সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়ি ভাঙার সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশে অবস্থিত এই বাড়িটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে এবং সত্যজিৎ রায়ের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ভারত সরকার বাড়িটি ভাঙার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে।
ওই বাড়িটি একটি ডকুমেন্টারিতে সত্যজিৎ রায় রাখতে চেয়েছিলেন। এর জন্য বাংলাদেশও যাওয়ার ইচ্ছা ছিল সত্যজিৎ রায়ের। সদ্য পৈতৃক বাড়ি নিয়ে মুখ খুললেন পরিচালক। এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সন্দীপ রায় বলেন, ১৯৮৭ সালে সুকুমার রায়ের ওপর ডকুমেন্টারি করছিলেন বাবা। তখন তাঁর বাংলাদেশ যাওয়ার ইচ্ছা ছিল। ওই পৈতৃক বাড়ি ডকুমেন্টারিতে রাখার ইচ্ছা ছিল। বাবা তাঁর এক সহকারীকে পাঠিয়েছিলেন। তিনি ছবি তুলে এনেছিলেন। বাবা ছবি দেখে খুবই মর্মাহত হয়েছিলেন। পৈতৃক বাড়ির অবস্থা খুবই খারাপ। ওই অংশটা ডকুমেন্টারি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন যে, আমরা আসলে কিছু জানি না। মাঝখানে শুনেছিলাম, বাড়িটি সংস্কার করা হবে। হেরিটেজের মতো করা হবে। এখন দেখছি অন্য ব্যাপার। আমি কোনওদিন ওখানে যাইনি। বাবাও হয়তো একবার গিয়েছিলেন বহুকাল আগে। যে কারণে আমাদের পক্ষে বলা মুশকিল। তবে বাড়িটার অবস্থা খুবই খারাপ ছিল এটুকু বলতে পারি।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলায় হরিকিশোর রায় রোডে অবস্থিত সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়ি। সত্যজিৎ রায়ের ঠাকুরদা তথা সাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর বাড়ি ছিল। এই বাড়িটি বাংলাদেশ শিশু অ্যাকাডেমির ভবন হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তবে, ইউনূস সরকার বর্তমানে তা ভাঙার কাজ শুরু করেছে। সেই কাজ বন্ধের বার্তা দিল মমতা সরকার। আর এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সরব হতেই পাশে দাঁড়াল কেন্দ্রীয় সরকার।
হাসিনা সরকারের পতন ও মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকেই ওপার বাংলায় সাহিত্যিক থেকে সঙ্গীতশিল্পী, বিশিষ্ট ব্যক্তিদের বাড়িঘর হামলার মুখে পড়েছে। মাস খানেক আগেই বাংলাদেশে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পৈতৃক ভিটেয় ভাঙচুর করেছিল দুষ্কৃতীরা। এবার সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়িও ভাঙার মুখে।
জানা গিয়েছে, ভারত সরকারের তরফে এই বাড়ির ঐতিহাসিক গুরুত্ব বাংলার সংস্কৃতির সঙ্গে যোগকে উল্লেখ করে বলা হয় যেন এই বাড়ি ভাঙার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্য। এখন দেখার বাংলাদেশ সরকার কী সিদ্ধান্ত নেয়।


