সংক্ষিপ্ত
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে, আইসিইউতে বেশির ভাগ মৃত্যুর কারণ মাল্টি অর্গান ফেইলইওর। এটি এমন একটি অবস্থা যখন অনেক অঙ্গ ধীরে ধীরে কাজ করা বন্ধ করে দেয়। কিন্তু কেন এমন হয়, জেনে নিন
৯২ বছর বয়সী লতা মঙ্গেশকর করোনভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পরে ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালের ICU-তে ভর্তি হন। সংবাদ সংস্থা ANI- এর প্রতিবেদনে মৃত্যুর কারণ হিসেবে মাল্টি অর্গান ফেইলইওর-এর বলা হয়েছে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথের রিপোর্ট অনুযায়ী, আইসিইউতে বেশির ভাগ মৃত্যুর কারণ মাল্টি অর্গান ফেইলইওর। ব্রীচ ক্যান্ডি হাসপাতালের চিকিৎসক প্রতিমা সামদানি, যিনি লতা মঙ্গেশকরের চিকিৎসা করছেন, তার বিবৃতিতে বলেছেন, কোভিড-পরবর্তী, হাসপাতালের চিকিৎসার ২৮ দিন পর মাল্টি অর্গান ফেইলইওর এর কারণে মৃত্যু হয়। এটি এমন একটি অবস্থা যখন শরীরের অনেক অঙ্গ ধীরে ধীরে কাজ করা বন্ধ করে দেয়। ফলে একই সঙ্গে অনেক সমস্যায় পড়তে হয় রোগীকে।
মাল্টি অর্গান ফেইলিওর কী, কেন হয়, সময়মতো কীভাবে বুঝবেন এবং কাদের ঝুঁকি বেশি, জেনে নিন এসব প্রশ্নের উত্তর।
মাল্টি অর্গান ফেইলিওর কী?
সহজে বলতে গেলে, যখন শরীরের দুই বা ততোধিক অঙ্গ একসঙ্গে কাজ করা বন্ধ করে দেয়, তখন এই অবস্থাকে বলা হয় মাল্টি অর্গান ফেইলইওর বা মাল্টিপল অর্গান ডিসফাংশন সিনড্রোম (MODS) বলে। এই ধরনের ক্ষেত্রে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, যা শরীরের অনেক অংশ-সহ রোগ থেকে রক্ষা করে, খারাপভাবে প্রভাবিত হয়।
কিভাবে বুঝতে হবে এর লক্ষণ
NCBI প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাল্টি অর্গান ফেইলইওরর ক্ষেত্রে, হেমাটোলজিক, ইমিউন, কার্ডিওভাসকুলার, শ্বাসযন্ত্র এবং অন্তঃস্রাবী সিস্টেমের উপর সরাসরি বিরূপ প্রভাব পড়ে। এর কারণে একই সঙ্গে রোগীর নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে থাকে। ফলে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোগীর অভ্যন্তরীণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার ওপর নির্ভর করে। তবে রোগীদের মধ্যে এর লক্ষণ ভিন্নভাবে দেখা দিতে পারে। সারাদিন প্রস্রাব না হলে, সহজে শ্বাস নিতে না পারলে, মাংসপেশিতে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভূত হলে বা শরীরে কাঁপুনি অনুভব করলে এগুলো মারাত্মক লক্ষণ। এই ধরনের ক্ষেত্রে, অবিলম্বে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
NCBI রিপোর্ট বলা হয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে হৃদপিণ্ড, ফুসফুস, কিডনির মতো অনেক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ফলে রোগীর অবস্থা সঙ্কটজনক হয়ে পড়ে।
কাদের এই রোগের ঝুঁকি বেশি এবং কীভাবে তা এড়ানো যায়?
দুই ধরনের রোগীদের মধ্যে মাল্টি অর্গান ফেইলইওরর ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। প্রথমত, যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে তাদের ক্ষেত্রে এটি সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। অর্থাৎ রোগের সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা কম।
দ্বিতীয়ত, যাদের অভ্যন্তরীণ আঘাতের ঝুঁকি বেশি। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের রোগীদের পর্যায়ক্রমিক পরীক্ষার সঙ্গে তাদের কিছু বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়। বিশেষ করে যদি আগে থেকেই কোনও রোগ থেকে থাকে, তাহলে তা নিয়ন্ত্রণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। তাই রোগী যদি আগে থেকেই অনেক রোগে ভুগে থাকেন, তাহলে তাকে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থেকে চিকিৎসা করাতে হবে।