মহামারীতে মৃত্যু দেখেছিল ঠাকুর পরিবারও, জানুন সেই মৃত্যযন্ত্রণার কাহিনি
- FB
- TW
- Linkdin
সালটা ১৯১১। একের পর এক মহামারীর প্রকোপ যেন ক্রমশই বেড়েই চলেছিল। তাদের মধ্যে অন্যতম হল প্লেগ,কালাজ্বর, কলেরা।
সেসময় কলকাতায় ছড়িয়ে পড়েছিল প্লেগ রোগ। শুধু ছড়িয়ে যাওয়া নয়, এতটাই ভয়াবহ আকার নিয়েছিল যে আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসুও বাড়িছাড়া হয়েছিলেন।
বাড়ি ছাড়ার পর আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু রবীন্দ্রনাথকে চিঠির মাধ্যমে সেকথা জানিয়েওছিলেন। এমনকী নতুন ঠিকানাও জানিয়েছিলেন।
তখনও পর্যন্ত কোনও টিকা আবিষ্কার হয়নি। এদিকে প্লেগ রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে সারা শহর জুড়ে। আক্রান্ত হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু। চিকিৎসার কোনও সুযোগও দেয়নি এই মহামারি।
এই মহামারী পৌঁছেছিল জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়িতেও। বাড়ির দুই মেথর প্রথম এই মারণ রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তারপরই চিন্তিত হয়ে পড়েন রবীন্দ্রনাথ।
চারিদিকে এত মৃত্যুর আকুত কন্ঠে অবশেষে নিজেই দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি। শুরু করেছিলেন প্লেগ বানানোর কাজ। তবে তিনি একা নন, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ভগিনী নিবেদিতাও যোগ দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথের এই প্রয়াসে।
প্রতিটি পাড়ায় পাড়ায় শুরু হয়েছিল পর্যবেক্ষণ। চিকিৎসা, নার্সদের সঙ্গে নিয়েই চলত এই প্রক্রিয়া।
এতটাই ভয়াবহ হয়েছিল এই রোগ যে ১৯১১ সালে বাংলায় আর সেভাবে জনসংখ্যা বৃদ্ধিও হয়নি।
অবশেষে ঠাকুর পরিবারে ঠুকে গিয়েছিল এই মারণ রোগ। প্লেগে আক্রান্ত হয়েছিলেন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মেয়ে। মাত্র ১০ বছর বয়সেই তার মৃত্যু হয়েছিল। গোটা ঠাকুর পরিবার সেই মৃত্যুযন্ত্রণা কাছ থেকে দেখেছিল।
আজও সেই কালো দিন। গোটা দেশকে গ্রাস করেছে করোনা নামের এক মারণ ভাইরাস। হাজারো প্রচেষ্টা করেও থামানো যাচ্ছে না তাকে। অবশেষে একটানা লকডাউনের পথে হেঁটেছে সরকার।করোনা আবহে এ বছর কিছুটা হলেও ফিকে হয়েছে রবীন্দ্রজয়ন্তীর অনুষ্ঠান। তবুও বাঙালির জীবনে, বাঙালির মননে, বাঙালির হৃদয়ে চিরকালই উজ্জ্বল উপস্থিতি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের।