সংক্ষিপ্ত

  • চার হাত এক হওয়ার অপেক্ষায় পাত্র-পাত্রী
  • বিয়ের আর খুব বেশি দূর নেই
  • জমানো টাকা দিয়ে প্রশাসনকে সাহায্য 
  • করোনা ত্রাণে নজির হবু দম্পতির

চার হাত এক হওয়ার অপেক্ষায় পাত্র ও পাত্রী। বিয়ের আর খুব বেশি দেরি নেই। কিন্তু করোনা আতঙ্কে অনুষ্ঠান তো করা যাবে না। অনুষ্ঠানের জন্য জমানো টাকা লকডাউনে আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য খরচ করার সিদ্ধান্ত নিলেন হবু দম্পতি। মানবিকতার নজির পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে।

আরও পড়ুন: করোনা আতঙ্কে 'ব্রাত্য' জামাই, শ্বশুরবাড়িতে ঠাঁই মিলল না যুবকের

পাত্র অরিজিৎ পাল, আর পাত্রী সঙ্গীতা ঘোষ। দু'জনেরই বাড়ি বর্ধমানের জামালপুরের আবুজহাটি এলাকা। ১৭ এপ্রিল বিয়ে করছেন অরিজিৎ ও সঙ্গীতা। তাঁদের বিয়ের দিন আগে থেকে চূড়ান্ত ফেলেছিলেন পরিবারের লোকেরা। মাস দুয়েক আগে থেকেই অনুষ্ঠান তোড়জোড় চলছিল দুই বাড়িতে। কার্ড ছাপানোই শুধু নয়, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও পাড়া-প্রতিবেশীদের নিমন্ত্রণ করাও হয়ে গিয়েছে। প্যান্ডেল, ক্যাটেরিং, এমনকী পাড়ার মুদির দোকানেও আগাম টাকা দিয়ে রেখেছিলেন পরিবারের লোকেরা। কিন্তু শেষবেলায় যে এমন বিপর্যয় ঘটবে, তা কে জানত! করোনা সতর্কতায় লকডাউন চলছে দেশের সর্বত্রই। জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। বিয়ে কী তবে পিছিয়ে যাবে? সঙ্গীতা ও অরিজিতের পরিবারের লোকেরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, নির্দিষ্ট দিনে অনুষ্ঠান ছাড়াই বিয়ে হবে তাঁদের। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরে যদি সম্ভব হয়, তখন না হয় ফের অনুষ্ঠান করা হবে।

আরও পড়ুন: লকডাউনেও বসবে ফুলের বাজার, বুধবার থেকে ছাড়পত্র বিড়ি শ্রমিকদের

আরও পড়ুন: বহিরাগতদের ভিড়ে করোনা আতঙ্ক, গ্রামে মদের ঠেক ভাঙলেন মহিলারা

জানা গিয়েছে, বিয়ের সব আয়োজন যে পরিবারের লোকেরাই করেছিলেন, তা কিন্তু নয়। বরং শুভকাজের জন্য টাকা জমানো ছিল অরিজিৎ ও সঙ্গীতারও। তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, জমানো টাকা অতিথি অ্যাপায়ণ-সহ বিয়ের অনুষ্ঠানে খরচ করবেন। সেটা আর হল না! জমানোর টাকার পুরোটাই করোনা ত্রাণে দান করে দিলেন হবু দম্পতি। লকডাউনের জেরে পূর্ব বর্ধমানে জেলায় আটকে পড়েছেন চারশোর বেশি পরিয়াযী শ্রমিকরা। জামালপুরে ২ জাতীয় সড়ক লাগোয়া গোপালপুর মুক্তকেশী বিদ্যালয়ে তাঁদের দু'বেলায় খাওয়ার বন্দোবস্ত করেছে জামালপুর থানা ও ব্লক প্রশাসন। এই কাজে প্রশাসনকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন অরিজিৎ ও সঙ্গীতা। আনাজ-সহ বিভিন্ন সামগ্রী কিনে দিচ্ছেন তাঁরা।