বাড়ির তৈরি খাবার শরীরের সঙ্গে ভালো রাখে মানসিক স্বাস্থ্য, গবেষণায় উঠে এল তথ্য
- FB
- TW
- Linkdin
সদ্য একটি সমীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। সেই সমীক্ষা অনুসারে, রান্না ঘরে (Kitchen) পারদর্শী হলে, সুস্বাস্থ্য বজায় থাকার সঙ্গে ভালো থাকবে আপনার মানসিক স্বাস্থ্য। রিপোর্ট অনুসারে, বাড়ির রান্না খেলে যেমন স্বাস্থ্য ভালো থাকে, তেমনই উন্নতি হয় মানসিক স্বাস্থ্যের। এমনকী, যারা রান্নায় পারদর্শী তাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
এডিথ কোওয়ান ইউনিভার্সিটি (Edith Cowan University) নেতৃত্বে একটি গবেষণা হয়। ফ্রন্টিয়ার্স ইন নিউট্রিশন নামে একটি জার্নালে এই গবেষণার রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছিল। গবেষণাটি করা হয় শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য প্রসঙ্গে। সেখানেই উঠে এসেছে বাড়ির রান্নার গুরুত্বের কথা। সদ্য প্রকাশিত হয়েছে সেই গবেষণার ফল।
২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত গবেষণা হয়। ৬৫৭ জন এতে অংশ নিয়েছিলেন। তাঁরা সাত সপ্তাহের জন্য একটি রান্নার কোর্সে (Cooking course) যোগ দেন। সেই কোর্স চলাকালীন এই সকল অংশগ্রহণকারীদের শারীরিক ও মানসিক উভয় ক্ষেত্রে পর্যবেক্ষণ করা হয়। সেই গবেষণাতেই জানা গিয়েছে, রান্না ঘরে পারদর্শী হলে, সুস্বাস্থ্য বজায় থাকার সঙ্গে ভালো থাকবে আপনার মানসিক স্বাস্থ্য।
গবেষণা (Research) অনুসারে, বাড়ির রান্না খেতে আমার শরীর সুস্থ থাকে। ঘরে তৈরি খাবার রেস্তোরাঁ অথবা প্রক্রিয়াজাত খাবারের থেকে বহুগুণে স্বাস্থ্যকর হয়। এই স্বাস্থ্যকর খাবার আমাদের শারীরিক সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে। অন্যদিকে, স্বাস্থ্যকর খাবার প্রভাব ফেলে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর। গবেষণা বলছে, রান্নায় পারদর্শ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে।
রান্না করতে আত্মবিশ্বাস (Confidence) বাড়ে। রান্নার কাজে ছেলে ও মেয়ে উভয় যোগ হতে পারেন। আর ছেলে ও মেয়ে উভয়েরই রান্না করার প্রতি আগ্রহ জন্মাতে দেখা যায়। জানা গিয়েছে, রান্নায় পারদর্শীতা খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করার ক্ষমতা রাখে। ফলে, জীবনধারারা বাধাগুলো কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। সে কারণে, রান্না করতে ভালোবাসের যারা তারা মানসিক ভাবে সুস্থ থাকেন।
অনেকের কাছে রান্না স্ট্রেস বাস্টার (Stress Buster) হিসেবে কাজ করে। রান্না করাটা এক ধরনের শখ। বর্তমান যুগে নানা কারণে আমরা মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। মানসিক অশান্তি, মানসিক দ্বন্দ্ব এগুলো খুব সহজে মানুষকে গ্রাস করে। তাই স্ট্রেস বা মানসিক সমস্যা কাটাতে চাইলে রান্না করতে পারেন। নতুন নতুন রেসিপি ট্রাই করুন, এতে মানসিক চাপ কমবে।
গবেষক ড জোয়ান রিস বলেন, গবেষণায় মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য খাদ্যের গুরুত্ব আছে। তিনি বলেন, মানুষের খাদ্যাভ্যাসের উন্নতি করলে মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য ভোলা থাকেবে। এমনকী, স্থূলতা ও বিপাকী সমস্যারের মতো একাধিক ব্যাধিগুলো কম হবে। তাঁর মতে, স্বাস্থ্যকর খাবারই মানুষকে যে কোনও জটিলতা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে ফল ও শাকসবজি খেলে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। পুষ্টিকর খাবার শুধু সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে এমন নয়। সঙ্গে মস্তিষ্কের ওপর প্রভাব ফলে। এমনকী, মস্তিষ্কের বিকাশের জন্যও প্রয়োজন পুষ্টিগুণে ভরপুর খাবার। এই সকল খাবার শারীরিক ও মানসিক উভয় স্বাস্থ্যই ভালো রাখতে সাহায্য করে।
বর্তমানে, অধিক ওজনের সমস্যায় অনেকেই ভুগছি। স্হূলতা একাধিক রোগের কারণ হতে পারে। এই জটিলতা থেকে মুক্তি পেতে সবার আগে খাদ্যাভ্যাস বদলের নির্দেশ দেন ডায়টেশিয়ানরা। ঘরে তৈরি স্বাস্থ্যকর খাবার সব সময় ওজন কমাতে সাহায্য করে। এক্ষেত্রে, অনেকের মতে সঠিক ডায়েট করতে গেলে নিজের রান্না নিজে করাই ভালো। এতে বেশি ক্যালোরি শরীরে প্রবেশ করতে পারবে না।
তাই সুস্বাস্থ্যের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে চাইলে বাড়ির তৈরি স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া শুরু করুন। বাড়ির তৈরি সুস্বাসু খাবার শরীরের সঙ্গে ভালো রাখে মানসিক স্বাস্থ্য। খাদ্যতালিকায় রাখুব সবজি ও ফল। সঙ্গে বাদ দিন প্রক্রিয়া জাত খাবার। এতে পরিমাণের অধিক নুন ও চিনি থাকে, যা অসুস্থতার কারণ হতে পারে।