সংক্ষিপ্ত
ক্যারেবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে থেকে ক্রিকেটে শুরু হল স্মার্ট বলের ব্যবহার। যার ফলে আরও আধুনিক হল ২২ গজের লড়াই। খুব দ্রুত সময়ে অনেক তথ্য তুলে ধরা যাবে দর্শকদের জন্য।
বিগত কয়েক দশকে একাধিক পরিবর্তন দেখেছে ক্রিকেট। আধুনিক ক্রিকেটে যত দিন এগোচ্ছে ততই বাড়ছে প্রযুক্তির ব্যবহার। হক আই, স্নিকো মিটার, হট স্পট থেকে শুরু নানা প্রযুক্তি এসেছে ২২ গজের লড়াই। এবার চলতি ক্যারেবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে ক্রিকেট বলে আসল আমূল পরিবর্তন। ব্যাবহার করা হচ্ছে স্মার্ট বল। এই বলের মধ্যে থাকা চিপের মাধ্যমে মিলবে নানা তথ্য, যা এতদিন অজানা থাকত সকলের কাছে। চলুন জানা যাক কি এই স্মার্ট বল ও তার বিশেষত্ব।
স্মার্ট বলের আচরণ-
বর্তমানে লাল, সাদা ও গোলাপী এই তিনটি বলকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ক্ষেত্রে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই স্মার্ট বলের আচরণ একেবারে সাধারণ বলের মত। খেলার সময় আলাদা করে কোনও বোঝার উপর থাকবে না স্মার্ট বল ও প্রচলিত বলের মধ্যে।
স্মার্ট বলের কার্যকারিতা-
এই বলের মাধ্যমে স্পিড, দূরত্ব, শক্তি এবং বল ছাড়ার সময় কতটা স্পিন হচ্ছে বা বাউন্স হয়ে তার গতিবিধি কেমন কী হচ্ছে বা ব্যাটসম্যান, কিপারের কাছে বল পৌঁছানোর সময়ই বা কতটা এর পরিস্থিতির পরিবর্তন হচ্ছে, এমন একাধিক তথ্য পাওয়া যাবে। বর্তমানে যে বল ব্যবহার করা হয় ক্রিকেটে তা কার্যত বোলারদের হাত থেকে বল ছাড়ার সময় গতি রেকর্ড করে। কিন্তু বল পিচে পড়ার পর অর্থাৎ আফটার বাউন্স স্পিড নির্ণয়ের ক্ষেত্রে এবার বড় ভূমিকা নেবে এই স্মার্ট বল।
কীভাবে ডেটা ট্রান্সফার হয়-
বোলার বল করার সময় অপারেটরকে অ্যাপে একটি বোতাম টিপতে হবে যা রেকর্ডিং শুরু করার জন্য একটি আদেশ পাঠায়। একাধিক উন্নত মুভমেন্ট সেন্সর তথ্য সংগ্রহ করে গেটওয়েতে ব্লুটুথের মাধ্যমে পাঠায় এবং সেখান থেকে এটি ফিজিক্স এবং এআই এর মাধ্যমে ডেটা সংগ্রহ, স্টোরেজ এবং গণনার জন্য ক্লাউডে পাঠানো হয়। ধারাভাষ্যকার ও সমর্থকরা সঙ্গে সঙ্গেই এইসব তথ্য পেয়ে যাবেন। স্মার্ট বল থেকে পাওয়া তথ্য কোন স্মার্ট ওয়াচ বা ফোন অ্যাপেও পাঠানো যাবে। এই নতুন প্রযুক্তি দর্শকদের ম্যাচ দেখার অভিজ্ঞতায় যে বেশ খানিকটা পরিবর্তন আনবে, তা নিয়ে সন্দেহ নেই।
এই পুরো বিষয়টি জন্য কত সময় লাগবে-
বিষয়টি যথেষ্ট বড় ও সময় সাপেক্ষ বলে মনে হতে পারে সকলের। কিন্তু জানলে অবাকহবেন মাত্র পাঁচ সেকেন্ডের মধ্যেই প্রি বাউন্স এবং আফটার বাউন্স স্পিড সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য নির্দিষ্ট ল্যাপটপে পাঠিয়ে দেবে এই বল। সেখান থেকে যা দর্শকদের কাছে তুলে ধরবেন ধারাভাষ্যকাররা।
বলের গঠন-
আধুনিকতম প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ এই বল স্পোর্ট কর নামক সংস্থার সঙ্গে যৌথ প্রয়াসে তৈরি করেছে ক্রীড়া সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক সংস্থা কোকাবুরা। এই বলটির মাঝে একটি মাইক্রোচিপ রয়েছে যার মাধ্যমে একাধিক তথ্য আরও সঠিকভাবে মিলবে। কিন্তু প্রচলিত কোকাবুরা বলের ওজন, গঠনের সঙ্গে এই স্মার্ট বলের কোন তফাৎ নেই।
বলের ব্লু টুথ কতটা দূরত্ব পর্যন্ত কাজ করে-
ইন্টারনেট এবং ফোন ব্যবহার করার সময়, এর কভারেজ প্রায় ৪০ মিটার। সম্প্রচার এবং স্টেডিয়াম অ্যাপ্লিকেশনের জন্য, একটি খুব সংবেদনশীল অ্যান্টেনা (গেটওয়ে বলা হয়) সহ কাস্টম বিল্ট কম্পিউটার রয়েছে যা ১৫০ থেকে ২০০ মিটারের মধ্যে পরিসরের অনুমতি দেয়।
আরও পড়ুনঃমরুদেশে আইপিএলে খেলবেন না ৬ তারকা ক্রিকেটার, হতাশ ক্রিকেট প্রেমিরা
ব্যাটারি কতক্ষণ কাজ করে-
বর্তমানে স্মার্ট বলের ভিতরে নন রিচার্জেবল ব্যাটারি লাগানো হয়েছে। ভবিষ্যতে রিচার্জেবল ব্যাটারি আনারও পরিকল্পনা চলছে। বর্তমানে যে ব্যাটারিটি ব্যবহার করা হচ্ছে যা খেলার সময় থেকে ৩০ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করে।
বলটি কতটা টেকসই-
বলটির ভিতরে চিপ বসানো থাকায় ব্যাটসম্যান যদি জোরে মারে তাতে চিপটির কোনও ক্ষতি হতে পারে কিনা সেই প্রশ্ন ছিল অনেকেরই। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে পরীক্ষা করার সময় ঘণ্টার ৩০০ কিমি বেগে বলটিকে আঘাত করার পরও কোনও কিছু হয়নি। এমনকি বলটির আকৃতিরও কোনও পরবর্তন হয়নি।