সংক্ষিপ্ত
নতুন করে ওর কোনও অবনতি হয়নি! আর একটু সময় দিন। ঐন্দ্রিলার সুস্থতার খবর আমরাই সবার আগে বুক বাজিয়ে জানাব।
সোশ্যাল মাধ্যমে ঐন্দ্রিলা শর্মার জন্য প্রার্থনা। সংবাদমাধ্যমে তাঁর শারীরিক অবস্থান নিয়ে চুলচেরা ছানবিন। তার মধ্যেই ভুয়ো খবর, শনিবার অভিনেত্রীর শারীরিক অবস্থার নাকি অবনতি হয়েছে! ‘জিয়ন কাঠি’র ছোঁয়ায় কবে ঘুম ভেঙে উঠবেন নায়িকা? উদ্বিগ্ন প্রশ্ন টলিউড থেকে অনুরাগী মহলের। অসুস্থতার ৫ দিন পরে প্রথম এশিয়ানেট নিউজ বাংলার সঙ্গে কথা বললেন সৌরভ দাস।
আমি, সব্যসাচী চৌধুরী, দিব্যপ্রকাশ রায় আর ঐন্দ্রিলার পরিবারের এক জন ভেন্টিলেশন ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে। আমরা পালা করে আসছি। কাচের ঘরের বাইরে থেকে দেখে যাচ্ছি ওকে। বিছানায় শুয়ে শুয়ে ঐন্দ্রিলা লড়ছে। ওর সঙ্গে লড়ছে গোটা হাসপাতাল। মিনিটে মিনিটে হৃদস্পন্দন, নাড়ির গতি মাপা হচ্ছে। এক দল চিকিৎসক ঐন্দ্রিলার সঙ্গে যেন লেপ্টে রয়েছেন! অসুস্থতার দিন থেকে শনিবার, ৫ নভেম্বর পর্যন্ত—ঐন্দ্রিলা শর্মা যেমন ছিল তেমনি আছেন। আপনাদের একটা কথাও মিথ্যে বলছি না। বাজে স্বান্তনাও দিচ্ছি না। বরং আন্তরিক অনুরোধ জানাচ্ছি, দয়া করে সূত্রের খবরে বিশ্বাস করবেন না! নতুন করে ওর কোনও অবনতি হয়নি!
হ্যাঁ, এমনই একটি ভুয়ো খবর শনিবার বিকেল থেকে নাকি ঘুরছে সংবাদমাধ্যমে। সেটাই যদি সত্যি হবে তা হলে আমি এখন আমাদের নতুন রেস্তরাঁ ‘হোঁদল’-এ যাচ্ছি? ‘হোঁদল’ সব্য, দিব্য আর আমার স্বপ্ন। আমাদের সন্তান। সব্যর এখন সেখানে যাওয়ার মতো অবস্থা নেই। ও কাচের ঘরের বাইরে ঠায় বসে। আগলাচ্ছে ওর ঐন্দ্রিলাকে। আমি আর দিব্য পালা করে সারা দিন রেস্তরাঁ সামলাচ্ছি। রাতে চলে আসছি হাসপাতালে। তিন জনে এক সঙ্গে রাত জাগছি। নানা জায়গায় নানা খবর। ঐন্দ্রিলার পরিবার উদভ্রান্ত। কথা বলার মতো পরিস্থিতিতেই নেই। গুঞ্জন থামাতে বাধ্য হয়ে সব্যকে বললাম, ফেসবুকে একটা পোস্ট দে, ভাই। নইলে সামলানো যাবে না। সব্যর মনের জোর দেখে অবাক হয়ে গেলাম। চিকিৎসক বলুন বা আমরা সাধারণ মানুষ— কারওর কাছেই ঐন্দ্রিলাকে নিয়ে এক্ষুণি সদুত্তর নেই। কিন্তু সব্যসাচী প্রচণ্ড দৃঢ় ভাবে লিখল, ‘ওকে নিজের হাতে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। আমিই ওকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাব!’
ওর বিশ্বাস, ওর মনের জোর, ওর লড়াইকে কুর্নিশ! জানি, সব্যসাচীই জিতে যাবে। ঐন্দ্রিলা ওকে হারতে দেবে না। এই লড়াইটা যাতে সুস্থ থেকে সব্য লড়তে পারে তার জন্য রেস্তরাঁ থেকে রাতে হাসপাতালে আসার সময় খাবার নিয়ে আসছি। কোনও দিন কোনও প্রেমিকার জন্য যা করিনি। সব্য তো আমার বন্ধু নয়, ও আমার আর জন্মের ভাই! তার পর রাতে দু’জনে মিলে চিত্রনাট্য পড়ছি। কিছু দিনের মধ্যেই ‘বিবাহ অভিযান ২’-এ শ্যুট শুরু হবে। মনের দুঃখ মনে চেপে দায়িত্ব নিয়ে লোক হাসাতে হবে তো! এত কিছুর মধ্যে তারও মহড়া চলছে।
অনেকের অবাক প্রশ্ন, কী করে এত অসুস্থ হয়ে পড়ল ঐন্দ্রিলা? বেশ তো ছিল মেয়েটা? এটা চিকিৎসকদের কাছেও বড় ধোঁয়াশা। ওঁরাও বুঝতে পারছেন না, কোথা থেকে কী হয়ে গেল! আমরা সবাই এখন শুধু অপেক্ষা করছি ঐন্দ্রিলার চোখ মেলার। জানি, ও চোখ মেলবেই। এত জনের প্রার্থনা বিফলে যাবে না। তখন আমরা ওর থেকে জেনে নেব, কী করে প্রাণবন্ত মেয়েটা এ ভাবে শয্যাশায়ী হয়ে পড়ল?