- Home
- Sports
- Cricket
- সচিন তেন্ডুলকরের সঙ্গে খেলেছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট, অদৃষ্টের পরিহাসে এখন এসি মিস্ত্রি সেই ক্রিকেটার
সচিন তেন্ডুলকরের সঙ্গে খেলেছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট, অদৃষ্টের পরিহাসে এখন এসি মিস্ত্রি সেই ক্রিকেটার
- FB
- TW
- Linkdin
কথায় বলে প্ররিশ্রমই সাফল্যের চাবিকাঠি। কিন্তু অনেক সময় সঠিক পরিশ্রমরে পাশাপাশি দরকার হয় ভাগ্যেরও। তা না হলে শত কঠোর পরিশ্রম ও যোগ্যতাও বিফলে যেতে পারে। ঠিক তেমনটাই হয়েছে জিম্বাবোয়ের তারকা ক্রিকেটার রে প্রাইসের সঙ্গে। ১৪ বছরের ক্রিকেট কেরিয়ারে দাপিয়ে ক্রিকেট খেলেছিলেন। কিন্তু ক্রিকেট ছাড়ার পর ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আজ সে এসি মেকানিক।
১৯৯৯ শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল রে প্রাইসের। অভিষেকেই নজর কেড়েছিলেন এই বাঁহাতি স্পিনার ও ব্যাটসম্যান। বল হাতে ভেলকির পাশাপাশি ব্যাট হাতেও সমান পারদর্শী ছিলেল রে প্রাইস। তাকে জিম্বাবোয়ের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডারদের মধ্যেও বিবেচনা করা হত।
১৪ বছরের দীর্ঘ কেরিয়ারে ২২টি আন্তর্জাজিতক টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন রে প্রাইস। ২২ টেস্টে মোট ৮০ টি উইকেট রয়েছে তার ঝুলিতে। এক ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছেন পাঁচবার। তার বাঁ-হাতি স্পিন সমীহ আদায় করেছিল ক্রিকেট বিশ্বের।
একদিনের ক্রিকেটেও সমানভাবে পারদর্শী ছিলেন রে প্রাইস। ১০২টি এক দিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ খেলেছেন রে প্রাইস। তাতে তার শিকার ১০০টি উইকেট। দেশের হয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও রে প্রাইসের ঝুলিতে রয়েছে ১৩টি উইকেট।
এহেন জিম্বাবোয়ে বাঁ-হাতি স্পিনার ক্রিকেটজগতে সমীহ আদায় করে নিয়েছিলেন ২০০২ ভারতের মাটিতে টেস্ট সিরিজ খেলতে এসে। নাগপুর টেস্টে দুই ইনিংসেই প্রাইসের শিকার হয়েছিলেন মাস্টার-ব্লাস্টার। এরপর ওই সিরিজেই দিল্লি টেস্টে প্রথম ইনিংসে সচিন তেন্ডুলকরকে প্যাভিলিয়নে ফিরিয়েছিলেন রে প্রাইস। খোদ তেন্ডুলকর মুগ্ধ ছিলেন প্রাইসের বোলিংয়ে। ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন জিম্বাবোয়ের ক্রিকটারের।
২০০২ দেশের মাটিতে প্রাইসের বোলিংয়ে সচিন তেন্ডুলকর এতোটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে ন’বছর বাদে আইপিএলে তাঁকে দলে দেওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করেননি ভারতীয় ক্রিকেটের মহীরুহ। যদিও একটিমাত্র ম্যাচেই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার সুযোগ হয়েছিল চল্লিশোর্ধ্ব প্রাক্তন স্পিনারের। বেশি সুযোগ পেলে নিজেকে প্রমাণ করে দিতেন বলেও জানিয়েছিলেন রে প্রাইস।
ভারতে খেলতে এসে দারুন এক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছিলেন রে প্রাইস। তিনি বলছিলেন, ''টেস্ট খেলতে দিল্লিতে গিয়েছিলাম। ম্যাচের দুদিন আগে দিল্লির চিড়িয়াখানায় গিয়েছিলাম ঘুরতে। ওখানে যিনি হাতিদের দেখভাল করেন তিনি হঠাত্ এগিয়ে এসে বলেন, স্যর আমার ছেলে বাঁ-হাতি স্পিনার। ও আপনার বড় ভক্ত। ওই অভিজ্ঞতা কখনও ভুলব না।"
২০১৩ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের পর হারারেতে একটি খেলাধূলার সরঞ্জাম বিক্রির দকান খুলেছিলেন প্রাইস। সেই ব্যবসা খুব একটা চলেনি। যার ফলে সমস্যায় পড়ে ছিলেন প্রাইস ও তার পরিবার। অন্ধকার নেমে এসেছিল তাদের জীবনে।
খেলার মাঠের লোক হওয়ায় সে ব্যবসা পুরোপুরি বন্ধ করেননি রে প্রাইস। তার পাশাপাশি শুরু করেছেন এসি মেকানিকের কাজও। একসময়কার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার, সচিন তেন্ডুলকরের উইকেট শিকারী এখন লোকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এসি সারানোর কাজ করেন।
ভাগ্যের নির্মম পরিহাসেও হার স্বীকার করেননি জিম্বাবোয়ের প্রাক্তন ক্রিকেটার। ২২ গজে অনেক লড়াইয়ের সাক্ষী থেকেছেন তিনি। তাই জীবন যুদ্ধের এই বাউন্সার বা ইয়র্কার তার উইকেট নিতে পারবে না বলেই জানিয়েছেন রে প্রাইস।