ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা ১০টি লজ্জাজনক ও বিতর্কিত ঘটনা, জেনে নিন আপনিও
- FB
- TW
- Linkdin
শাকিব আল হাসান-
ঢাকা প্রিমিয়ায় লিগে শাকিব আল হাসানের এই কাণ্ড ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম লজ্জাজনক ঘটনা। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্য়াচে শাকিবের বারবার আপিলে আম্পায়ার এলবিডব্লু আউট না দেওয়ায় রেগে যান তারকা অলরাউন্ডার। প্রথমে উইকেটে লাথি মারেন শাকিব। তারপর রেগে গিয়ে সব উইকেট তুলে ফেলে দেন শাকিব। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অখুশি হওয়াটা নতুন ব্য়াপার নয়। কিন্তু শাকিব যা করেছিলেন তা সত্যিই বিরল। এই কারণে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা ও ৩ ম্য়াচের জন্য ব্য়ান হয়েছিলেন শাকিব।
শাহিন আফ্রিদি-
গত বছর টি২০ বিশ্বকাপে ভারতের বিরুদ্ধে অনবদ্য বোলিং করেছিলেন পাকিস্তানের শাহিন আফ্রিদি। বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা ও কেএল রাহুলকে আউট করেছিলেন তিনি। কিন্তু মনে হয় এই পারফরম্যান্সের কারণে তার দম্ভ চলে আসে। তাই পরের ম্য়াচে যখন তিনি বাউন্ডারিতে ফিল্ডিং করছিলেন তখন পাকিস্তানের দর্শকরা বিরাট-রোহিত-রাহুল বলে চিৎকার করতে থাকেন। তখন শাহিনও তিন ব্যাটসম্য়ানের আউট হওয়ার ধরন নকল করে ফ্য়ানেদের দেখান। এই ঘটনা একজন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারের পক্ষে সত্যিই লজ্জাজনক।
জাভেদ মিয়াদাদ ও ডেনিস লিলি-
পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট ম্য়াচ চলাকালীন একবার সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিলেন প্রাক্তন পাক অধিনায়ক ও অজি পেসার ডেনিস লিলি। মিয়াদাদ রান নিতে যাওয়ার সময় পথ আটকান লিলি। তারপর যা নিয়ে দুজনের মধ্যে তর্ক হয়। পরের মুহূর্তে আম্পায়ারের কাছ থেকে সোয়েটার নেওয়ার সময় মিয়াদাদকে লাথি মারেন লিলি। সেই সময় রেগে গিয়ে ব্য়াট দিয়ে লিলিকে মারতে যান মিয়াদাদ। কিন্তু ক্রিকেটের মত খেলায় এই ঘটনা নিন্দনীয়।
কে এল রাহুল-
ভারত-ইংল্য়ান্ড টেস্ট সিরিজের সময় লর্ডসে বাউন্ডারিতে ফিল্ডিং করছিলেন। সেই সময় -ইংল্য়ান্ড সমর্থকরা রাহুলকে লক্ষ্য করে শ্যাম্পেনের বোচলের ঢাকনা ছুঁড়ে মারে। যা নজরে আসে তৎকালীন অধিনায়ক বিরাট কোহলির। তিনি আম্পায়ারের কাছে বিষয়টি জানানোর পাশাপাশি রাহুলকে বলেন ঢাকনা গুলি পাল্টা দর্শকদের ছুঁড়ে দিতে। এই ঘটনা নিয়ে তুমুল বিতর্ক হয়েছিল।
মুশফিকুর রহিম ও নসিম আহমেদ-
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্য়াচ চলাকালীন মুশফিকুর রহিম ও নসিম আহমেদের ঝামেলার ঘটনা। ঘটনাটি ছিল একটি উঁচু ক্য়াচ ধরতে দৌড়েছিলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। সেই সময় সামনে চলে আসেন নসিন আহমেদ। ধাক্কা খেতে খেতে বাঁচেন দুজন। মুশফিকুর ক্য়াচটি ধরলেও রেগে গিয়ে নসিমকে মারতে যান মুশফিকুর। সতীর্থকেই এইভাবে মারতে যাওয়ার ঘটনা ক্রিকেট ইতিহাসে সত্যি বিরল।
