সংক্ষিপ্ত
বিশ্বায়নের হাত ধরে কুঁদঘাটের প্রগতি সঙ্ঘ যে চমক দিয়েছে, তা সত্যিই অভিনব। মহালয়ায় এই কমিটি মন্ডপে ব্যবস্থা করেছিল চণ্ডীপাঠের। এখানে অবশ্য নতুনত্ব নেই। চমক হল চণ্ডীপাঠের ভাষায়। এখানে প্রশ্ন উঠতে পারে, ভাষা তো একটাই...সংস্কৃত। তাতে চমক কি।
মহালয়ার সকাল হয় চণ্ডীপাঠের সুরে আর স্তোত্রে। করোনা মহামারীর জেরে বিগত দুবছর প্রাণের দুর্গাপুজোর আনন্দ ও উৎসবে ঘাটতি ছিল। বাড়িবন্দি ছিলেন মানুষ। গত তিন বছর করোনার কবলে সারা বিশ্ব জর্জরিত। এই বছর কোথাও তাই একটু হলেও স্বস্তির শ্বাস পেয়েছে শহর কলকাতা। কারণ সেই অর্থে করোনার প্রকোপ যেমন নেই, তেমনই ভ্যাকসিনকে হাতিয়ার করে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মনে বল পেয়েছে মানুষ। গত তিন বছরের শুধু হারানোর যন্ত্রণা ভুলে ২০২২ সালের দুর্গোৎসব মহামিলন ক্ষেত্র হয়ে উঠুক, চাইছেন পুজো উদ্যোক্তারা।
গত দুই বছরের আনন্দ সুদে আসলে পুষিয়ে নিতে তৈরি আপামর বাঙালি। থিমে, আলোকসজ্জায় চমকে দিতে সব পুজো কমিটিই কিছু না কিছু চমক রাখে। এই বছর আবার দুর্গাপুজোয় ষোলোয়ানা প্রাপ্তি। ২০২২-এর দুর্গাপুজোয় ‘সিটি অফ জয়’ কলকাতার মুকুটে নয়া পালক ইউনেস্কোর হেরিটেজ উৎসবের সম্মান। এই সম্মান পেয়ে উদ্ভাসিত সারা বাংলা। গত বছরের ডিসেম্বরে প্যারিসে আন্তঃসরকার কমিটির ১৬ তম অধিবেশনে 'কলকাতা দুর্গা পূজা' আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত হয়। তাই এবার বিশ্বমঞ্চে দুর্গাপুজোকে তুলে ধরতে পুজোর যেন বিশ্বায়ন ঘটেছে।
তবে এই বিশ্বায়নের হাত ধরে কুঁদঘাটের প্রগতি সঙ্ঘ যে চমক দিয়েছে, তা সত্যিই অভিনব। মহালয়ায় এই কমিটি মন্ডপে ব্যবস্থা করেছিল চণ্ডীপাঠের। এখানে অবশ্য নতুনত্ব নেই। চমক হল চণ্ডীপাঠের ভাষায়। এখানে প্রশ্ন উঠতে পারে, ভাষা তো একটাই...সংস্কৃত। তাতে চমক কি। কিন্তু এই পুজো কমিটি ইংরাজি ভাষায় চণ্ডীপাঠের আয়োজন করেছিল।
২৫ সেপ্টেম্বর, মহালয়ার সময়, কুঁদঘাটের এই মণ্ডপে ইংরেজিতে চণ্ডীপাঠের একটি বিশেষ পাঠের আয়োজন করেছিল। এই পাঠের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ভাইরাল হয়েছে। চণ্ডীপাঠ হল হিন্দু ঐতিহ্যে মা দুর্গার মন্ত্র ও পূজার অন্যতম প্রাচীন পদ্ধতি।
ভিডিওটি দেখার পরে, নেটিজেনরা কার্যত দ্বিধাবিভক্ত। একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন- মনে হচ্ছে চার্চের আবহ। বিশ্বায়নের নামে এই মানুষগুলো কি তাদের "মাতৃভাষা ও মা দুর্গা"কে বদলাতে পারবে।
প্রতি বছর মহালয়ায়, অল ইন্ডিয়া রেডিও মহিষাসুর মর্দিনী সম্প্রচার করে যাতে বেতার পুরুষ বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠ শোনা যায়। রেডিও অনুষ্ঠানটি দুর্গাপূজার সূচনা করে এবং সারা বিশ্বের মানুষ এই অনুষ্ঠান শুনতে ভোর চারটেয় ঘুম থেকে উঠে পড়েন।
হিন্দু পুরাণ অনুসারে, বিশ্বাস করা হয় যে এই দিনে দানব রাজা মহিষাসুরকে পরাজিত করার জন্য ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং মহেশ্বর দেবী দুর্গার সৃষ্টি করেছিলেন। মহালয়াকে পিতৃপক্ষের শেষ দিন অর্থাৎ সর্ব পিতৃ অমাবস্যা বলে মনে করা হয়। এই কারণেই এই দিনটিকে বলা হয় দেবী দুর্গার তার পরম শক্তি নিয়ে পৃথিবীতে আগমন করছেন।
আরও পড়ুন-
রাজস্থানে গেহলট বনাম পাইলট অনুগামীদের দ্বন্দ্ব ক্রমবর্ধমান, ৩ গেহলট অনুগামী নেতাকে কংগ্রেসের নোটিস
ভারতে যখন দেবীপক্ষ, ইরানে উড়ছে নারীদের চুলের ধ্বজা, ‘বরদাস্ত করব না’, হুঁশিয়ারি প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির
কেবলমাত্র কল্লোলিনী কলকাতা নয়, দিলওয়ালো কা দিল্লিতেও দুর্গাপুজো ছাড়িয়েছে একশো বছর, রইল সেরা মণ্ডপগুলির হদিশ