- Home
- Entertainment
- Bollywood
- ওয়াহিদার সঙ্গে বিচ্ছেদের কারণেই কি আত্মহননের পথ বেছে ছিলেন গুরু দত্ত, রহস্য মৃত্যু আজও ধোঁয়াশা
ওয়াহিদার সঙ্গে বিচ্ছেদের কারণেই কি আত্মহননের পথ বেছে ছিলেন গুরু দত্ত, রহস্য মৃত্যু আজও ধোঁয়াশা
গুরু দত্ত। পঞ্চাশের দশকে একাধারে পরিচালক, চিত্রনাট্যকার, প্রযোজক ও অভিনেতা ছিলেন। ১৯২৫ সালে ৯ জুলাই তার জন্ম। আসল নাম বসন্ত কুমার শিবশঙ্কর পাদুকোন, শৈশবে এক দুর্ঘটনার পরই নাম পরিবর্তন হয়ে গুরু দত্ত হিসেবে সকলের কাছে পরিচিতি পাম। আজ তার ৯৫ তম জন্মবার্ষিকী। রিল লাইফের মতোই রিয়েল লাইফটাও ছিল তার আড়ম্বর পূর্ণ। গীতা দত্তের সঙ্গে প্রেম থেকে বিবাহ, তার পরেই ওয়াহিদের রহমানের সঙ্গে প্রেম সবটাই যেন রূপোলি পর্দার এক ফ্রেমে সাজানো। কিন্তু ওয়াহিদার সঙ্গে বিচ্ছেদের পরই সবটা যেন এক লহমায় বদলে গিয়েছিল। সত্যিই কি ওয়াহিদার বিচ্ছেদে আত্মহননের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন গুরু দও, যা আজও ধোঁয়াশা।
- FB
- TW
- Linkdin
আজ গুরু দত্তের ৯৫ তম জন্মবার্ষিকী। রিল লাইফের মতোই ব্যক্তিগত জীবনটাও তার বিচিত্রে পরিপূর্ণ ছিল। একাধারে বিভিন্ন প্রতিভাসম্পন্ন মানুষটির প্রেম কাহিনি ছিল বলিউডের সবথেকে করুণ প্রেমকাহিনির মধ্যে অন্যতম।
সালটা ১৯৫০। সেইসময়কার বিখ্যাত গায়িকা গীতা রায়চৌধুরীর প্রেমে পড়েন গুরু দত্ত। তার প্রথম ছবি 'বাজি'র নেপথ্য গায়িকা ছিলেন গীতা। সেখান থেকে প্রেমের শুরু। প্রেম থেকেই পরিবারের অমতে ১৯৫৩ সালের ২৬ মে বিয়েও সেরেছিলেন গীতা ও গুরু।
বিয়ের তিন বছরের মাথাতেই ১৯৫৬ সালে গুরু দত্তর সঙ্গে পরিচয় হয় ওয়াহিদা রহমানের। ওয়াহিদা দেখেই তার প্রতি চোখ পড়ে গুরু দত্তর। তেলেগু ছবিতে সদ্যই খ্যাতি অর্জন করেছেন ওয়াহিদা। সেই সময় তাকে মুম্বই নিয়ে চলে আসেন গুরু দত্ত।
এরপরেই নিজের প্রযোজিত 'সিআইডি' ছবিতে খলচরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ দেন ওয়াহিদাকে। তারপর 'পিয়াসা' ছবিতে কেন্দ্রীয় নারী চরিত্রে অভিনয় করেন ওয়াহিদা। 'চৌধভি কা চাঁদ' ছবিতে ওয়াহিদার বিপরীতে ফাটিয়ে অভিনয় করে সকলকে তাক লাগিয়ে দেন গুরু দত্ত। শুধু রূপোলি পর্দাতেই নয়, বরং রিয়েল লাইফেও ওয়াহিদার প্রেমে পড়ে যান গুরু দত্ত।
এদিকে ওয়াহিদার সঙ্গ সম্পর্কে জড়ানোর পর থেকে দাম্পত্য জীবনে ঝড় ওঠে গুরুর। গীতা দত্ত ত্যাগ করেন গুরুকে। যদি বিবাহ বিচ্ছেদ না করেও তারা আলাদা থাকতে শুরু করেন।
গুরু দত্ত যেমন নিজের স্ত্রী গীতাকেও ভালবাসতেন তেমনি আবার ওয়াহিদাকেও ভালবাসতেন। কাউকেই তিনি ছাড়তে চাননি। কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে প্রভাব পড়ে গুরুর কেরিয়ারে।
অসামান্য কাহিনি, পরিচালনা, অভিনয় থাকা সত্ত্বেও গুরু-ওয়াহিদা জুটির 'কাগজ কে ফুল' ছবিটি বাণিজ্যিক সাফল্য পায় না। কিন্তু বিবাহিত পরিচালক এবং নায়িকার প্রেম তখনকার দর্শক সেভাবেও মেনে নিতে পারেননি। যা গুরুকে ভীষণভাবে আঘাত হেনেছিল।
তারপর থেকেই ওয়াহিদাক সঙ্গে প্রেমে ভাটা পড়তে থাকে। ব্যক্তিগত ও ফিল্মি কেরিয়ারের ব্যর্থতার চরমে ওয়াহিদা গুরুকে পরিত্যাগ করে। কারণ গুরু দত্তের বিবাহিত জীবনে যেন শান্তি ফিরে আসে সেই ভেবেই সরে গিয়েছিলেন ওয়াহিদা।
১৯৬২ সালে 'সাহেব বিবি অউর গোলাম' ছবিতেই গুরু দও এবং ওয়াহিদাকে শেষবারের মতোন দেখা গিয়েছিল।
একদিকে সফল নায়িকা, তেমনি তার রূপে-গুনে মুগ্ধ হয়েছে বলিউড। তার কেরিয়ার তখন মধ্যগগণে। কিন্তু গুরু দত্তকে ছেড়ে চলে যাবার পরই তার বিরহে দু'বার আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন গুরু।
যদিও তার আত্মহত্যার নিয়ে আজও ধোঁয়াশা কাটেনি। অনেকেই তার মৃত্যুকে দুর্ঘটনা বলে দাবি করেছেন। আত্মহত্যার আগে শেষবার ফোন করেছিলেন জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী আশা ভোঁসলেকে। তিনিই শেষ ব্যক্তি যিনি কিনা গুরু দত্তের মৃত্যুর আগে তার সঙ্গে কথা বলেছিলেন।
মৃত্যুর আগের দিন স্ত্রী গীতার কাছেও গিয়েছিলেন। দুই ছেলের সঙ্গে সময় কাটাতে চেয়েছিলেন কিন্তু তাতে রাজি হননি গীতা। এরপরই ১৯৬৪ সালে তাকে নিজের ফ্ল্যাটে মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। চিকিৎসকদের মতে, অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ তার রহস্যমৃত্যুর কারণ।