সংক্ষিপ্ত
- উত্তর কুমারের সঙ্গে বহু ছবিতে কাজ করেছেন
- মহানায়কের অসম্ভব প্রিয় পাত্র ছিলেন
- উত্তম কুমারের জন্য নিয়ে যেতেন চাল ভাজা ও নাড়ু
- তাঁর অভিনয় স্বর্ণ যুগের বাংলা সিনেমার দর্শকদের মন জিতেছিল
গত মঙ্গলবার ভোরে মুম্বইয়ের হাসপাতালে প্রয়াত হন বাংলা সিনেমার বিখ্যাত অভিনেতা। তাঁর মৃত্যুতে টলিউড তথা রাজ্যজুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকে টলিউডের তাবড়, তাবড় অভিনেতা সকলেই শোক প্রকাশ করেন অভিনেতার মৃত্যুতে। এর মাঝেই সকলের অলক্ষ্যেই চলে গেলেন বাংলা সিনেমার স্বর্ণযুগের এক অভিনেতা। মহানায়ক উত্তম কুমারের সঙ্গে ১৪টি বাংলা সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন অভিনেতা ফকিরদাস কুমার। বৃহস্পতিবার বর্ধমানের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।
আরও পড়ুন: 'হতে চাই নামকরা পর্নস্টার', একী বললেন বিশ্ববিখ্যাত পরিচালকের কন্যা
বেশ কিছুদিন ধরেই বাদ্ধর্ক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন অশীতিপর ফকিরদাস কুমার। কয়েকদিন আগে তাঁকে বর্ধমানের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পূর্ব বর্ধমানের সেনপুরের বাসিন্দা ফকিরদাস সেই আমলে অত্যন্ত জনপ্রিয় অভিনেতা ছিলেন। রবি ঘোষ, ভান বন্দ্যোপাধ্যায়, জহর রায়ের মত ব্যক্তিত্বদের কমেডি চরিত্রে তাঁর অভিনয় দর্শকদের মনে আলাদা জায়গা করে নিয়েছিল। সবমিলিয়ে প্রায় ১৪০টি বাংলা ছিবতে অভিনয় করেছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: 'ইন্ডিয়ান ২'-র সেটে ভয়াবহ দুর্ঘটনা, ক্রেন ভেঙে প্রাণহানি, অল্পের জন্য রক্ষা কমল হাসানের
সহ অভিনেতা হিসাবে উত্তম কুমারের খুব পছন্দের পাত্র ছিলেন ফকিরদাস কুমার। মহানায়কের সঙ্গে ১৪টি ছবিতে কাজ করেছেন তিনি। যার মধ্যে রয়েছে জয়জয়ন্তী, বিকেলে ভোরের ফুল, রাতের রজনীগন্ধা, কায়াহীনের কাহিনী, দুই পুরুষ, মৌচাকের মত সিনেমা। কখনও গামছা কাঁধে ফেলে ভৃত্যের ভমিকায় আবার কখনও ওঝার চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গেছে তাঁকে।
শুধু সিনেমাই নয় শাতধিক বেতার নাটকও পরিবেশন করেছেন ফকিরদাস কুমার। নাটকের ক্ষেত্রেও তিনি সমান ভাবে জনপ্রিয় ছিলেন। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় থেকে উৎপল দত্ত, তাপস পাল, প্রসেনজিত সকলেরই খুব কাছের লোক ছিলেন ফকিরদাস।
ফকিরদাসের পুত্র দেবাশিষ কুমার জানান, মহানায়কের সঙ্গে দেখা করতে গেলে সবসময় চালভাজা ও নাড়ু নিয়ে যেতেন তিনি। ফকিরবাবুর স্ত্রীর
হাতে তৈরি নাড়ু ও চালভাজার ভক্ত ছিলেন খোদ মহানায়ক। জীবনে অনেক সম্মান পেলেও রাজ্য সরকারের তরফে উত্তম কুমার পুরস্কার পাওয়ার স্বপ্ন ছিল ফিকরদাস কুমারের। তার জন্য আক্ষেপও শোনা যেত অশীতিপর বৃদ্ধের গলায়। তবে সেই পুরস্তার অধরাই থেকে গেল মহানায়কের প্রিয়পাত্রের।
ফকিরদাস কুমার মৃত্যুকালে রেখে গেলেন তাঁর তিন পুত্র, কন্যা , পুত্রবধূ ও নাতি-নাতনিদের। এই জনপ্রিয় মানুষটির মৃত্যতে বর্ধমান শহরে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।