সংক্ষিপ্ত

গবেষণায় বলা হয়েছে, গত ৪০ বছরে পুরুষের শুক্রাণুর সংখ্যা কমে প্রায় অর্ধেক হয়ে গেছে। শরীরে ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ মেশার কারণে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে হরমোন। 

মানুষের শরীর রাসায়নিক দূষণ আর বিষাক্ত জিনিসের আস্তাকুঁড়ে পরিণত হয়েছে। ইউরোপের একটি গবেষণায় উঠে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। যাতে বলা হয়েছে রাসায়নিক দূষণের কারণেই পুরুষের মধ্যে তৈরি হচ্ছে বন্ধ্যাত্বের সমস্যা। যা নিয়ে রীতিমত উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন গবেষকরা। 


গবেষণা রিপোর্ট- 
গবেষণায় বলা হয়েছে, গত ৪০ বছরে পুরুষের শুক্রাণুর সংখ্যা কমে প্রায় অর্ধেক হয়ে গেছে। শরীরে ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ মেশার কারণে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে হরমোন। তাই এই বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে,  দুধের কার্টন, টিন করা টুনা, ব্যাথার ওষুধ, প্যারাসিটামলের থাকা রাসায়নিক শরীরের ক্ষতি হচ্ছে। এই পদার্থগুলিতে থাকা রাসায়নিক শুক্রণুর সংখ্যা কমিয়ে দিচ্ছে। 

গবেষকরা ১৮-৩০ বছর বয়সী ডেনিশ পুরুষদের প্রস্রাবে বিসফেনল, ডাইঅক্সিন, থ্যালোটস আর প্যারাসিটামলের মিশ্রণের মাত্র বিশ্লেষণ করেছেন। 

এনভায়রনমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল জার্নালে প্রকাশিত এই সমীক্ষায় দেখা গেছে যে যেসব পুরুষের পরীক্ষা করা হয়েছে তাদের শরীরে নিরাপদ মাত্রার চেয়ে অনেকটাই বেশি পরিমাণে দুষিত পদার্থ রয়েছে।  কিছু ক্ষতিগ্রস্ত রাসায়নিকের মাত্রা নিরাপদ মাত্রার 100 গুণ বেশি ছিল। যেহেতু পুরুষের যৌন বিকাশের মূল ধাপগুলি গর্ভাবস্থায় শুরু হয়, তাই বিকাশমান শিশুরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে। 

এখনও পর্যন্ত পুরুষ বন্ধ্যাত্ব ও রাসায়নিত এক্সপোডারের গবেষণাগুলির ওপর দৃষ্টি নিক্ষেপ করা হয়েছিল। নতুন এই গবেষণা রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিসফেনল, পরিক্লোরিনেড ডাইঅক্সিন ও প্যারাসিটামল বন্ধ্যাত্বকে আরও বেশি সক্রিয় করছে। 

লন্ডনের ব্রুনেল ইউনিভার্সিটির প্রফেরসর আন্দ্রেয়াস কর্টেনক্যাম্প বলেন এখনও পর্যন্ত পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী খাবারের মধ্যে দিয়ে ক্ষতিকারণ রাসায়নিক মানুষের শরীরে প্রবেশ করছে। দুধ ও টিনজাত খাবারে সবথেকে বেশি ক্ষতিকারক রাসায়নিক থাকে। তিনি আরও বলেছেন, কিছু রাসায়নিক পদার্থ কয়েক ঘণ্টার জন্য শরীরে থাকলেও তার প্রভাব মারাত্মক। তিনি আরও বলেন প্যারাসিটামল যখন শরীরে পৌঁছায় তা থেকেও বিষাক্ততা তৈরি হয়। যার প্রভাপ পড়ে শুক্রাণুর ওপর। 

প্যারাসিটামল নিয়ে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা। ইতিমধ্যেই নেচার জার্নাল গর্ভাবতী মায়েদের প্যারাসিটামল খেতে বারন করেছে। ৯০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে সকল দেশের হবু মায়েদের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে আবেদন জানিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন ওষুধ খাওয়ার আগে চিকিৎসক বা ফার্মাসিস্টের মতামত নেওয়া অত্যান্ত জরুরি।