সংক্ষিপ্ত
- বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিল বাংলাদেশ
- তবে তারা যা খেলেছে তাই নিয়ে গর্ব করতে পারেন সাকিবরা
- প্রথম ম্যাচ থেকে শেষ পর্যন্ত হাল না ছাড়া ক্রিকেট খেলল
- ভারতের বিরুদ্ধেও দারুণ লড়ে হারতে হল ২৮ রানে
পঞ্চম দল হিসেবে চলতি বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিল বাংলাদেশ। এবারেও গ্রুপ পর্ব থেকেই তাদের ফিরতে হলেও একেবারে উচ্চ শির-এই ফিরবে তারা। বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ থেকে এদিনের ভারত ম্যাচেও বাংলাদেশ বুঝিয়ে দিল, তাদের ক্রিকেট মানে শুধু লড়াই আর লড়াই।
এদিন যেমন ভারত যখন সাড়ে তিনশ' তুলে ফেলবে মনে হচ্ছে তখনই তাঁদের ম্যাচে ফিরিয়েছিলেন মস্তাফিজুর ও সাকিব। আবার রান তাড়া করতে নেমে ৩৪ ওভারে ১৭৯/৬ হয়ে যাওয়ার পরও ২৮৬ রান অবধি ইনিংস টেনে নিয়ে গেল তারা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য বলা যেতে পারে বুমরার অসাধারণ বোলিং-এর সামনেই ২৮ রানে পরাস্ত হতে হল টাইগারদের।
আরও পড়ুন - ক্যামেরা থেকে বিরাট-রোহিত, আকর্ষণের কেন্দ্রে এই বৃদ্ধা! দেখুন ভিডিও
এদিন রান তাড়া করতে নেমে বেশ ধীরে শুরু করেছিলেন তামিম (২২) ও সৌম্য। দশম ওভারে আক্রমণে এসেই তামিমকে ফিরিয়ে দিয়ে প্রথম ধাক্কাটা দিয়েছিলেন শামি। ক্রিজে আসেন বাংলাদেশের এই বিশ্বকাপের নায়ক সাকিব আল হাসান। এদিনও একেবারে দুই হাতে রান সংগ্রহ করছিলেন বলা যায়। তবে অপর প্রান্তে একের পর এক উইকেটের পতন ঘটছিল। মুশফিকুর (২৪), লিটন (২২), মোসাদ্দেক (৩) - এদিন বাংলাদেশী মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানরা কেউ বড় রান পাননি।
তবে স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন সাকিব। কিন্তু ৬৬ রানের মাথায় হার্দিক পাণ্ডিয়ার একটি স্লোয়ারে ঠকে যান তিনি। অফ ড্রাইভ করতে গিয়েছিলেন বল তাঁর ব্য়াটের উপরের দিকে লেগে সোজা চলে দীনেশ কার্তিকের হাতে। তিনি ফিরতেই ম্যাচ শেষ ধরে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, এখানেই বাংলাদেশ দল তাদের চরিত্র বুঝিয়ে দিল। সাব্বির রহমান (৩৬) ও সইফুদ্দিন (৫১) সপ্তম উইকেটে ৬৫ রানের জুটি গড়ে বিরাটদের কপালে ঘাম এনে দিয়েছিলেন। বিশেষ করে সইফুদ্দিন ৯টি চার মেরে মাত্র ৩৮ বলে অর্ধশতরানের ইনিংস খেলেন।
আরও পড়ুন - জুটিতে লুটি - বিশ্বকাপে রেকর্ড গড়লেন রোহিত রাহুল
আরও পড়ুন - ইতিহাস গড়লেন রোহিত! সাঙ্গাকে ছুঁয়ে ব্যাটন তুলে নিলেন দাদার হাত থেকে
তবে বিরাটের হাতে একজন 'মুশকিল আসান' বুমরা আছেন। চাপ বাড়তেই বুমরা এলেন এবং প্রথমে একটি দুরন্ত স্লোয়ারে সাব্বিরকে ফেরালেন। আর তারপর দুটি মাপা ইয়র্কারে রুবেল হোসেন ও মুস্তাফিজের উইকেট ভেঙে দিয়ে নটে গাছ মুড়িয়ে দিলেন।
এতদিন দারুণ বল করেও সেইমতো উইকেট পাচ্ছিলেন না। এদিন বনমরার সংগ্রহ ৪ উইকেট। ভুবি, শামি, চাহালও একটি করে উইকেট নিলেন। আর তিন জোরে বোলারের পাশাপাশি চতুর্থ সিমার হিসেবে খেলা হার্দিক নিলেন ৩ উইকেট।
তার আগে প্রথমে ব্য়াট করতে নেমে একটি দারুণ জুটি গড়েছিলেন লোকেশ রাহুল (৭৭) ও রোহিত শর্মা (১০৪)। চলতি বিশ্বকাপের চতুর্থ শতরানটি রোহিত করেন একেবারে হিটম্য়ান স্টাইলে, ৭টি চার ও ৫টি ছয় মেরে। তারা ২৯.২ ওভারে ভারতকে ১৮০/১ স্কোরে পৌঁছে দিলেও তার ফায়দা নিতে পারেনি ভারত। যেখানে হেসে খেলে ৩৪০-৩৫০ রান ওঠার কথা ছিল, সেখানে ভারত শেষ করে ৩১৪/৯ স্কোরে।
ওপেনাররা ফেরার পর এক ওভারেই খেলা ঘুরিয়ে দেন মুস্তাফিজুর রহমান। ৩৯তম ওভারে পর পর তিনি বিরাট কোহলি (২৬) ও হার্দিক পাণ্ডিয়া (০)-কে ফিরিয়ে দেন। শেষে দীনেশ কার্তিক, ভুবনেশ্বর কুমারকে জুড়েও কোনও লাভ হয়নি। তাঁদের অবদান যথাক্রমে ৮ ও ২। আর অপর প্রান্তে অসহায় ধোনি করলেন ৩৩ বলে ৩৫। মারলেন ৪টি চার। শেষ ১০ ওভারে মাত্র ৬৩ রান ওঠে ৫ উইকেটের বিনিময়ে।
আরও পড়ুন - শেষ দশ ওভারে রোহিত-রাহুলের ভাল শুরুর জলাঞ্জলি! আশা জাগিয়েও বড় রান হল না ভারতের
তবে, আলাদা করে বলতেই হবে ঋষভ পন্থের কথা। চার নম্বরে নেমে দুর্দান্ত খেলছিলেন তিনি। ভারতীয় মিডল অর্ডারে টপ থ্রি-এর পারফরম্যান্সের সঙ্গে মানানসই খেলা দেখা গেল একমাত্র তাঁর ব্যাট থেকেই। সাকিবের বলে আচমকা আউট হয়ে গিয়ে এদিন তিনি মাত্র ২ রানের জন্য় বিশ্বকাপে তাঁর প্রথম অর্ধশথরানটা ফেলে এলেন।
বাংলাদেশী বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল মুস্তাফিজ রহমান। ৫৯ রান দিয়ে ৫ উইকেট নিলেন তিনি। সাকিব ১ উইকেট নিলেন মাত্র ৪১ রান দিয়ে। ১টি উইকেট পেলেন রুবেল হোসেনও।