সংক্ষিপ্ত

  • আমফানের মোকাবিলায় প্রস্তুত হাওড়া জেলা প্রশাসন
  • ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব হাওড়ার গ্রামীণ এলাকাতেও পড়বে
  • আশঙ্কা থেকেই আগেভাগে কন্ট্রোল রুমের কাজ শেষ
  •  বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ এই ঝড় স্থলভাগে প্রবেশের আশঙ্কা  

সন্দীপ মজুমদার, হাওড়াঃ এক্সট্রিমলি সিভিয়ার সাইক্লোন বা চরম শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আমফানের মোকাবিলায় সমস্ত রকম প্রস্তুতি নিল হাওড়া জেলা প্রশাসন। ভয়ঙ্কর শক্তিশালী এই সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব হাওড়ার গ্রামীণ এলাকাতেও পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের অধিকর্তা গণেশ কুমার দাস জানিয়েছেন, বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ এই ঝড় স্থলভাগে প্রবেশ করবে। তখন তার গতিবেগ ঘন্টায় ১৬৫ থেকে ১৭৫ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। 

সেই কারণে এই বিষয়ে হাওড়া জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যেই একটি কন্ট্রোলরুম খুলেছে। কন্ট্রোল রুমের ফোন নম্বর- ০৩৩-২৬৪১৩৩৯৩। হাওড়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে এই সামুদ্রিক ঝড়ের মোকাবিলার জন্য প্রশাসনিক স্তরে একাধিক বৈঠক করা হয়েছে। জেলার দু'টি মহকুমা এলাকার দুই মহকুমা শাসক সহ সমস্ত বিডিওদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তৈরি রাখা হয়েছে ক্যুইক রেসপন্স টিম। হাওড়া গ্রামীণ এলাকায় রূপনারায়ণ, দামোদর এবং হুগলি নদীর তীরবর্তী সমস্ত গ্রামবাসীদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সেচ বিভাগ সহ সমস্ত সরকারি দপ্তরের আধিকারিকদেরও পরিস্থিতির ওপর নজরদারি চালানোর কথা বলা হয়েছে। অতি শক্তিশালী এই ঘূর্ণিঝড় স্থলভাগে প্রবেশ করার সময় কলকাতা ও হাওড়ায় তার গতিবেগ ঘন্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যার প্রভাবে মাটির বাড়ি ভেঙে পড়তে পারে এবং পুরনো পাকা বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মানুষজনকে বাড়ির বাইরে বেরোতে নিষেধ করা হয়েছে। ঝড়ে গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি উপরে পড়তে পারে। 

এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ দপ্তরগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের জীর্ণ বাড়িতে না থেকে কোনও নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে ঝড়ের সময় সমস্ত বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সংযোগ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গ্রামবাসীদের পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার, পানীয় জল ও প্রয়োজনীয় ওষুধ মজুদ রাখার আবেদন জানানো হয়েছে। করোনা সংক্রমণ রোখার পাশাপাশি প্রশাসনকে এবার সামুদ্রিক ঝড়ের সঙ্গেও মোকাবিলা করতে হচ্ছে। উলুবেড়িয়ার মহকুমা শাসক তুষার সিংলা জানিয়েছেন আমফানের মোকাবিলায় সমস্ত রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আপৎকালীন ব্যবস্থা হিসাবে প্রচুর পরিমাণ খাদ্যদ্রব্য এবং ত্রিপল মজুদ করা হয়েছে। উলুবেড়িয়া এলাকায় একটি পানীয় জলের পাউচ প্রস্তুতকারী মেশিন বসানো হয়েছে।

 গ্রামীণ এলাকায় বেশ কয়েকটি ত্রাণ শিবির প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে দুর্গত এলাকা থেকে মানুষদের সরিয়ে এনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এইসব শিবিরে আশ্রয় দেওয়া হবে। হাওড়া সদর মহকুমার জন্য রাজ্য বিপর্যয় প্রতিরোধ বাহিনী এবং উলুবেড়িয়া মহকুমার জন্য জাতীয় বিপর্যয় প্রতিরোধ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। উলুবেড়িয়া মহাকুমার সমস্ত এলাকায় প্রচুর সংখ্যক সিভিক ভলেন্টিয়ার পাঠানো হয়েছে। নদীবাঁধগুলির উপরে ২৪ ঘন্টা নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে।