- Home
- India News
- হার্ড ইমিউনিটির দিকে এগোচ্ছে মুম্বই, দাবি পুরনিগমের, ভ্যাকসিনেক বিকল্প নেই বলছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক
হার্ড ইমিউনিটির দিকে এগোচ্ছে মুম্বই, দাবি পুরনিগমের, ভ্যাকসিনেক বিকল্প নেই বলছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক
- FB
- TW
- Linkdin
সম্প্রতি রাজধানী দিল্লিতে করা একটি সেরো সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে সেখানে ২২.৮৭ শতাংশ মানুষের শরীরে করোনার প্রতিরোধ শক্তি তৈরি হয়ে গিয়েছে। কলকাতা-হাওড়ার কুড়ি শতাংশ মানুষের শরীরে এমন প্রতিরোধশক্তির অস্তিত্ব মিলেছে। তবে মুম্বই থেকে সেরো সমীক্ষায় যে তথ্য উঠে এসেছে সেটা আরও চাঞ্চল্যকর।
বাণিজ্যনগরীর বস্তিবাসির মধ্যে সেই সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে যে বস্তিতে বসবাসকারী মানুষের ৫৭ শতাংশের শরীরেই এই ভাইরাসের প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠেছে। বস্তি নয়, এমন এলাকার ১৬ শতাংশ মানুষের শরীরে এই প্রতিরোধী শক্তির অস্তিত্ব মিলেছে।
নীতি আয়োগ, গ্রেটার মুম্বই পুর কর্পোরেশন ও টাটা ইনস্টিটিউট অব ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ যৌথ ভাবে মুম্বই এলাকায় সেরোলজিক্যাল সমীক্ষা চালিয়েছিল। সমীক্ষার জন্য জুলাই মাসের প্রথম দু’সপ্তাহ ধরে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। মুম্বই পুর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে স্বেচ্ছাসেবীরা সংগ্রহ করেছিলেন সেখানকার বাসিন্দাদের রক্তের নমুনা।
সেরোলজিক্যাল সমীক্ষায় রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে চিকিৎসকরা রক্তে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি পরীক্ষা করেন। কেউ কোনও রোগে আক্রান্ত হলে তাঁর শরীরে ওই রোগের অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট অ্যান্টিবডির উপস্থিতি অতীতে ওই রোগে আক্রান্ত হওয়া বোঝায়। এই ধরনের সমীক্ষার মাধ্যমে কত জন আক্রান্ত হয়েছেন তাঁর পাশাপাশি, কোনও গোষ্ঠীর মানুষ কতটা হার্ড ইমিউনিটির দিকে এগিয়েছেন তাও বোঝা যায়।
জুলাইয়ের প্রথম দুই সপ্তাহে মুম্বইয়ের সাত হাজার জন মানুষের মধ্যে এই সমীক্ষা চালানো হয়। প্রতিরোধক্ষমতা গড়ে উঠেছে কি না, সেটা জানার জন্য সমীক্ষায় যোগ দেওয়া মানুষের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেন চিকিৎসকরা। সমীক্ষা বলছে বাণিজ্য নগরীতে বহু সংখ্যক মানুষ নিজেদের অজান্তেই করোনায় সংক্রমিত হয়েছিলেন এবং নিজেদের অজান্তেই সেই রোগ থেকে সেরেও উঠেছেন।
এই ধরনের সমীক্ষার দু’টো উদ্দেশ্য। প্রথমত, করোনাভাইরাস কতটা ছড়িয়েছে সেটা আন্দাজ পাওয়া যায়। দ্বিতীয়ত, কোনো অঞ্চল, শহর, রাজ্য বা দেশ গোষ্ঠী-প্রতিরোধক্ষমতা বা হার্ড ইমিউনিটির দিকে এগোচ্ছে কি না, সেটাও বোঝা যায়।
ভারতে করোনাভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত শুরু হয়েছিল মুম্বই থেকেই । বাণিজ্যনগরী থেকে ক্রমশ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে এই ভাইরাস। প্রশাসনের হাড় হিম হয়ে যায় যখন ভাইরাসের অস্তিত্ব টের পাওয়া যায় ধারাবি বস্তি থেকেও।
ধারাবিতে সংক্রমণ আটকানোর জন্য আগ্রাসী ভূমিকা নিয়ে মাঠে নামে বৃহন্মুম্বই পুরনিগম। গুচ্ছের টেস্ট, উপসর্গ থাকলেই কোয়ারান্টাইনের ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে ওই বস্তি অঞ্চলে এই ভাইরাসকে অনেকটাই কাবু করা গিয়েছে। এখন মোটে দেড়শো জন সক্রিয় রোগী রয়েছে এই বস্তিতে।
তবে সেরো সমীক্ষায় যা তথ্য উঠে এসেছে, তাতে আদতে নিজেদের অজান্তে করোনায় সংক্রমিত হয়ে সেরে উঠেছেন আরও অন্তত লক্ষাধিক মানুষ। এই সমীক্ষায় বলা হয়েছে, নিজেদের অজান্তে করোনায় সংক্রমিত হয়ে সেরে ওঠার ব্যাপারটি এই দেশে এতটাই বেশি, যে এখানে প্রকৃত মৃত্যুর হার ০.০৫ থেকে ০.১০ শতাংশের বেশি হতেই পারে না।
সেরো রিপোর্ট যা আভাস দিচ্ছে তাতে মুম্বই হার্ড ইমিউনিটির দিকে এগোচ্ছে বলেই দাবি করছে গ্রেটার মুম্বই পুর কর্পোরেশন। এই পরিস্থিতিতে ১০ আগস্ট থেকে মুম্বইতে ফের একবার সেরো সার্ভে করা হবে বলে জানাচ্ছে পুরনিগম। পাশাপাশি দিল্লির মতো মুম্বইও করোনার চূড়া পেরিয়ে গিয়েছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে ভারতের মতো দেশে করোনার ঢেউ রুখতে পারবে না হার্ড ইমিউনিটি, স্পষ্ট জানিয়ে দিল স্বাস্থ্যমন্ত্রক।
স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানাচ্ছে, ভারতের মতো অত্যধিক জনসংখ্যার দেশে হার্ড ইমিউনিটি করোনার এই প্রবল ঢেউকে রুখতে পারবে না । তার জন্য দরকার ভ্যাকসিন । ভ্যাকসিনই একমাত্র দেশবাসীকে এই মারণ রোগের হাত থেকে বাঁচাতে পারে ।