সংক্ষিপ্ত
করোনাভাইরাস সংক্রমণের জেরে করুণ অবস্থা ভারতের
রোগ যদি সামলানোও যায় অর্থনৈতিক ধাক্কা সামলানো যাবে কী করে
চিন্তায় রাতের ঘুম ছুটেছে অনেকের
এরমধ্যে এক চমকপ্রদ পথ বাতলালো এক স্কুল ছাত্র
করোনাভাইরাস সংক্রমণের জেরে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতোই করুণ অবস্থা ভারতে। অবস্থা সামাল দিতে দেশে ২১ দিনের লকডাউন জারি করা হয়েছে। সকলেই বুঝতে পারছেন, ভারতের মতো গরীব দেশের অর্থনীতির পক্ষে এই ২১ দিনের ধাক্কা কত বড়। লকডাউন বললেই যে লকডাউন করা যায় না, তা গত কয়েকদিনের পায়ে হেঁটে মাইলের পর মাইল পারি দেওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের দেখেই সকলের মালুম হচ্ছে। সকলেরই চিন্তা যদি রোগকে সামাল দেওয়াও যায়, অর্থনীতিতে করোনার ধাক্কা ভারত সামলাবে কীকরে?
কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থ মন্ত্রক থেকে করোনাভাইরাসের অর্থনৈতিক ঘা নিরাময়ে ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকার মলম দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, পরিযায়ী শ্রমিকদের অবস্থা দেখে বোঝা যাচ্ছে সেটা মোটেই যথেষ্ট নয়। অনেকেই, সোশ্যাল মিডিয়ায় সরকারের কাছে আরও একটু সাহায্য বাড়ানোর দাবি তুলছেন। কিন্তু, মাথায় রাখতে হবে, এই প্রাদুর্ভাবের আগই তলানিতে এসে ঠেকেছিল ভারতের অর্থনীতি। তাই সরকারের সহায়তা করারও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। বড়দের যখন এই কথা ভাবতেই লোম খাড়া হয়ে যাচ্ছে, সেই সময় এক কিশোরের মাথা থেকেই বের হল এক দুর্দান্ত পথ। নেট দুনিয়ায় অনেকেই এখন সেই ভাবনার ভূয়সী প্রশংসা করছেন।
লকডাউন নিয়ম ভেঙে রাস্তায় মানুষ, করাচিতে নিয়মভঙ্গকারীদের রাস্তায় নীলডাউন করাল পুলিশ
নতুন রূপে ফিরছে জৈব-সন্ত্রাস, অজি 'করোনা জেহাদি'কে নিয়ে তোলপাড় নেটদুনিয়া
লকডাউনেও ভগবানের আপন দেশে চলছে বিচিত্র খেলা, দেখুন তারই কয়েকটি নমুনা
ইরান যেন এশিয়ার ইটালি, করোনা রোখার বিশ্বাসে মেথানল পান করে মৃত্যুর কোলে ৩০০
ওই কিশোরের নাম অভিনব শর্মা, বয়স মাত্র ১৫, দশম শ্রেণিতে পড়ে। বয়সে কাঁচা হলেও ভাবনার গভীরতায় অনেক পাকাকেও হার মানিয়েছে অভিনব। অন্যদের মতো সে কোনও টুইট করেননি বা কর্তৃপক্ষকে দরিদ্রদের সহায়তা করার জন্য আহ্বান করে দীর্ঘ ফেসবুক পোস্ট লেখেনি। অভিনব সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে একটি চিঠি লিখে দাবি করেছে, প্রধানমন্ত্রীর করোনাভাইরাস ত্রাণ তহবিলে ধর্মীয় ট্রাস্টগুলিকে তাদের মোট সম্পত্তির ৮০ শতাংশ অর্থ অনুদান দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হোক।
অভিনব প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিতে লিখেছে, বর্তমানে যে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা চলছে, তা অবশ্যই একটি আর্থিক জরুরী অবস্থার দিকে এগিয়ে যাবে। যা কোটি কোটি শ্রমিককে অনাহারের দিকে ঠেলে দেবে। অতএব, প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার অনুরোধ, তাদের ধর্ম নির্বিশেষে সমস্ত ধর্মীয় ট্রাস্টের জন্য তাদের দেবোত্তর সম্পদের ৮০ শতাংশ, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে অনুদান দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হোক। দেরাদুনের এই ছাত্রের বিশ্বাস, যদি দেশের সবকটি ধর্মীয় ট্রাস্ট আর্থিক সহায়তা দেয়, তাহলে আর ভারতকে আন্তর্জাতিক মহলের ঋণের জন্য হাত পাততে হবে না।
অভিনব শর্মা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীকে টিভিতে হাত জোর করে দেশের মানুষকে ঘরে থাকার অনুরোধ করতে দেখেই সে ভয় পেয়েছিল। না সংক্রমণের ভয় নয়, তার মনে হয়েছিল, করোনাভাইরাস ভারতে যদি চতুর্থ পর্যায়ে পৌঁছে যায়, তাহলে সব ব্যবসা-বানিজ্য চিরতরে নষ্ট হবে। আর এর সরাসরি প্রভাব পড়বে দরিদ্র মমানুষের উপর। না খেতে পেয়ে মরতে হবে তাদের।
যদি অতদূর নাও যাওয়া যায়, তাহলেও লকডাউন সরকারি তহবিলের ঘাটতি ঘটাবে। তাতে নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তের উপর খারাপ প্রভাব পড়বে। বহু সংখ্যক লোককে অনাহারে মরতে হবে।
এরপরই তার মাথায় আসে ভারতে ধর্মীয় ট্রাস্টগুলিতে প্রচুর অর্থ জমা রয়েছে। বস্তুত, দেবোত্তর সম্পদের জন্য সরকারকে করও দিতে হয় না। তাই অভিনব অনুভব করে গির্জা, মন্দির, গুরুদ্বার বা মসজিদ ট্রাস্টগুলি যদি প্রত্যেকে অর্থ অনুদান করে, তবে তা দরিদ্রদের জন্য অত্যন্ত সহায়ক হবে।