর্ঘদিনের বয়ফ্রেন্ড সৌরভ চট্টোপাধ্যায় পাকাপাকিভাবে তাঁর জীবনসঙ্গী হচ্ছেন। বিয়ের পর জুন নিজের পুরনো ঠিকানায় থাকবেন না নতুন ঠিকানায় সংসার পাতবেন, তা নিয়ে এই মুহূর্তে কোনও তথ্য নেই। তবে, জুন যেভাবে একজন মা-এর ভূমিকা ও কর্তব্য পালন করে আসছেন তাতে তাঁকে স্যালুট ঠুকতেই হয়। আগামীদিনগুলো জুনের এমন সুন্দর করে কাটুক, সে প্রার্থনা আমরাও করি।