১৯৯৬ ভারত-শ্রীলঙ্কা বিশ্বকাপ সেমি ফাইনাল-
১৯৯৬ ভারত-শ্রীলঙ্কা বিশ্বকাপ সেমি ফাইনালে ইডেন গার্ডেন্সে রান তাড়া করতে নেমে টিম ইন্ডিয়ার ৮ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর দর্শকরা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। মাঠে গ্য়ালারিতে আগুন জ্বালিয়ে, মাঠে বোতল নিক্ষেপ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। বাধ্য হয়ে শেষ পর্যন্ত ম্য়াচ স্থগিত করে শ্রীলঙ্কাকে জয়ী ঘোষণা করা হয়। এই ঘটনার কারণে ভারতকে বিশ্ব ক্রিকেটে লজ্জিত হতে হয়েছিল।
গ্রেগ চ্য়াপেলের আন্ডার আর্ম ডেলিভারি-
১৯৮১ সালে অস্ট্রেলিয়া বনাম নিউজিল্য়ান্ডের একদিনের ম্য়াচে শেষ বলে কিউইদের দরকার ছিল ৬ রান। সেই সময় বল করছিলেন গ্রেগ চ্য়াপেল। শেষ বলে আন্ডার আর্ম বলে করে দেন তিনি। যা সেই সময় নিয়ম বিরুদ্ধ ছিল না। ফলে ম্য়াচটি জিতে ব্য়াগি গ্রিনরা। কিন্তু এই ক্রিকেট মাঠের সত্যি লজ্জাজনক ঘটনা। এই ঘটনার নিন্দা করেছিলেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীও।
পাকিস্তানে শ্রীলঙ্কা টিম বাসে হামলা-
২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের পাকিস্তান সফরে গিয়েছিল। সেই সময় লাহোরে শ্রীলঙ্কা টিম বাসের উপর জঙ্গি আক্রমণ হয়। ঘটনায় ৬ জন শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটার আহত হন। পাকিস্তানের ৬ পুলিস কর্মী ও ২ নাগিরক মারা যান। এই ঘটনার পরই সফর বাতিল করে শ্রীলঙ্কা মাঠেই হেলিকপ্টার নামিয়ে ক্রিকেটারদের দেশে ফেরত নিয়ে যান। এই ঘটনাকে ক্রিকেটের কালো দিন বলা হয়ে থাকে।
সুরজ রণদীপ-
একটি ভারত-শ্রীলঙ্কা একদিনের ম্য়াচের সময় টিম ইন্ডিয়ার জয়ের জন্য দরকার ছিল ১ রান। সেই সময় ৯৯ রানে নট আউট ছিলেন বীরেন্দ্র সেওয়াগ। ম্য়াচ না জিততে পারলেও সেওয়াগের সেঞ্চুরি আটকানোর জন্য নো বল করেন শ্রীলঙ্কার স্পিনার সুরজ রণদীপ। সেই বলে যদিও ৬ মেরে দেন সেওয়াগ। কিন্তু ইচ্ছাকৃত নো বল করার জন্য ১ ম্য়াচের ব্য়ান করা হয়।
বেন স্টোকস ও মারলন স্যামুয়েলস-
বেন স্টোকস ও মারলন স্য়ামুয়েলসের ঝামেলার কথা আমাদের সকলেরই জানা। যার শুরু হয়েছিল ২০১৫ সালে একটি টেস্ট ম্য়াচের সময়। সেই সময় স্টোকস আউট হওয়ার সময় তাকে স্যালুট দেন স্য়ামুয়েলস। যা নিয়ে দুজনের বিবাদ হয়। তারপর ২০১৬ টি২০ বিশ্বকাপেও দুজন ঝামেলায় জড়িয়েছিলেন। কিন্তু সবথেকে বড় বিবাদ হয় দুজনের ২০২০ আইপিএলের সময়। সেই কোয়ারেন্টাইনের যন্ত্রণা বোঝাতে গিয়ে বেন স্টোকস বলেছিলেন এমন পরিস্থিতি যেন শত্রুদের সহ্য করতে না হয়। যে কথা নিজের ভাইকেও বলেছিলেন স্টোকস। ম্য়াসেজে স্টোকস জানান তার ভাই তাকে জিজ্ঞেস করেন, তুমি কী স্য়ামুয়েলসকেই এই যন্ত্রণা দিতে চান না। তখন স্টোকস বলেছিলেন না। কিন্তু এরপরই বেজায় চটে যান স্য়ামুয়েলস। স্টোকসের স্ত্রী সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্য় করেন তিনি। যা খুবই নিন্দনীয়।