দেশ জুড়ে পালিত হচ্ছে জাতীয় টিকাকরণ দিবস, জেনে নিন দিনটির মাহাত্ম্য
- FB
- TW
- Linkdin
সময়ের সঙ্গে বাড়ছে রোগ। প্রতি নিয়ত এই সকল রোগের সঙ্গে প্রতিষেধক (Vaccine) তৈরিতে ব্যস্ত চিকিৎসকেরা। কারণ রোগের সঙ্গে লড়াই করতে প্রয়োজন টিকা বা প্রতিষেধকের। টিকারকরণের ওপর ভিত্তি করে চলছে চিকিৎসা। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, সঠিক সময় রোগের টিকি নিলে যে কোনও রোগ থেকে বাঁচা সম্ভব।
কিছুদিন আগেই আমরা দেখেছি, সারা বিশ্বের সকল চিকিৎসকরা, করোনা (Corona) থেকে মুক্তি পেতে ভ্যাকসিন নেওয়ার প্রতি জোড় দিচ্ছেন। তবে, শুধু করোনা মোকাবিলায় নয়, একাধিক রোগ প্রতিরোধে ভ্যাকসিন নেওয়া হয়ে থাকে। মানবদেহকে নির্দিষ্ট রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য টিকা দেওয়া হয়ে থাকে। সে কারণে ছোট থেকে বৃদ্ধ সব বয়সে মানুষকে টিকা দেওয়া হয়ে থাকে।
বাচ্চা জন্মানোর পর থেকে একাধিক টিকা দেওয়া হয় বাচ্চাদের। এক একটা বয়সে এক এক রকম রোগের টিকা। এই তালিকায় হেপাটাইটিস, থ্যালাসেমিয়া, ডিপথেরিয়া, টিটেনাস, ইনফ্লুয়েঞ্জা-র মতো বিভিন্ন রোগের টিকা দেওয়া হয়। এছাড়া পোলিও-র মতো রোগের টিকা দেওয়া হয়ে থাকে। শুধু ছোট বয়সে নয়, কঠিন রোগ থেকে বাঁচতে বড় বয়সেও টিকা নিতে হবে পারে।
টিকাকরণের এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে চালু হয়েছে ভ্যাকসিনেসন ডে (National Vaccination Day)। আজ ১৬ মার্চ বিশ্ব জুড়ে পালিত হচ্ছে, জাতীয় টিকাকরণ দিবস। টিকাকরণের দ্বারাই আমরা বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাই। শুধু ছোটরা নয়, বৃদ্ধ বয়সেও নিতে হয় টিকা। টিকার মাধ্যমে শরীরে রোগ নির্দিষ্ট রোগের সঙ্গে লড়াই করার জন্য প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলা হয়।
১৯৯৫ সাল থেকে এই দিনটে ভারতে প্রথম ওরাল ভ্যাকসিন দেওযা হয়েছিল। তারপর থেকে টানা চলছে পোলিও টিকা কর্মসূচি। এই টিকাকরণের দ্বারা ভারতে লাগাম টানা গিয়েছে এই রোগের। এমনকী, ভারতকে পোলিও ফ্রি নেশের তকমা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সেই থেকে এই দিনটি পোলিওর টিকা দেওয়া হয়ে থাকে। শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে আয়োজিত হয় ক্যাম্প।
জাতীয় টিকারকরণ দিবসে পালস পোলিতও প্রোগ্রামও পালিত হয় ভারতে। এই কারণে, বিভিন্ন অঞ্চলে একাধিক ক্যাম্প বসে। যেখানে বিনামূল্যে বাচ্চাদের পোলিতও খাওয়ানো হয়ে থাকে। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা সাময়িক কিংবা স্থায়ীভাবে শারীরকি ক্ষতির সম্মুখীন হন। ও তার অঙ্গ অবশ হয়ে যায়। সঠিক বয়সে এই রোগের টিকা দিলে, রোগ থেকে মুক্তি সম্ভব।
প্রতি বছর জাতীয় টিকাকরণ দিবসে আলাদা আলাদা থিম বেছে নেওয়া হয়। ২০২২ সালে জাতীয় টিকাকরণ দিবসের থিম হল Vaccines for All. টিকাকরণের গুরুত্ব ও প্রাণঘাতী রোগ থেকে কীভাবে রক্ষা করে টিকাকরণ, তা সাধারণকে জানানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এই বছর। টিকার গুরুত্ব তুলে ধরা হবে সাধারণের সামনে। সঙ্গে যে সকল ব্যক্তিরা এখনও এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত তাদের কথা বিশেষ ভাবে দেখা হবে।
টিকা কীভাবে প্রাণঘাতী রোগ থেকে মানুষকে বাঁচায়, তা নিয়ে সচেতনকা বৃদ্ধিত উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবছর জাতীয় টিকাকরণ দিবসে। বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে, করোনার টিকাকরণ নিয়ে। কারণ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে দাবি, ২ থেকে ৩ মিলিয়ন লোক টিকাকরণের জন্য প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন। ফলে, এই রোগ থেকে বাঁচতে টিকা বা ভ্যাকসিন নেওয়া প্রয়োজন।
টিকাকরণ শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বিকাশ করে। যে কোনও রোগের ঝুঁকি কমায় টিকাকরণ। টিবি, টিটেনাস ইত্যাদির মতো মারণ রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও, একাধিক কঠিন রোগের থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব টিকাকরণের জন্য। সদ্য তারই প্রমাণ মিলেছে করোনা রোগের ক্ষেত্রে।
প্রতি বছর ১৬ মার্চ টিকাকরণ দিবস হিসেবে পালিত হয়। টিকাকরণের তাৎপর্য বোঝাতে ও জনস্বাস্থ্যে এর ভূমিকা চিহ্নিত করতে দিনটি নির্দিষ্ট করা হয়েছে। এই দিন, বিভিন্ন স্থানে নানা রকম অনুষ্ঠান ও ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়ে থাকে। যেখানো রোগ প্রতিরোধে টিকার ভূমিকা নিয়ে বার্তা দেওয়া হয় সাধারণের উদ্দেশ্যে।