সংক্ষিপ্ত
একদম অচেনা পুরুষকে বিয়ে। তাঁরই প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছেন ‘ঐশানি’ ওরফে শুভস্মিতা। প্রেমে পড়েছেন রাহুল ‘শঙ্কর’রও। তার পর....?
বাতাসে গুনগুন....। রান্নাবান্না গোল্লায়! এনটি ১ স্টুডিয়োয় ‘হরগৌরী পাইস হোটেল’-এ শরতের শেষ বিকেলে এসেছে ফাগুন। ভালমন্দ খাবারের গন্ধের বদলে সেখানে রোমান্সের বুদ্বুদ। রাহুল মজুমদার-শুভস্মিতা মুখোপাধ্যায় সেই প্রেমে বুঁদ! সেটে কে তাঁদের দেখছে না দেখছে থোড়াই কেয়ার! তাঁরা সবার সামনেই নিজেদের জগৎ গড়ে নিয়েছেন। ‘ব্যস, ইতনা সা খোয়াব হ্যায়’ ছবির চূড়ান্ত রোম্যান্টিক গান ‘ইয়ে হাওয়ায়ে জুলফো মে তেরি’... বাজছে। তারই তালে তালে হঠাৎ সবার সামনে এক ঝটকায় ‘পর্দার স্ত্রী’কে বুকে টেনে নিলেন রাহুল! তার পরেই দু’পাশে হাত ছড়িয়ে যেন এক সন্ধের ‘শাহরুখ খান’!
ধারাবাহিকের নায়কের এমন কাণ্ডে লজ্জায় লাল শুভস্মিতাও। কিন্তু তাঁরও যে ভালই লাগছে... গোপন করেন কী করে? পরিচালক থেকে ইউনিট বয়... সাক্ষী তাঁদের প্রেমের। সে দিনের পোশাকেও পুরোপুরি বসন্তের গন্ধ। রাহুল ঝলমলে হলুদ পাঞ্জাবিতে। নায়িকা সুন্দরী জরির বুটিদার লাল রেশমি শাড়িতে। এ ভাবেই সপ্তাহান্তের প্রথম দিন, শনিবাসরীয় সন্ধেয় শ্যুট নয়, প্রেম করেই কাটালেন তাঁরা! সেই ছবি পাঠক-দর্শকদের জন্য ক্যামেরাবন্দি করতে ভোলেনি এশিয়ানেট নিউজ বাংলা।
বাড়িতে অভিনেত্রী স্ত্রী প্রীতি বিশ্বাস। সেটে নবাগত সুন্দরী নায়িকা। রাহুল কি বেপথু? প্রশ্ন রেখেছিল এশিয়ানেট বাংলা। হো হো হাসির সঙ্গে অভিনেতার দাবি, ‘‘সব করছি চিত্রনাট্যের খাতিরে। সবে বিয়ে পর্ব মিটেছে। দুই অচেনা যুগল বিয়ের বাঁধনে বাঁধা পড়ার পর প্রেমে পড়েছে। বুঝতেই পারছেন, যত দিন যাবে রান্নাবান্নার পাশাপাশি সেই প্রেমও গাঢ় হবে। শনিবার সেটাই শুরু হল।’’ তার পরেই রসিকতা, কল্পনায় নিজেকে ‘শাহরুখ খান’ ভাবতে কোন নায়ক চান না? রাহুলের আবার বাড়তি পাওনা, তাঁর নামেই বলিউড তারকা সারা বিশ্বে পরিচিত। রোম্যান্টিক গান কানে যেতে তাই আপনা থেকেই ওই বিশেষ ভঙ্গি চলে এসেছে।
শুভস্মিতা কি তাঁর ‘রানি’ নাকি ‘কাজল’? শুনেই প্রায় জিভ কাটার দশা! নবাগতা তড়িঘড়ি বলে উঠলেন, ‘‘ও বাবা! আমি ও সব কিচ্ছু নই। ধারাবাহিকের ‘ঐশানি’ হয়েই খুশি। যিশু-নীলঞ্জনা সেনগুপ্তের প্রযোজনায় কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। প্রথমে খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। এখন অনেকটাই সামলে নিয়েছি। বাড়ির সবাই ভীষণ গর্বিত।’’ অভিনয়, অভিনেত্রীর জীবন এর মধ্যেই চুটিয়ে উপভোগ করতে শুরু করেছেন। পুজোর ছুটিতে নাকি বাড়িতে মন বসেনি নায়িকার। রাহুলকে খালি ফোনে বিরক্ত করেছেন, কবে ছুটি ফুরোবে? আবার কবে শ্যুট শুরু হবে?
বাস্তবে কিন্তু রাহুল-শুভস্মিতা ‘টম আর জেরি’! সারা ক্ষণ ‘তু তু ম্যায় ম্যায়’ লেগেই আছে। রাহুল ৬ বছর ধরে অভিনয়ে। এই সুযোগে স্টুডিয়োয় তিনি নাকি নায়িকার প্রায় অলিখিত অভিভাবক! হাতে ধরে যেমন অভিনয় শেখাচ্ছেন। পিছনে লাগতেও ভুলছেন না। যেমন? শুভস্মিতার মিষ্টি অনুযোগ, ‘‘নিজেই সব জায়গায় আগে মুখ খোলে। আমায় কিছু বলতেই দেয় না!’’ বলে আড়চোখে তাকাতেই রাহুলের ঠোঁটে আঙুল। শুধু রাহুল নয়, ধারাবাহিকের সবার সঙ্গে এ রকমই জমাটি ‘দোস্তি’ শুভস্মিতার।
‘হরগৌরী পাইস হোটেল’ দুর্দান্ত রান্নার সুবাদে ইতিমধ্যেই জনপ্রিয়। সেখানকার পদগুলো চেখে দেখেছেন তাঁরা? রাহুল-শুভস্মিতা এই প্রথম এককাট্টা, ‘‘শ্যুটের অবসর মানেই মুখ চলছে আমাদের। হয় রূপটানের ঘরে। নয়তো সেটে। আমরা যেন স্টুডিয়োয় পিকনিক করতে আসি! পুজোর আগেই সবাই মিলে এক প্রস্থ খানাপিনা হয়েছে। দীপাবলির ছুটি পেলে আবারও ছোটখাটো এ রকমই কিছু হবে!’’ সঙ্গে শুভস্মিতার ভাইফোঁটাও আছে। বাড়িতে দু’বছরের পুঁচকে ভাই। ‘‘ওকে ফোঁটা দিতেই হবে’’...হাসতে হাসতে জানালেন অভিনেত্রী।
আড্ডা শেষ। ফের কাজের মেজাজে নতুন জুটি। এনটি ১-এ সন্ধে আরও গাঢ়। সেটে ফের বেজে উঠেছে, ‘ইয়ে হাওয়ায়ে জুলফো মে তেরি...!’ দমকা হাওয়া বারেবারে দুষ্টুমি করছে শুভস্মিতা থুড়ি ‘ঐশানি’র সঙ্গে। চুলে বিলি কেটে দিয়ে যাচ্ছে। উড়ন্ত চুল ঝাপটা মারছে ‘শঙ্কর’ রাহুলের মুখেচোখে। আবারও এক অজানা নেশায় যেন ধীরে ধীরে ডুবে যাচ্ছে সে। শঙ্কর! নাকি ‘রাহুল-শাহরুখ খান’?