সংক্ষিপ্ত

ভারতের টেস্ট অধিনায়কের পদ ছেড়ে দিয়েছেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। তবে আচমকা নয়, আগেই জানিয়েছিলেন কোট রাহুল দ্রাবিড়, বিসিসিআই (BCCI) সচিব জয় শাহ (Jay Shah) এবং দলের সতীর্থদের। 
 

শনিবার ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেট দলের অধিনায়কের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। তাঁর এই সিদ্ধান্ত ক্রিকেট মহলে প্রায় প্রত্যেককেই বিস্মিত করেছে। তবে বাস্তব ঘটনা হল, টেস্ট অধিনায়কত্ব ত্যাগ করার জন্য কোহলি অনেক আগে থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। শুক্রবার কেপ টাউন (Cape Town) টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার (South Africa) বিরুদ্ধে ৭ উইকেটে পরাজয়ের পরই ড্রেসিংরুমে সতীর্থদের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন কোহলি, এমনটাই জানা গিয়েছে। প্রথমে ভারতের প্রধান কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের (Rahul Dravid) সঙ্গে টেস্ট অধিনায়কত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্তের বিষয়ে আলোচনা করেন, তারপর সতীর্থদের জানান এবং সবশেষে বিসিসিআই (BCCI) সচিব জয় শাহ-কে (Jay Shah) ফোন করে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন কোহলি। 

আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ড্রেসিংরুমে সতীর্থদের অধিনায়কত্ব ছাড়ার কথা জানিয়ে বিরাট কোহলি, অনুরোধ করেছিলেন, এই খবর বাইরে কাউকে না জানাতে। কারণ, তিনি নিজেই এই ঘোষণা করতে চান। সেই মতোই শনিবার বিকেলে, টুইট করে এই বড় সিদ্ধান্ত জানান সদ্য প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক। দক্ষিণ আফ্রিকায় সিরিজ হারের পর, সাংবাদিক বৈঠকেই কোহলির চেহারায় বিমর্ষভাব ধরা পড়েছিল বলে জানিয়েছেন উপস্থিত সাংবাদিকরা। ওই রাতেই কোচ দ্রাবিড়ের সঙ্গে এই বিষয়ে কথোপকথন হয় কোহলির। জানা গিয়েছে দ্রাবিড়ের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর, কোহলি তাঁর সিদ্ধান্ত জানান সতীর্থদের। 

কোচ ও সতীর্থদের অধিনায়কত্ব ছাড়ার বিষয়ে অবগত করার পর, বিরাট কোহলি পরের ফোনটি করেছিলেন বিসিসিআই সেক্রেটারি জয় শাহকে। ফোনেই তাঁর এই বিরাট সিদ্ধান্তের সম্পর্কে জানান। এক সূত্রের দাবি, জয় শাহ তাঁর সিদ্ধান্ত মেনে নিতে বেশি সময় নেননি। বিসিসিআই কোষাধ্যক্ষ অরুণ ধুমলকেও (Arun Dhumal) বিষয়টি জানিয়েছিলেন কোহলি। এরপর শনিবার বিকালে কোহলি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রকাশ্যে আনেন বিষয়টি। আনুষ্ঠানিকভাবে টেস্ট অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। 

পরে অরুণ ধুমল বলেছেন, বোর্ড কোহলির পদত্যাগের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছে। তিনি আরও দাবি করেছেন, কোহলি টি২০ দলের অধিনায়কত্ব ছাড়ার সময়ই বিসিসিআই-এর পক্ষ থেকে তাঁকে পরের ৫০-ওভারের ক্রিকেট বিশ্বকাপ পর্যন্ত অধিনায়ক থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু, ততক্ষণে কোহলি মন স্থির করে নিয়েছিলেন। ধুমল আরও বলেন, ভারতের ক্রিকেটের ইতিহাসে কোহলি সবচেয়ে সফল টেস্ট অধিনায়ক হিসাবে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিরাট কোহলি, ভারতের সবচেয়ে সফল টেস্ট অধিনায়ক। ৬৮ টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে তিনি ৪০ টি টেস্টে ভারতকে জয় এনে দিয়েছেন। এছাড়া তাঁর নেতৃত্বে ভারতীয় দল ১১ টি টেস্ট ড্র-ও রেখেছিল। তার উল্লেখযোগ্য কৃতিত্বের মধ্যে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ডে টেস্ট সিরিজ জয়। এমএস ধোনি (MS Dhoni) ভারতকে ৬০ টি টেস্টে নেতৃত্ব দিয়ে ২৭ টিতে জিতিয়েছিলেন। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguli) ভারতের নেতা ছিলেন ৪৯টি ম্যাচে। জিতেছিলেন ২১টিতে। অধিনায়ক হিসাবে, কোহলি ব্যাট হাতে ৫৮৬৪ রান করেছেন, গড় ৫৪.৮০। এই সময়ে তিনি ২০ টি শতরান এবং ১৮টি অর্ধশতরানও করেছেন। ২০১৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে একটি অপরাজিত ২৫৪ রানের ইনিংসও খেলেছিলেন। তবে গত দুই বছরে বিরাটের ব্যাট থেকে একটিও শতরান আসেনি।