সংক্ষিপ্ত

স্ত্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ও (Sandhya Mukherjee) মান্য করে চলত স্বামীকে। কখনও সৈকতবাবু দেখেননি স্বামীকে টপকে কোনও কথা বলেছেন তাঁর সন্ধ্যা পিসি। এমনকী, তিনি যখন শ্যামল গুপ্তের বাড়ি যেতেন, তখন সব সময় সামনে আসতেন না সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। কোনও দরকারে শ্যামল গুপ্ত ডাকলে তবেই আসত। 

শ্যামল মিত্রের ছেলে হওয়ার সুবাদে সৈকত মিত্রের (Saikat Mitra) সঙ্গে পারিবারিক আলাপ ছিল সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের পরিবারের। ছোট থেকে নানা কারণে শ্যামল গুপ্তের বাড়ি গিয়েছেন। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে (Sandhya Mukherjee) পিসি বলে ডাকতেন তিনি। চোখের সামনে থেকে দেখেছেন শ্যামল গুপ্ত ও সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের সম্পর্ক। তাঁর ভাষায়, শ্যামল গুপ্ত একটু একরোখা স্বভাবের মানুষ ছিলেন। তবে তাঁর মন ছিল খুবই ভালো। তিনি স্ত্রীর ব্যাপারে দারুণ সজাগ থাকতেন। স্ত্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ও (Sandhya Mukherjee) মান্য করে চলত স্বামীকে। কখনও সৈকতবাবু দেখেননি স্বামীকে টপকে কোনও কথা বলেছেন তাঁর সন্ধ্যা পিসি। এমনকী, তিনি যখন শ্যামল গুপ্তের বাড়ি যেতেন, তখন সব সময় সামনে আসতেন না সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। কোনও দরকারে শ্যামল গুপ্ত ডাকলে তবেই আসত। 

দুজনের বিয়েটা প্রেমের। মুখোপাধ্যায় পরিবারের মেয়ে সন্ধ্যা বিয়ে করবে গুপ্ত পরিবারের ছেলেকে, তা কেউ প্রথমে মেনে নেয়নি। যে কারণে বহুদিন অপেক্ষা করতে হয়েছিল দুজনকে। শেষে শ্যামল গুপ্ত (Shyamal Gupta) আর সন্ধ্যাদেবীর (Sandhya Mukherjee)প্রেমের কাছে নতস্বীকার করেন সকলে। তখন চার হাত এক হয়। বিয়ের আগে শ্যামল গুপ্ত নাকি বলেছিলেন, ‘যত বড়ই শিল্পী হও, বিয়ের পর তোমাকে কিন্তু থাকতে হবে আমার ছোট একতলা বাড়িতেই।’ 

শ্যামল গুপ্ত স্ত্রীকে খুবই সামলাতে। তিনি যতদিন জীবিত ছিলেন, তাঁকে এড়িয়ে কেউ স্ত্রীর নাগাদ পায়নি। দাপুটে স্বভাবের শ্যামল গুপ্ত (Shyamal Gupta) সব সময় স্ত্রীকে আগলে রাখতেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব পালন করে গিয়েছেন। সৈকত মিত্রর কথা, ‘শ্যামল গুপ্তের হাতে নিজেকে সঁপে দিয়ে নিশ্চিন্তে গান নিয়ে জীবন কাটিয়েছেন তিনি’। 

 বাংলা গানের সোনালী যুগের কথা উঠলে যাদের কথা সবার আগে মনে আসে, তাদের মধ্যে অন্যতম সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় (Sandhya Mukherjee)। তিনি শুধু বাংলা গানই গাইতেন না। সঙ্গে হিন্দি গানের জগতেও তাঁর অবদান রয়েছে বিস্তর।  ১৯৩১ সালের ৪ অক্টোবর ঢাকুরিয়াতে জন্ম হয় শিল্পীর। ছোট বয়স থেকেই সঙ্গীতের তালিম নিতেন। ১৯৪৮ সালে প্রথম অঞ্জন গড় ছবিতে প্লে ব্যাক করেন। তারপর একে একে দর্শকদের উপহার দিয়েছেন হিট হিট গান। মঙ্গলবার শেষ হল শিল্পীর পথচলা। ৯০ বছরে নিভে গেল সন্ধ্যা প্রদীপ। শহরের এক বেসরকারী হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি। গত ২৬ জানুয়ারি বুধবার সন্ধ্যায় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন প্রবাদ প্রতিম সঙ্গীতশিল্পী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় (Sandhya Mukherjee) । তারপর থেকে চলছিল লড়াই। শেষে মঙ্গলবাল নিভে গেল সন্ধ্যা প্রদীপ।  
 

আরও পড়ুন: সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে উত্তরবঙ্গ সফরে কাঁচি, বুধবার কলকাতা ফিরছেন মমতা

আরও পড়ুন: মঙ্গলের সন্ধ্যায় নিভে গেল সন্ধ্যা তারা, প্রয়াত সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়

আরও পড়ুন: সন্ধ্যার প্রয়াণে শোকস্তব্ধ সঙ্গীতমহল, শোকপ্রকাশ ইন্দ্রানী-শ্রাবনী-জয়-মনোময়দের