- Home
- World News
- International News
- ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে চিনকে তুলনা আমেরিকার, ফের নতুন করে উত্তেজনা বাড়ছে সাগরে
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে চিনকে তুলনা আমেরিকার, ফের নতুন করে উত্তেজনা বাড়ছে সাগরে
দক্ষিণ চিন সাগরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে চিনকে ফের আরেকবার বিঁধল আমেরিকা। এছাড়া ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে বেজিং অবাধ আধিপত্য বিস্তার করতে চাইছে এই ব্যাপারেও নিজের কড়া মনোভাব জানিয়ে রাখল ট্রাম্প প্রশাসন। এই বিষয়ে একদা সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে চিনকে তুলনা করলেন এক মার্কিন আধিকারিক।
- FB
- TW
- Linkdin
দক্ষিণ চিন সাগর নিয়ে ফের সংঘাতের রাস্তায় আমেরিকা এবং চিন। বিতর্কিত এই সাগর নিয়ে ফের একবার চিনকে হুঁশিয়ারি দিলেন মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেও।
ইতিমধ্যেই দক্ষিণ চীন সাগরে দুটি রণতরী পাঠিয়েছে আমেরিকা। এই রণতরী দুটির নাম হল ‘নিমিটজ’ ও ‘রোনাল্ড রেগান’। এই রণতরীগুলি হল ১২০টি যুদ্ধবিমান বহনকারী দুই মার্কিন এয়ারক্র্যাফ্ট ক্যারিয়ার।
পম্পেও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বেজিং যদি ভাবে যে তারা দক্ষিণ চিন সমুদ্রের একচ্ছত্র সম্রাট, তবে তারা খুব ভুল করছে। আমেরিকা তো এটা মানবেই না, উপরন্তু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় অন্যান্য বন্ধু রাষ্ট্রগুলির সার্বভৌমত্ব জলপথে ক্ষুন্ন হলেও আমেরিকা চুপ করে থাকব না।
মার্কিন বিদেশ সচিবের এহেন হুঁশিয়ারি ঘিরে ইতিমধ্যে তীব্র চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। তারমধ্যে পম্পেওর এহেন হুঁশিয়ারিকে সমর্থন করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন ডোনাল্ড ট্রাম্পও। এর ফলে দক্ষিণ চিন সাগরকে ঘিরে নতুন করে উত্তেজনা আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।
দক্ষিণ চিন সাগরের পাশাপাশি হংকং ইস্যুতেও আমেরিকা ক্ষুব্দ। তা নিয়েই চিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে হুঁশিয়ারি এবং পালটা হুঁশিয়ারি চলছে। সামরিক পর্যবেক্ষকরা জানাচ্ছেন, পম্পেও যেভাবে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন তাতে দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বহুগুণ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রকাশিত তথ্য বলছে, ১৯৪৭ সালে তৈরি চিনা কার্টোগ্রাফিক ইনস্ক্রিপশনের ‘নাইন ড্যাশড লাইন’ অনুসারেই দক্ষিণ চিন সাগরের ৯০ শতাংশ নিজের দখলে রাখতে চায় চিন। কিন্তু পম্পেও জানাচ্ছেন, ১৯৮২ সালের ল অফ সি কনভেনশনের সংশোধনী অনুসারে ২০১৬ সালেই সমুদ্র নিয়ন্ত্রণের আগের অধিকার খুইয়েছে চিন।
শুধু ক্ষমতা এবং অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে দক্ষিণ চিন সাগরের উপর ক্ষমতা ধরে রাখা যাবে না বলে সাফ জবাব আমেরিকার।
১৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ দক্ষিণ চিন সাগর মালবাহী জাহাজ চলাচল এবং পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য। গোটা বছরে এই অঞ্চলের উপর দিয়ে তিন ট্রিলিয়ন ডলারের পণ্য যাতায়াত করে। সেই কারণে দক্ষিণ চিন সাগরের একটা বিশাল অংশকে নিজেদের কব্জায় রেখেছে চিন। যেখানে প্রতিবেশী দেশগুলিকে দমিয়ে সামরিক মহড়াও চালায় বেজিং।
যদিও পালটা দক্ষিণ চিন সাগরে শক্তিপ্রদর্শন করে আমেরিকা। যেমন গত কয়েকদিন আগেই দক্ষিণ চিন সাগরে দুটি যুদ্ধ জাহাজ পাঠায় আমেরিকা। যদিও এর পালটা শক্তি প্রদর্শন করতে সামরিক মহড়া শুরু করে চিন বার্তা দেয় যে, এই জলপথের তারাই মালিক।
এদেকি দক্ষিণ চিন সাগর নিয়ে আমেরিকার নাক গলানো একেবারেই বরদাস্ত করতে নারাজ চিন। বেজিং দাবি করছে এটা ‘একেবারেই অযৌক্তিক’।
আমেরিকায় চিনা দূতাবাসের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘দক্ষিণ চিন সাগর নিয়ে বিরোধে আমেরিকা কোনও ভাবেই সরাসরি জড়িত নয়। তা সত্ত্বেও এই বিষয়ে নাক গলিয়ে চলেছে।’’চিনা দূতাবাসের বিবৃতিতে দক্ষিণ চিন সাগরে দীর্ঘ দিন ধরে আমেরিকার পেশিশক্তি প্রদর্শনেরও কড়া সমালোচনা করা হয়েছে।
বাণিজ্য যুদ্ধের পর যদি আমেরিকার সঙ্গে সাম্প্রতিক কালে চিনের দ্বৈরথের আর কোনও প্রধান ক্ষেত্র থাকে, তা হলে সেটা দক্ষিণ চিন সাগর। যেখানে আরও বেশি কর্তৃত্ব কায়েম করার চেষ্টা যেমন গত কয়ক বছর ধরেই চালিয়ে যাচ্ছে বেজিং, তেমনই ওয়াশিংটনও দক্ষিণ চিন সাগর এলাকায় তার সহযোগী দেশগুলির স্বার্থরক্ষায় মরিয়া চেষ্টা শুরু করেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা পরিস্থিতিতে চিনকে আরও কোণঠাসা করতে আবার দক্ষিণ চিন সাগর ইস্যুটিকে সামনে আনতে চাইছে আমেরিকা।