- Home
- Lifestyle
- Health
- এই বাঙালি IVF চিকিৎসকের রিসার্চ সারা ফেলেছিল, তাঁর সমস্ত গবেষণা বন্ধের নির্দেশও দেয় বাংলার তৎকালীন সরকার
এই বাঙালি IVF চিকিৎসকের রিসার্চ সারা ফেলেছিল, তাঁর সমস্ত গবেষণা বন্ধের নির্দেশও দেয় বাংলার তৎকালীন সরকার
- FB
- TW
- Linkdin
সুভাষ মুখোপাধ্যায় একজন এমন বাঙালি চিকিৎসক তিনি তাঁর বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়ের কাছে তাঁর গবেষণার ফল জানানোর ক্ষেত্রে কোনও সরকারি সাহায্য তো পাননি উল্টে তৎকালীন সরকারের দ্বারা তিনি প্রচণ্ড ভাবে বাধাপ্রাপ্ত হন এবং হতাশ হয়ে ১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ জুন আত্মহত্যা করতে বাধ্য হন। তার জীবন ও মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে তপন সিনহা 'এক ডক্টর কি মত' নামক হিন্দি চলচ্চিত্রটি পরিচালনাও করেন।
সুভাষ মুখোপাধ্যায় ১৯৫৫ সালে কলকাতা জাতীয় আয়ুর্বিজ্ঞান বিদ্যামন্দির থেকে এমবিবিএস পাশ করেন এবং প্রথম স্থান অর্জন করেছিলেন। তিনি সেই বছর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শারীরবিদ্যা বিষয়ে বিএসসি ডিগ্রী অর্জন করেন এবং ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক সচ্চিদানন্দ ব্যানার্জীর অধীনে প্রজনন শারীরবিদ্যা বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করেন।
এরপর চিকিৎসক মুখার্জী ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে ইংল্যান্ড যান এবং ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দে এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অধ্যাপক জন লোরেনের সঙ্গে গবেষণা করে লিউটিনাইজিং হরমোনের পরিমাপ নির্ণয়ের এক নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করে দ্বিতীয়বার পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করেন।
১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দের ৩রা অক্টোবর তিনি ভারতের প্রথম চিকিৎসক ও বিজ্ঞানী হিসেবে এক নল-জাত শিশুর জন্ম দিয়ে ইতিহাস স্থাপন করেন। তিনি এই শিশুটির নাম রাখেন দুর্গা ওরফে কানুপ্রিয়া আগরওয়াল।ব্রিটিশ বৈজ্ঞানিক প্যাট্রিক স্টেপটো ও রবার্ট জিওফ্রি এডওয়ার্ডস দ্বারা ওল্ডহ্যাম জেনারেল হসপিটালে পৃথিবীর প্রথম টেস্ট টিউব বেবি লুইস জন ব্রাউনের জন্ম দেওয়ার ৬৭ দিন পরে তিনি গবেষণা করে ভারতে দুর্গার জন্ম দেন।
এই ঘটনার পর আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে তাঁর গবেষণার সম্বন্ধে বক্তৃতা দিতে চাইলে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দিতে অস্বীকার করেন। এই গবেষণার স্বীকৃতি প্রদান না করে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্যদপ্তর তার গবেষণার সত্যতা সম্বন্ধেই সন্দেহ প্রকাশ করে ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ নভেম্বর পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।
এই কমিটি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের সমস্ত গবেষণা মিথ্যা বলে এই রায় দেয়। শাস্তি স্বরূপ সুভাষকে রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অব অপথ্যালমোলজি নামক প্রতিষ্ঠানের চক্ষু বিভাগে স্থানান্তরিত করে দেওয়া হয়, যার ফলে প্রজনন শারীরবিদ্যা সমন্ধে সমস্ত গবেষণা তাঁকে বন্ধ করে দিতে হয়।
তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আমলাতান্ত্রিকতা ও পশ্চিমবঙ্গের চিকিৎসক সমাজ দ্বারা ক্রমাগত বিদ্রুপ ও অপমানের শিকার হতে হয় এই বিশিষ্ট চিকিৎসক-রে। শেষ পর্যন্ত হতাশাগ্রস্থ হয়ে সুভাষ মুখোপাধ্যায় ১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ জুন কলকাতায় নিজের বাসভবনে আত্মহত্যা করেন তিনি।