সংক্ষিপ্ত

১৯২৬ সালে পুজো শুরু হয়েছিল। এটি শহরের তৃতীয়তম প্রাচীন সর্বজনীন পুজো। স্বাধীনতার অনেক আগে শুরু হয়েছিল এই পুজো। অনুশীলন সমিতির হাত ধরে এই পুজোর সূচনা।

প্রতিবছর দশমীতে মা-কে যে সকল মহিলারা বরণ করতে আসেন তাদের একটি করে লক্ষ্মীর ভান্ডার ও কিছু উপহার দেওয়া হয়। সারা বছর এই লক্ষ্মীর ভান্ডারে তারা সাধ্যমতো টাকা জমান। পরের বছর মহালয়ার দিন ক্লাবের সদস্যরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে সেই লক্ষ্মীর ভান্ডার সংগ্রহ করেন। সেই ভান্ডারে থাকা টাকা দিয়ে মায়ের ভোগ রান্না হয়। এমনই চল রয়েছে খিদিরপুর সার্বোজনীন দুর্গোৎসবের। যা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে।


এবছর ৯৬ বছরে পা রাখতে চলেছে খিদিরপুর সার্বোজনীন দুর্গোৎসব। ১৯২৬ সালে পুজো শুরু হয়েছিল। এটি শহরের তৃতীয় প্রাচীন সর্বজনীন পুজো। স্বাধীনতার অনেক আগে শুরু হয়েছিল এই পুজো। অনুশীলন সমিতির হাত ধরে এই পুজোর সূচনা। বারীন ঘোষের মদতে সে সময় পুজো শুরু হয়। ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস এই পুজো অঞ্জলি দিতে আসতেন। তিনি যুক্ত ছিলেন এই পুজোর সঙ্গে। সে সময় পুজো করতেন মনীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। 


এই পুজোর সঙ্গে জড়িত রয়েছে নানান ইতিহাস। জানা যায়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন পুজোর ঘট পুজো হয়েছিল, তাই এবছর সেই স্বাধীনতার কথা মাথায় রেখে এবছর প্যান্ডেল তৈরি করা হচ্ছে। এবছর মিউজিক্যাল ইন্সট্রুমেন্টের কাজ থাকছে পুজো প্যান্ডেলে। স্বাধীনতা আন্দোলনে নারীরা যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, তাই তুলে ধরা হবে। যা পরিচালনা করছেন অনিকেত বর্ধন। এছাড়া ইউনেস্কোর লোগো বিশেষ ভাবে দেখা যাবে পুজো প্যান্ডেলে। এবছর ইউনেস্কো আমাদের দুর্গোপুজোকে বিশেষ সম্মান দিয়েছে তাই তাদের সম্মান জানাতে এভাবে লোগা তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ‘বিশ্ব গর্বিত’ লোগো তৈরি করেছেন তাও থাকবে। এমনই জানান, পুজো কমিটির সদস্য অভিজিৎ দাস। 


তিনি বলেন, ‘আমরা দুর্গা পুজোই করি। আমরা পুজোর আঙ্গিককে প্রতিযোগিতার বহরে মিলিয়ে দিই না। আমরা পুজো করতে কখনও মাথা নিচু করে মাতৃ প্রতীমাকে অন্য রূপ দেখাই না। চণ্ডীতে বর্ণিত মায়ের রূপই আমরা প্রতি বছর তুলে ধরি। ১৯২৬ সালে বারিণ ঘোষের হাত ধরে মায়ের যে রূপ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তা এখনও বর্তমান। চাঁপা ফুলের রঙে মায়ের গায়ের রঙ হয়। আগামী যত বছর পুজো হবে মায়ের এই রূপ থাকবে।’ 

তিনি জানান, এবছরের পুজোর বাজে মাত্র ৪ লক্ষ ২৫ হাজার। এখানে প্রতি বছর ক্লাবের সদস্যরা মায়ের পুজো করেন। আর পুরো খরচের অনেকটা বহন করেন সৌগত মুখোপাধ্যায়, শতদ্রু চক্রবর্তী, প্রবীণ চট্টোপাধ্যায়-সহ একাধিক সদস্যরা। তাদের বাজেট অন্যান্য পুজোর থেকে কম। বর্তমানে জোড় কদলে চলছে পুজোর কাজ। অভিজিৎ দাস জানান, মুখ্যমন্ত্রী যেদিন সময় দিতে পারবেন, সেদিনই পুজোর উদ্বোধন করবেন তারা। থাকবেন ববি হাকিম ও অন্যান্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।

আরও পড়ুন- দেবী মা কামাক্ষ‍্যা বারো বছর রান্নাঘরে অবস্থান করেছিলেন, জেনে নিন বোলপুরের গুপ্ত পরিবারের পুজোর অজানা ইতিহাস

আরও পড়ুন- প্লাস্টিক অসুর বধ করে ধরিত্রী মা-কে বাঁচান, বাঘাযতীন তরুণ সংঘের এবারের থিম 'মুক্ত করো ফাঁস'

আরও পড়ুন- ধ্বংসের দিকে এগিয়ে চলছে পৃথিবী, 'অশনি সংকেত'-এর মাধ্যমে সচেতনার বার্তা দিচ্ছে রাজডাঙা নব উদয় সংঘ