ব্যাংকে গ্রাহক পরিষেবার মান বাড়াতে চালু হলো নতুন পদ্ধতি, QR কোড স্ক্যান করে ব্যাংক কর্মী সম্পর্কে আপনার সন্তুষ্ট বা অসন্তুষ্ট অভিজ্ঞতা লিখে জানাতে পারবেন ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে।

"চার নম্বর কাউন্টারে যান", "এই ফর্মটা ফিলাপ করে নিয়ে আসুন", "ম্যানেজারের কাছে যান", "এখন লাঞ্চ ব্রেক", "তিনটে বেজে গেছে কাল আসুন " - ভীষণ চেনা চেনা লাগছে না? প্রায় অনেক ব্যাংকই আছে যেখানে দরকারি কোন কাজে গেলে সময় লেগে যায় অনেকক্ষণ। একটার পর একটা ডেস্ক-এ ঘোরা, বিশাল বড় লাইন ছাপিয়ে নিজের সুযোগ আসতে আসতে, লাঞ্চ ব্রেক অথবা দিনের শেষ। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সাইবার ডাউন বা মেশিন খারাপ বলে ফিরেও আসতে হয় গ্রাহকদের। বার বার গিয়ে পরিষেবা চাইলে অসন্তোষ প্রকাশ করেন অনেক ব্যাংককর্মী, আবার শত ব্যস্ততার মাঝেও কোনও কর্মীর শান্ত ও ধৈর্যশীল পরিষেবা দেয়।

এবার থেকে গ্রাহকরা ব্যাঙ্ককর্মীর কাজে সন্তুষ্ট না অসন্তুষ্ট, তা সরাসরি জানাতে পারবেন ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে। QR কোড স্ক্যান করেই আপনার মতামত জানিয়ে দিতে পারবেন আর তার ভিত্তিতেই বদলাবে ব্যাংক পরিষেবার পরিকাঠামো। সূত্রের খবর, এই প্রক্রিয়া প্রাথমিকভাবে দুটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে চালু হলেও পরবর্তীকালে সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকেই এই নিয়ম চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।

কীভাবে হবে মূল্যায়ন?

প্রতিটি কর্মীর ডেস্কে থাকবে একটি করে QR কোড। সেই কোড স্ক্যান করে গ্রাহকরা সংশ্লিষ্ট কর্মীর পরিষেবা সম্পর্কে রেটিং ও মতামত জানাতে পারবেন। এই তথ্যের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হবে।

* ১ থেকে ৫ -এর মধ্যে রেটিং দিতে পারবেন গ্রাহকেরা। * চাইলে লিখিত মন্তব্যও জানাটে পারবেন গ্রাহকরা। * নির্দিষ্ট সময় অন্তর তথ্য বিশ্লেষণ করে কর্মীদের কর্মদক্ষতা পর্যালোচনা করা হবে।

উচ্চ রেটিং পাওয়া কর্মীরা পুরস্কৃত হতে পারেন। আবার নিম্ন রেটিং বা কোনো কর্মীর ওপর বার বার অভিযোগ উঠলে, তথ্য বিশ্লেষণ করে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

তবে এই নতুন ব্যবস্থাকে ঘিরে উদ্বেগ প্রকাশ করছে অনেকেই। ব্যাংককর্মী সংগঠনগুলির মতে, পরিকাঠামোগত বাস্তব সমস্যা গুলিকে অগ্রাহ্য করে, এবার রেটিং দেওয়া নিয়েই ব্যস্ত থাকবে সকলে। অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রাজেন নাগর বলেন, ‘‘ব্যাঙ্ক শাখাগুলিতে পর্যাপ্ত কর্মী নেই। পরিষেবার পরিধি ও গ্রাহকসংখ্যা বাড়ছে। অনেক জায়গায় পরিকাঠামোগত সমস্যাও রয়েছে খারাপ প্রিন্টার, ইন্টারনেটের সমস্যা ইত্যাদি। এমন পরিস্থিতিতে কর্মীরা চাইলেও দ্রুত ও মানসম্পন্ন পরিষেবা দিতে পারেন না।’’

তিনি আরও আশঙ্কা প্রকাশ করেন, ‘‘গ্রাহকরা হয়তো পরিকাঠামোগত অসুবিধার জন্যই কর্মীদের কম রেটিং দেবেন। ফলে এই মূল্যায়ন কতটা বাস্তবসম্মত বা ন্যায়সঙ্গত হবে, তা নিয়ে বড় প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।’’