সংক্ষিপ্ত
বর্তমানে করোনা অতিমারীর পাশপাশি মাথা চাড়া দিয়েছে মাঙ্কি পক্স আতঙ্ক। যতদিন এগোচ্ছে ক্রমশ এই ত্রাস আরও বেশি জোরালো আকার ধারণ করছে। তবে অনেকেই মাঙ্কি পক্সকে চিকেন পক্স ভেবে ভুল করছেন। জানুন কতটা আলাদা এই দুই রোগ? ঠিক কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
একদিকে করোনা ভাইরাসের চতুর্থ তরঙ্গ নিয়ে চিন্তায় গোটা দেশ। এই সবে মাত্র অতিমারির ত্রাস ভুলে আবার ও পুরোনো ছন্দে ফিরতে শুরু করেছিল মানুষ, এরই মাঝে ফের করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় তা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে সকলেরই। এবার এই আতঙ্কের পরিবেশের মাঝেই নয়া সংযোজন মাঙ্কি পক্স আতঙ্ক। বিশ্বজুড়ে কোভিড আতঙ্কের মাঝেই চিন্তা বাড়াচ্ছে মাঙ্কি পক্স। ভারতে এখনও পর্যন্ত এই ভাইরাস হানা না দিলেও ইতিমধ্যে পর্তুগাল, স্পেন, ইউরোপ ও আমেরিকার মতো বেশ কয়েকটি দেশে মাঙ্কি পক্সে আক্রান্ত রোগীর হদিশ মিলেছে।
মাঙ্কিপক্সের প্রথম কেসটি ধরা পড়েছিল ৭ মে। লন্ডনে এক ব্যক্তির শরীরে মাঙ্কি পক্সের ভাইরাস পাওয়া গিয়েছিল। আক্রান্ত ওই ব্যক্তি নাইজেরিয়ায় গিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছিল। সেখান থেকেই কোনওভাবে সংক্রমণ ছড়িয়েছে কি না তা নিয়ে এখনও কোনও স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায় নি। এই কেসটি ধরা পড়ার পর থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই রোগের আক্রান্তের খবর আসতে শুরু করে। প্রাথমিকভাবে এই রোগ আফ্রিকায় দেখা গেলেও তা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়া নিয়ে ফের করোনার মতোই ত্রাসের সঞ্চার করছে।
আরও পড়ুন- দ্রুত ছড়াচ্ছে মাঙ্কিপক্স, এটি কি কোভিড মহামারির আকার নিতে পারে? জানুন বিশেষজ্ঞদের মত
আরও পড়ুন- মন খারাপ থেকে ডিপ্রেশন? ম্যাজিকের মত কাজ দেবে এক গ্লাস হালকা গরম জল
আরও পড়ুন- কঠিন রোগ শরীরে বাসা বাঁধছে না তো? নিয়মিত দাঁতের পরীক্ষায় নির্ণয় হবে একাধিক রোগ
ঠিক কী ধরণের রোগ এই মাঙ্কি পক্স?
চিকিৎসকরা বলছেন, এটি এক বিশেষ ধরনের বসন্ত রোগ। প্রাণীদেহের মাধ্যমেই এই ভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে, ইঁদুরের মাধ্যমে এই ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে জানানো হয়েছে। সেই কারণেই বলা হচ্ছে, কাঠবেড়ালী বা ইঁদুর জাতীয় প্রাণীর থেকে দূরে থাকতে। তবে সমস্যা হল উপসর্গে সাদৃশ্য থাকায় অনেকেই এই রোগটিকে চিকেন পক্সের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলছেন।
মাঙ্কি পক্স ও চিকেন পক্সের উপসর্গে মিল
যদিও চিকেন পক্সে যে কষ্ট হয় তা মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তের তুলনায় অনেকটাই বেশি। তবে মাঙ্কিপক্সের উপসর্গগুলি প্রায় অনেকটা চিকেন পক্সের মতোই। যেমন:
* গায়ে ব়্যাশ
* প্রচণ্ড জ্বালা এবং চুলকানি
* কাঁপুনি দিয়ে জ্বর
* ক্লান্তিভাব
* প্রচণ্ড মাথাব্যথা ও সেইসঙ্গে গা-হাত-পা ব্যথা
মাঙ্কি পক্স ও চিকেন পক্সের পার্থক্য
বিশেষজ্ঞদের মতে, উপসর্গের দিক থেকে সাদৃশ্য থাকলেও মাঙ্কি পক্স সম্পূর্ণ নতুন একটি ভাইরাস। পাশাপাশি চিকেন পক্স রোগটির প্রতিকার থাকলেও এই মাঙ্কি পক্স নামক এই বিরল রোগ নিরাময়ের এখনও পর্যন্ত কোনও সুনির্দিষ্ট চিকিৎসাপদ্ধতি নেই বলেই জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। জানুন কোন কোন দিক থেকে আলাদা এই দুই রোগ?
* চিকেন পক্সে ৫-৭ দিনের মধ্যে শরীরে ফুসকুঁড়ির সৃষ্টি হয় ও ৭-১০ দিন পর থেকে তা শুকোতে থাকে। মাঙ্কি পক্সে ১-৩ দিনের মধ্যে ফুসকুঁড়ির সৃষ্টি হয় এবং ইনকিউবেশন পিরিয়ড ৫-২১ দিন পর্যন্ত হতে পারে
* চিকেন পক্স নিরাময়ের ওষুধ মাঙ্কি পক্সের ক্ষেত্রে কার্যকরী নয়
* চিকেন পক্স হলে লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়ার সমস্যা হয় না। তবে মাঙ্কিপক্সের কারণে শরীরের লিম্ফ নোডগুলো ফুলে যায়।