গত ডিসেম্বরে চিনের উহান শহর থেকেই করোনাভাইরাসের প্রথম খবর এসেছিলচিন সরকারিভাবে জানিয়েছিল এই মহামারীতে ৩,২৯৯ জনের মৃত্যু হয়েছেকিন্তু, সত্যিই কি তাইউহানের ভস্মাধারের ভাইরাল ছবি ধন্দে ফেলে দিচ্ছে

নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ এখন প্রায় বিশ্বের সবকটি দেশে ছড়িয়ে গিয়েছে। তবে, গত ডিসেম্বরে চিনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকেই প্রথম এই ভাইরাস সংক্রমণের খবর পাওয়া গিয়েছিল। তারপর থেকে ক্রমেই লম্বা হয়েছে সেখানকার মৃত্যুমিছিল। চিন সরকারিভাবে যে হিসাব দিয়েছে তাতে এই মহামারীতে গোটা দেশে ৩,২৯৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর উহান শহরে মৃতের সংখ্যা ২,৫০০ জন। কিন্তু, সত্যিই তাই, নাকি মৃতের সংখ্যাটা আরও অনেক বেশি, নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতেই চিন এই সংখ্যাটা কমিয়ে দেখাচ্ছে?

এই প্রশ্নটা উঠতে শুরু করেছে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া উহানের কিছু ফিউনারেল হাউস অর্থাৎ, শেষকৃত্যের স্থানের ছবি ঘিরে। এতদিন উহান ছিল সম্পূর্ণ লকডাউনের আওতায়। গত সপ্তাহ থেকে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে হুবেই প্রদেশের এই শহর। পার্ক, সিনেমা হল, রেস্তোরার মতো জনসমাগমের জায়গাগুলি খুলতে শুরু করেছে। চালু হয়েছে গণপরিবহন ব্যবস্থাও। এই প্রাদুর্ভাবে নিহতদের পরিবারের সদস্যদের হাতে তাদের প্রিয়জনের দেহাবশেষ-ও তুলে দিয়েছে চিন সরকার। আর তাতেই এই সরকারি কারচুপি ধরা পড়ে গিয়েছে বলে দাবি করেছে বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম এবং বহু নেটিজেন। কারোর কারোর দাবি আরও বেশি।

আরও পড়ুন - ফের আন্তর্জাতিক মঞ্চে মুখ পুড়ল চিনের, ৬ লক্ষ মাস্ক ফেরত পাঠাল নেদারল্যান্ড

আরও পড়ুন - 'মমতা-মোদি উদাহরণ তৈরি করেছেন', করোনা মোকাবিলায় কেন্দ্র ও রাজ্যের প্রশংসা রাজ্যপালের

আরও পড়ুন - করোনার প্রকোপ ঠেকাতে হাত বাড়ালেন তারকারা, অর্থদান করলেন এবার বিরুষ্কা

এক প্রথম সারির চিনা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, গত সপ্তাহের বুধ ও বৃহস্পতি - এই দুইদিনে অন্তত ৫০০০ দেহাবশেষ সম্বলিত আর্ন বা ভস্মাধার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে শুধু উহান শহরেরই একটি একটি অন্তেষ্টিগৃহে। আবার ওই সংবাদপত্রেই প্রকাশিত আরও একটি খবরে দেখা গিয়েছে, ওই ফিউনারেল হাউসেই তারপরদিন আরও ৩,৫০০ ভস্মাধার এসেছে। কাজেই উহান শহর ও চিনে মোট কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃতের প্রকৃত সংখ্যাটা ঠিক কত, তাই নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।

Scroll to load tweet…

অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য ট্রাকে করে করে ফিউনারেল হাউসগুলিতে ভস্মাধার নিয়ে যাওয়াক ছবিগুলি চিনের সোশ্যাল মিডিয়া সাইট এবং স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ফিউনারেল হাউসগুলি সংবাদমাধ্যমকে হয় জানিয়েছে তাদের কাছে মৃতের মোট সংখ্যার নির্দিষ্ট কোনও তথ্য নেই, অথবা বলেছে, সেই তথ্য কাউকে জানানোর অনুমতি নেই। এতে করে উহান ও চিনে করোনার প্রাদুর্ভাবে মৃতের প্রকৃত সংখ্যাটা চিন সরকার গোপন করছে বলে মনে করছেন অনেকে।

তবে এই বিষয়ে চিন যে একা তা নয়। যে কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয় কিংবা অন্য কোনও ধরণের বিপর্যয়ে হতাহতের সংখ্যাটা দেশ-রাজ্য নির্বিশেষে সব শাসকই করে থাকে। তা সে গুজরাত দাঙ্গাই হোক, কিংবা ওয়ার্ল্ড সেন্টারের পতন।