সংক্ষিপ্ত

ঐন্দ্রিলার মুখাগ্নি করলেন বাবা উত্তম শর্মা ও বন্ধু সব্যসাচী। গোটা ঘটনায় একেবারে স্থবির সব্যসাচী। পাথরের মত করে গেলেন যাবতীয় কর্তব্য। বিগত ১৯ দিনের মত শেষ যাত্রাতেও ঐন্দ্রিলার ছায়াসঙ্গী ছিলেন তিনি। 

 

শেষ হল অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়াও। পঞ্চভূতে বিলীন ঐন্দ্রিলা। রবিবার দুপুর ১২.৫৯ নাগাদ সবার চেষ্টাকে ব্যর্থ করে না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা। অভিনেত্রীর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা বিনোদন জগৎ। ১৯ দিনের লড়াই শেষে ঐন্দ্রিলার নিথর দেহর দিকে তাকিয়ে স্তব্ধ সব্যসাচী। রবিবার বিকেলেই অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়া সম্পন্ন হয় ঐন্দ্রিলার। বিকেল সোয়া পাঁচটা নাগাদ কুঁদঘাটের বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছয় মৃতদেহ। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় টেকনিশিয়ান স্টুডিয়। সেখান থেকে কেওড়াতলায় নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। ঐন্দ্রিলার মুখাগ্নি করলেন বাবা উত্তম শর্মা ও বন্ধু সব্যসাচী। গোটা ঘটনায় একেবারে স্থবির সব্যসাচী। পাথরের মত করে গেলেন যাবতীয় কর্তব্য। বিগত ১৯ দিনের মত শেষ যাত্রাতেও ঐন্দ্রিলার ছায়াসঙ্গী ছিলেন তিনি। জানা যাচ্ছে ঐন্দ্রিলার মৃত্যুর খবর পাওয়ার থেকেই জলস্পর্শ করেননি তিনি। কথাও বলছেন না।

২০১৫ সালে প্রথম ক্যানসার ধরা পড়ে ঐন্দ্রিলার। তখন তিনি একাদশ শ্রেনীর ছাত্রী। মারণ রোগের সঙ্গে মুখে হাসি নিয়েই লড়েছিলেন অষ্টাদশী ঐন্দ্রিলা। লড়াইয়ে জিতেও ছিলেন তিনি। এরপর কেটে গিয়েছিল ছয় বছর। ঐন্দ্রিলার জীবনে আসেন সব্যসাচী। সম্পর্কের পাঁচ বছরের মাথায়ই ফের একবার আঘাত নেমে আসে সব্য-ঐন্দ্রিলার জীবনে। ২০২১ সালে ফের ক্যান্সার আক্রান্ত হন অভিনেত্রী। ফের লড়াই, ফের জয়। মারণ রোগকে ছাপিয়ে সব্যসাচীর হাত ধরেই জীবনের জয়গান গেয়েছিলেন অভিনেত্রী। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। সকলের অজান্তেই মারণ রোগ ফের বাসা বেঁধেছিল ঐন্দ্রিলার মাথায়। এবার আর ফিনিক্স হয়ে ফেরা হল না তাঁর। ক্যানসারের কাছে হার মানল অভিনেত্রীর জীবনীশক্তি। ২০ নভেম্বর সকলকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে ঐন্দ্রিলা।

১ নভেম্বর প্রথম স্ট্রোক হয় ঐন্দ্রিলার। প্রথম থেকেই সংকটজনক ছিল অভিনেত্রীর অবস্থা। জানা যায় মাথার বাঁ দিকে প্রচুর পরিমাণে রক্তপাত হয়েছে অভিনেত্রীর। ফলত জরুরী ভিত্তিতে অস্ত্রপচারও করতে হয়। টানা ভেন্টিলেশনে ছিলেন ঐন্দ্রিলা। চিকিৎসরা জানান বায়পসিতে দেখা গিয়েছে ‘ইউয়িংস সারকোমা’ এবার মস্তিষ্কে দেখা দিয়েছে। এর ফলেই স্ট্রোক হয়েছিল ঐন্দ্রিলার বলেও জানান তাঁরা। তবু ঐন্দ্রিলার অদম্য জেদ আর অফুরাণ জীবনীশক্তির উপর ভরসা করেই আশায় বুক বেঁধেছিল চিকিৎসক মহল। স্নায়ু চিকিৎসক থেকে রেডিয়েশন অঙ্কোলজিস্ট-সহ চিকিৎসকদের একটি গোটা দল মিলে প্রচেষ্টা চালায় ঐন্দ্রিলাকে সুস্থ করার। তবে এত চেষ্টা সত্ত্বেও শেষ রক্ষা হয়নি। অস্ত্রপচারের পর আবারও মস্তিষ্কের বাঁ দিকে স্ট্রোক হয় অভিনেত্রীর। পরে মাথার ডান দিকেও স্ট্রোক হয় তাঁর। অবস্থার ক্রমাগত অবনতি হতে থাকে। কমে আসে চেতনাও। বারবার হৃদরোগে আক্রান্ত হতে থাকেন তিনি। অবশেষে রবিবার দুপুরে ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ হয় তাঁর। আর যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারেননি তিনি।

আরও পড়ন - 

ঐন্দ্রিলার লড়াইকে কুর্নিশ জানাচ্ছে বাংলা, শোকপ্রকাশ করলেন অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ও জয় মুখোপাধ্যায়ও

ঐন্দ্রিলা শর্মার অকাল মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়,টুইটারে শোকবার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

সব্যর আফসোস, শকুনরা কবেই মেরে ফেলেছিল মিষ্টিকে, সেটাই সত্যি হল : সৌরভ