মারাদোনা থেকে রোসি, পিকে থেকে চুনি, ২০২০-তে খেলা পাগল বাঙালি হারাল অনেক কিছু
- FB
- TW
- Linkdin
পিকে বন্দোপাধ্যায়ঃ
ভারতীয় ফুটবলের কিংবদন্তি তথা স্বর্ণযুগের অধিনায়ক প্রদীপ কুমার বন্দোপাধ্যায় গত ২০ মার্চ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দেশের ফুটবলের মহীরুহ হিসেবে বিবেচনা করা হয় প্রাক্তন এই ফুটবলার এবং দিকপাল কোচকে। দীর্ঘদিন ধরে হৃদযন্ত্রের সমস্যা সহ অন্যান্য রোগভোগের পর ৮৪ বছর বয়সে তিনি পাড়ি দেন না ফেরার দেশে। পিকের 'পেপ টক' চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে ময়দানে।
চুনী গোস্বামীঃ
পিকে বন্দোপাধ্যায় চলে যাওয়ার ঠিক কয়েকদিন বাদেই ভারতীয় ফুটবল হারায় তার আরও এক কিংবদন্তি চুনী গোস্বামীকে। ১৯৬২ এশিয়ান গেমসে সোনাজয়ী ভারতীয় ফুটবল দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। ফুটবলের পাশাপাশি ক্রিকেটেও সমান পারদর্শী চুনী গোস্বামীর নেতৃত্বে ১৯৭১-৭২ রঞ্জি ট্রফি ফাইনালও খেলেছিল বাংলা। ১৯৮৩ পদ্মশ্রী, ২০০৫ মোহনবাগান রত্নে ভূষিত হয়েছিলেন এই দিকপাল। দীর্ঘ রোগভোগের পর গত ৩০ এপ্রিল হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় এই কিংবদন্তির।
নিখিল নন্দীঃ
২০২০-র শেষ লগ্নে এসে ভারতীয় ক্রীড়া ক্ষত্রে আরও এক নক্ষত্রপতন হয়। প্রয়াত হন কিংবদন্তী অলিম্পিয়ান ফুটবলার নিখিল নন্দী। দীর্ঘিদন ধরে অসুস্থ ছিলেন তিনি। ২৯ ডিসেম্বর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ১৯৫৬ সালে মেলবোর্ন অলিম্পিকে চতুর্থ স্থানাধিকারী ভারতীয় ফুটবল দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৫৮-য় তাঁর নেতৃত্বেই দুই প্রধান ইস্ট-মোহনকে টপকে কলকাতা লিগ জেতে ইস্টার্ন রেল।
বলবীর সিং সিনিয়রঃ
গত মে মাসে চলে গেলেন তিনবারের অলিম্পিক সোনাজয়ী দলের সদস্য বলবীর সিং সিনিয়র। ১৯৪৮, ১৯৫২, ১৯৫৬ টানা তিনটি অলিম্পিকে সোনাজয়ী ভারতীয় দলের সদস্য ছিলেন এই কিংবন্তি। পরবর্তীতে পদ্মশ্রী, মেজর ধ্যানচাঁদ লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট সম্মানে সম্মানিত হয়েছিলেন তিনি। বার্ধক্যজনিত কারণেই মৃত্যু হয় তাঁর। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর।
দিয়েগো মারাদোনাঃ
এ তালিকায় সবথেকে বড় তারকা নিঃসন্দেহে ফুটবলের রাজপুত্রই। একটা প্রজন্মকে ফুটবল ভালবাসতে শিখিয়েছেন মারাদোনা। প্রায় একার কাঁধে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ এনে দেওয়া কিংবা অবনমনে থাকা ইটালিয়ান ক্লাব নাপোলিকে ইউরোপ সেরা করা, বিশ্বাস্য কীর্তির ইয়ত্তা নেই তাঁর। ২৫ নভেম্বর নিজ বাসভবনে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে মৃত্যু হয় তাঁর।
চেতন চৌহানঃ
১৬ আগস্ট ৭৩ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান এই প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার। ৪০টি টেস্ট খেলে তাঁর সংগ্রহ মোট ২০৮৪ রান। সুনীল গাভাসকরের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে অত্যন্ত সফলভাবে ভারতীয় ইনিংস শুরু করেছেন তিনি।
ডিন জোন্সঃ
প্রাক্তন অজি অলরাউন্ডারটির এ বছর আইপিএল চলাকালীন আকস্মিক মৃত্যু হয়। ২৪ সেপ্টেম্বর মুম্বইয়ের হোটেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সকলের আদরের ‘ডিনো’। প্রায় আট বছর ধরে অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে ব্যাগি গ্রিন টুপি সামলেছিলেন তিনি।
পাওলো রোসিঃ
মারাদোনার মৃত্যুর এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই মারা যান আর এক বিশ্বজয়ী ফুটবলার। ১৯৮২-র বিশ্বকাপে গোল্ডেন বুট, গোল্ডেন বল দুটোই জেতেন রোসি। সে বছরেই জেতেন ব্যালন ডো’র পুরস্কার। ক্লাব ফুটবলেও তিনি রেখে গিয়েছেন অনন্য সব কীর্তি।
জেরার্ড হাউলিয়ারঃ
১৪ ডিসেম্বর ৭৩ বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন লিভারপুলের কিংবদন্তি ফরাসি কোচ জেরার্ড হাউলিয়ার। ১৯৯৮-২০০৪ তাঁর কোচিংয়ে ৫টি মেজর খেতাব এসেছিল রেডস’দের ঘরে। যার মধ্যে ২০০০-০১ ত্রিমুকুট জিতেছিল লিভারপুল। ওই মরশুমে উয়েফা কাপ, এফএ কাপ এবং লিগ কাপ জিতেছিল লিভারপুল।
কোবে ব্রায়ান্টঃ
কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের আগে ২৬ জানুয়ারি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান নামী বাস্কেটবল তারকা কোবে। বয়স হয়েছিল মাত্র ৪২। সঙ্গে ছিল তাঁর ১৩ বছরের কন্যাসন্তান গিগি, মৃত্যু হয় তারও। তাঁর মৃত্যুতে শুধু বাস্কেটবল নয়, শোকস্তব্ধ হয় সমগ্র ক্রীড়াদুনিয়া।